শিরোনাম

অতিথি পাখি আর লাল কাঁকড়ায় মুখরিত ‘চর বিজয়’

Views: 84

 

মো:আল-আমিন, পটুয়াখালী : দেশের ভ্রমণপ্রেমীদের কাছে অন্যতম পছন্দের গন্তব্য হয়ে উঠেছে এই সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটা ভ্রমণ পিপাসু মানুষের প্রিয় একটি নাম। ‘সাগরকন্যা’ খ্যাত বাংলাদেশের দক্ষিণের এ সমুদ্র সৈকত অপূর্ব সুন্দরের এক লীলাভূমি। এখানে রয়েছে একই স্থান থেকে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখার পৃথিবীর একমাত্র সৈকত। তাই কুয়াকাটা দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আগমন চোখে পড়ার মতো। আর এই কুয়াকাটা ভ্রমণ পিপাসুদের মনকে আরও আনন্দময় করতে সমুদ্রের বুকে জেগে উঠেছে এক টুকরো চর।

তার নাম হলো ‘চর বিজয়’। শীতের মৌসুম আসলেই অতিথি পাখির বিচরণ আর লাল কাঁকড়ায় মুখরিত থাকে এই চরটি।

এটি পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার কুয়াকাটা থেকে দক্ষিণ-পূর্ব কোণে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে গভীর সাগরে জেগে উঠেছে মনোমুগ্ধকর এক চর। চারদিকে অথৈ জলরাশি। তার বুকে এক টুকরা ভূমি।

এখানে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হরেক পাখির অবাধ বিচরণে মুখর থাকে। সূর্যের আলোতে চিকচিক করে ঢেউ খেলে যায়। বালিয়াড়িতে ঝরা শিউলি ফুলের মতো বিছিয়ে আছে অসংখ্য লাল কাঁকড়া। নীল দিগন্তের মাঝে এ এক অপরূপ সৌন্দর্যের হাতছানি।
লাল কাঁকড়া আর লাখ লাখ অতিথি পাখির বিচরণে আকাশ আর চর মিলে একাকার হয়ে থাকে। এ ছাড়াও এই চরটিতে রয়েছে সাদা ঝিনুকের ছড়াছড়ি। বর্তমানে লতাপাতা আর কিছু কিছু চারা গাছেরও দেখা মিলছে সেখানে। দূর থেকে প্রত্যেক ভ্রমণ পিপাসুর নজর কাড়ে দ্বীপটি। জেলেরা স্থানীয়ভাবে দ্বীপটির নামকরণ করেন ‘হাইরের চর’। ‘হাইর’ হলো মাছ ধরার জন্য জেলেদের নির্ধারিত সীমানা। তবে পর্যটক দলের সদস্যরা দ্বীপটির নাম দিয়েছেন ‘চর বিজয়’। ২০১৭ সালের বিজয়ের মাসে আবিষ্কার বলেই এই নাম। পরে জেলা প্রশাসকের উদ্যোগে বন বিভাগ ওই চরে গোল, ছইলা, কেওড়া ও সুন্দর গাছের চারা রোপণ করে। বর্তমানে অস্থায়ী বাসস্থান তৈরি করে মাছ শিকার ও শুঁটকি প্রক্রিয়াজাত করছেন জেলেরা। বর্ষাকালে পুরো দ্বীপটি সাগরের জলরাশিতে ঢাকা পড়ে যায়। শীত মৌসুমে ডেরা  তৈরি করে মাছ শিকার ও শুঁটকি করার জন্য জেলেরা এখানে তিন মাস থাকেন। দ্বীপটি পূর্ব-পশ্চিমে লম্বা। দৈর্ঘ্যে প্রায় ১০ কিলোমিটার। প্রস্থে ৩ কিলোমিটার।
তবে জোয়ারের সময়  দৈর্ঘ্যে ৩ কিলোমিটার এবং  প্রস্থে ১ কিলোমিটার।

কুয়াকাটা ট্যুরিজমের গাইড পরিচালক কে এম বাচ্ছু বলেন, কুয়াকাটা থেকে মাত্র দেড় ঘণ্টায় পৌঁছানো যায় চর বিজয়ে। এটি এখন দর্শনীয় পর্যটন স্পট হয়ে গেছে।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) কলাপাড়া জোনের সাধারণ সম্পাদক মেজবাহউদ্দিন মাননু বলেন, চর বিজয় আমাদের উপকূলের মানুষের জন্য আশীর্বাদ স্বরূপ। এখানে থাকা অতিথি পাখি এবং লাল কাঁকড়ার অবাধ বিচরণ বিনষ্ট করা যাবে না। বর্তমানে অস্থায়ীভাবে জেলে পল্লী তৈরি করার চেষ্টা করছে উপকূলের জেলেরা। যা এই চর বিজয়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য হুমকিস্বরূপ।

এ বিষয় ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা জোনের পরিদর্শক হাসনাইন পারভেজ বলেন, কুয়াকাটায় আগত সকল পর্যটকদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা সেবা দেয়ার জন্য সব সময় আমরা প্রস্তুত থাকি। কুয়াকাটায় বর্তমানে ১৪টির মতো দর্শনীয় স্থান রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম একটি চর বিজয়। এটি পর্যটকদের কাছে দিন দিন খুবই জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। তাই পর্যটকদের ভ্রমণের সময় ট্যুরিস্ট পুলিশের টহল টিম তাদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।

image_pdfimage_print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *