বরিশাল অফিস :: গত ৭ জানুয়ারি বরিশাল জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক, সাবেক কাউন্সিলর রাজীব হোসেনের অফিসে হামলা করে প্রতিপক্ষরা। রাজীব সাবেক সিটি মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহর ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। গত ৫ পাঁচ বছরে শহরজুড়ে রাজীবের প্রভাব ছিল চোখে পড়ার মতো। সদর রোডে শপিংমল টপ টেনে হামলা, লুটপাটে খবরের শিরোনাম হয়েছিলেন তিনি। তবে ক্ষমতার পট পরিবর্তনে সেই রাজীবের অফিসে এবার হামলার অভিযোগ পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীমের অনুসারীদের বিরুদ্ধে।
বরিশাল সিটি করপোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর রাজিব আহসান খান বলেন, ‘আমার মিছিলে অনেক লোকজন হয়। হয়তো রাজনৈতিকভাবে আমার এতো জনপ্রিয়তা তারা নিতে পারেনি। তাই আমার অফিসে হামলা করেছে। এ ঘটনায় আমি থানায় মামলা করেছি।’
৮ জানুয়ারি। মহানগর আওয়ামী লীগের শিল্প বাণিজ্য সম্পাদক নিরব হোসেন টুটুলের পোর্টরোড অফিসে হামলা চালায় প্রতিপক্ষ খান হাবিব ও তার সমর্থকরা। টুটুল সাবেক মেয়র সাদিকের সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে পরিচিত। বরিশালের সবচে বড় মাছের মোকাম পোর্টরোড মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র দখল, পাল্টা দখলের দামামায় থমথমে অবস্থা সেখানে।
বরিশাল মৎস্য আড়তদার সমিতির সভাপতি জাহাঙ্গীর সিকদার বলেন, ‘খান হাবিব ও তার সমর্থকরা পোর্টরোডে কিছুটা হট্টগল করেছে। পরে কথা বলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছি। জানি না কখন কি হয়।’
১০ জানুয়ারি মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আনোয়ার হোসেন ওরফে ভিপি আনোয়ারকে বেদম পেটানোর অভিযোগ ছাত্রলীগ নেতা আরিফুর রহমান অপু ও আজিমসহ প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। সরস্বতী স্কুল, ল কলেজ, বিকাশ মাল্টিপারপাসের অর্থলোপাটসহ নানা অভিযোগে বিতর্কিত আনোয়ার সবশেষ সাবেক মেয়র সাদিকের ছায়ায় ছিলেন।
বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমার ওপর হামলাটা রাজনৈতিক কারণে হয়েছে। মামলা হয়েছে। আইন অপরাধীদের বিচার করবে। সরস্বতী স্কুল, ল কলেজ, বিকাশ মাল্টিপারপাসের অর্থলোপাটের যেসব অভিযোগ তোলা হচ্ছে এসব ভিত্তিহীন।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে রক্তাক্ত হলেও স্থানীয় নেতাদের দাবি, রাজনৈতিক নয়, ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বে কেউ কেউ বিশৃঙ্খলা করছে।
বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘কোনো ব্যক্তির ভুলের দায়ভার দল নিবে না। তবে যেসব ঘটনা বরিশালে ঘটেছে তা দুঃখজনক। অনেক ঘটনায় মামলা হয়েছে। নিজেদের অভ্যন্তরীণ বিষয় এসব ঘটনা। এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাই না।’
বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য আনিস উদ্দিন আহমেদ সহিদ বলেন, ‘অধিকাংশ ঘটনাই ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের জেরে ঘটেছে। পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী ও আমরা কোনো প্রতিহিংসার রাজনীতি করি না।’
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার মো. ফজলুল করিম বলেন, ‘এরইমধ্যে বেশ কয়েকটি পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
বরিশাল সদর-৫ আসনে দ্বিতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য ও পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী হয়েছেন জাহিদ ফারুক শামীম। তার সঙ্গে একজোটে নতুন মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত। তবে সিটি মেয়রের চেয়ার হারালেও দলের মহানগরের সাধারণ সম্পাদক আছেন সাদিক আব্দুল্লাহ।