শিরোনাম

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান লক্ষ্য সংস্কার: ড. ইউনূস

Views: 39

চন্দ্রদ্বীপ নিউজ :: জুলাই অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গঠিত হওয়া অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে নির্বাচনের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় দেশের বিভিন্ন সেক্টরের সংস্কার করা বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

সোমবার (৭ অক্টোবর) একটি পত্রিকায় প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে এই কথা বলেন তিনি।

এসময় তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের বড় বিষয় হলো সংস্কার। কেননা নির্বাচন তো যেকোনো সময় যে কেউ দিতে পারে। সংস্কার মানে হলো অতীতে যা যা ঘটেছে, আমরা সেগুলোর পুনরাবৃত্তি হতে দেব না। এটার জন্য আমাদের বুদ্ধিতে যতটুকু কুলায় ১০০ ভাগ হয়তো হবে না, তবে কাছাকাছি যতটা যাওয়া যায়, সারা জাতিকে একত্র করে করতে হবে।

সংস্কারের ক্ষেত্রে তাদের পরিকল্পনা নিয়ে জানান, সংবিধান, জুডিশিয়ারি সংশোধন করতে হবে। ছয়টা যে কমিশন করা হয়েছে তার প্রতিটিই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা আরও কমিশন নিয়ে তৈরি করবো। স্বল্প সময়ে দেশের কতটুকু সংস্কার করতে পারবে তা নিয়ে জানান, মুখে যে যা–ই বলুক না কেন, ভেতরে সবাই সংস্কার চায়। এ ছাড়া উপায় নেই। তাই প্রধান উপদেষ্টা এ বিষয়ে শতভাগ আশাবাদী।

সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা প্রদানের প্রসঙ্গে বলেন, আমাদের দায়িত্বে শুরুতেই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু পুলিশ সর্বাত্মক সহযোগিতা না করার কারণে তা অনেকাংশেই পেরে উঠিনি। তাই আইন শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য সেনাবাহিনীকে বিশেষ ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে।

বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার এক-এগারোর সরকারের মতো হবে কি না এই বিষয়ে ড. ইউনূস বলেন, একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সেনাবাহিনীর যে ভূমিকা হওয়া উচিত, সে ভূমিকা পালন করবে। সেটা সরকারের যেসব নির্দেশ থাকবে, সেটা তারা পালন করে যাবে। এসব দিক বিবেচনা করেই তাদের ২ মাসের জন্য ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এরপরও যদি তাদের প্রয়োজন হয় তাহলে তা পরবর্তীতে বিবেচনা করা হবে।

জাতিসংঘের অধিবেশনে যোগ দেওয়াকালীন বিভিন্ন দেশ ও সংস্থার ব্যক্তিদের সঙ্গে ড. ইউনূসের বৈঠক সুদূরপ্রসারী হয়েছে কি না এই বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এই দেশটা আবার নতুন করে দাঁড়াতে পারবে তা নিয়ে তাদের মনে উৎসাহ জেগেছে। দেশের যে গতিপ্রকৃতি তারা দেখছিল, তাতে তারা উৎসাহ বোধ করছিল না। এই পরিবর্তনের ফলে এবং আমাকে সামনে পেয়ে এদের অনেকেই খুব উৎসাহ বোধ করেছে।

তিনি আরও জানান, ‘আমরা আনুষ্ঠানিক বৈঠক করেছি। কিন্তু আনুষ্ঠানিক বৈঠক বন্ধুদের বৈঠকে পরিণত হয়েছে। আলাপ হয়েছে, কী দরকার তোমরা বলো, সেভাবে আমরা ব্যবস্থা নেব। আমিও একেবারে পরিষ্কারভাবে বলেছি যে অতীতের মতো করে দেখলে হবে না। নতুন একটা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে এবং নতুন ভঙ্গিতে চিন্তা করতে হবে। আগের ক্যালকুলেশন বাদ দিতে হবে। অনেক বড় স্তরের ক্যালকুলেশন দিতে হবে। আমরা বড় জাম্পে যেতে চাই। এবং আগে অনেক শর্ত দিয়ে যেভাবে রাখছিল, সেভাবে না। তারাও অ্যাপ্রিশিয়েট করছিল। সঙ্গে সঙ্গে একজন তো ওখান থেকে ফোন করে নির্দেশ দিয়ে দিচ্ছিল, ওইটা করে দাও।’

দুই তরুণ উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদের প্রসঙ্গে ড. ইউনূস জানান, তারা দুজন অত্যন্ত দক্ষতার সাথে সার্বিক দিক পরিচালনা করে যাচ্ছে। তারা শুধু বর্তমান সময়ের উপদেষ্টামন্ডলীই নয়, যেকোনো সময়ের উপদেষ্টামন্ডলীর মধ্যে তুলনা করলে তারা কোনো অংশেই দুর্বল নয়।

ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ততা পূর্ব থেকে ছিলো কি না এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই আন্দোলনের সঙ্গে আমার সম্পৃক্ততা ছিলো না। আমি আরো প্রস্তুতি নিয়েছিলাম জেলে যাওয়ার জন্য। কিন্তু সরকার পতনের পর শিক্ষার্থীরা আমার সাথে যোগাযোগ করে জানালো তারা আমাকে সরকারের দায়িত্বে দেখতে আগ্রহী। আমি প্রথমে অনাগ্রহ দেখালেও পরবর্তীতে তাদের আবদার ফিরিয়ে দিতে পারিনি। জেলে যাওয়ার পরিবর্তে বঙ্গভবনের শপথ নিয়েছি। ৫ আগস্টের পরই শিক্ষার্থীরা আমার সাথে যোগাযোগ করেছে। তার আগে তাদের সাথে যোগাযোগ হয় নি।

সৌজন্যে: প্রথম আলো :

image_pdfimage_print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *