শিরোনাম

অবশেষে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত ইসরায়েল-হামাস

Views: 4

চন্দ্রদ্বীপ ডেস্ক: দীর্ঘ ১৫ মাস ধরে চলা সংঘাতের পর অবশেষে যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে রাজি হয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ হামাস ও দখলদার ইসরায়েল। আলোচনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, আজ বুধবার (১৫ জানুয়ারি) ইসরায়েল ও হামাস গাজা যুদ্ধের জন্য একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছেছে। এই যুদ্ধে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং যুদ্ধের উত্তাপে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বেড়েছে।

আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা না করা এই চুক্তিতে ছয় সপ্তাহের প্রাথমিক যুদ্ধবিরতির রূপরেখা রয়েছে এবং এতে গাজা থেকে ইসরায়েলি বাহিনী ধীরে ধীরে প্রত্যাহার এবং ইসরায়েলের হাতে আটক ফিলিস্তিনি বন্দীদের বিনিময়ে হামাসের হাতে আটক জিম্মিদের মুক্তি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, আলোচনার বিষয়ে ব্রিফ করা একজন কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন।

চুক্তিটি মিশর ও কাতারের মধ্যস্থতায় এবং যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে কয়েক মাসের আলোচনার ফল। যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০ জানুয়ারির অভিষেকের ঠিক আগে চূড়ান্ত চুক্তিটি চূড়ান্ত হলো। যেখানে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ক্ষমতা হস্তান্তরের আগেই মধ্যপ্রাচ্য সংঘাত বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।

গাজার প্রধান ফিলিস্তিনি সশস্ত্র স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস জানিয়েছে, হামাসের প্রতিনিধিদল মধ্যস্থতাকারীদের কাছে যুদ্ধবিরতি চুক্তি এবং বন্দীদের ফেরতের বিষয়ে তাদের সম্মতি জানিয়েছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, হামাস চুক্তির মৌখিক সম্মতি দিয়েছে এবং চূড়ান্ত লিখিত সম্মতি দেওয়ার জন্য আরও তথ্যের অপেক্ষায় রয়েছে।

ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদিয়ন সা’আর জানিয়েছেন, তিনি ইউরোপ সফর সংক্ষিপ্ত করে আজ রাতেই ইসরায়েল ফিরে আসছেন। ফিরেই তিনি নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা ও সরকারের ভোটে অংশ নেবেন। সম্ভবত আগামীকাল বৃহস্পতিবারের মধ্যে এসব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস–নেতৃত্বাধীন সশস্ত্র ব্যক্তিরা নিরাপত্তা বাধা ভেঙে ইসরায়েলি এলাকায় প্রবেশ করে। তারা ১ হাজার ২০০ সেনা ও সাধারণ নাগরিককে হত্যা করে এবং ২৫০ জনেরও বেশি বিদেশি ও ইসরায়েলি নাগরিককে বন্দী করে নিয়ে যায়।

এরপর ইসরায়েলের গাজা অভিযানে এ পর্যন্ত ৪৬ হাজার এরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে বলে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। উপকূলীয় এই এলাকাটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে ইসরায়েল। তীব্র শীতে শত শত মানুষ তাঁবু ও অস্থায়ী আশ্রয়ে কোনোরকম টিকে আছে।

ট্রাম্প তার অভিষেকের আগে বারবার দ্রুত চুক্তি করার দাবি পুনর্ব্যক্ত করেছেন এবং হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে, বন্দীদের মুক্তি না দিলে ‘মারাত্মক পরিণতি’ হবে। তার মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফ প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের দলের সঙ্গে মিলে চুক্তিটি সম্পন্ন করতে কাজ করেছেন।

এখন ইসরায়েলে বন্দীদের ফিরে আসা প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও তার ডানপন্থী সরকারের বিরুদ্ধে জনরোষ কমাতে পারে। যেখানে গত বছরের ৭ অক্টোবরের নিরাপত্তা ব্যর্থতার জন্য নেতানিয়াহুর সরকার তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে।

এই সংঘাত পুরো মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। যেখানে ইরান–সমর্থিত লেবাননের হিজবুল্লাহ, ইরাক ও ইয়েমেনের গোষ্ঠীগুলো ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে ইসরায়েলের বেশ কয়েকটি হামলা চালিয়েছে। এই চুক্তিটি ইসরায়েলি অভিযানে হামাস ও লেবাননের হিজবুল্লাহর শীর্ষ নেতাদের হত্যা করার পর চূড়ান্ত হলো। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই নেতাদের হত্যার মাধ্যমে ইসরায়েল কৌশলগতভাবে এগিয়ে গেছে।

image_pdfimage_print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *