মো:আল-আমিন, পটুয়াখালী : শরীয়তপুরের জাজিরার নাওডোবা এলাকায় ট্রাকের সাথে অ্যাম্বুলেন্সের সংঘর্ষে নিহত মা-মেয়ে জাহানারা বেগম (৫৫) ও লুৎফুন নাহারে লিমার (৩০) গ্রামের বাড়িতে শোকাবহ শুনসান নীরবতা ও নিস্তব্ধতা বিরাজ করছে।
পটুয়াখালী জেলার বাউফল উপজেলার কাছিপাড়া ইউনিয়নের কারখানা গ্রামের বাড়িতে এই চিত্র দেখা যায়।
স্বজনদের মাঝে বিরাজ করে শোকর ছায়া। নিহত জাহানারা বেগমের ভাসুর সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল আজিজ মল্লিক জানান, তার ছোট ভাই আব্দুল লতিফ মল্লিক এর স্ত্রী জানারা বেগম এবং লুৎফুন নাহার লিমা ভাতিজি। নিহতদের মরদেহ বিকেলে বরিশালে পৌঁছে। শহরের কলেজ এভিনিউ রোডের বাসার কাছে সন্ধ্যায় নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সেখান থেকে বাউফলের কারখানা গ্রামের বাড়িতে নেয়ার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত ভাইয়ের ইচ্ছেতে বরিশালেই দাফন করা সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি আরো জানান, আমেরিকা প্রবাসী ছোট ভাই আব্দুল লতিফ মল্লিক এর স্ত্রী দীর্ঘ চার বছর ধরে দুরেরোগ্য ক্যান্সারে ভুগছিলেন, জাহানারা বেগমের একমাত্র মেয়ে লিমাও পাঁচ বছর ধরে আমেরিকায় বসবাস করলেও মায়ের অসুস্থদের জনিত কারণে দেড় মাস আসে দেশে আসে। লিমা গতকাল রাতে বরিশাল থেকে অ্যাম্বুলেন্স যোগে মাকে নিয়ে চিকিৎসার জন্য ঢাকা যাওয়ার পথে মা ও মেয়ে নিহত হন।
লিমার চাচি জানান, তাদের পরিবারের একমাত্র মেয়ে সন্তান ছিল লিমা। কার মেয়ে না থাকায় রিমাকে সে মেয়ের মতো ভালোবাসতেন, এই অকাল মৃত্যুতে তারা শোকাহত।
এদিকে শোকের ছায়া বিরাজ করছে জাহানারা বেগমের বাবার বাড়ি কাশিপাড়া ইউনিয়নের আনারসি গ্রামে।
তার ভাই অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আশরাফ আলী খান বলেন, খুব আদরের ছোট বোন ছিল জাহানারা বেগম, বিয়ের আগ পর্যন্ত সংসদ রান্নাবান্না তিনি করতেন। বোনের সাথে ভাগ্নির মৃত্যুতে তাদের সম্পর্কের সূতা ছিড়ে গেল বলে মনে করেন তিনি। নিহত জাহানারা বেগম প্রয়াত সিরাজ খানের ৫ মে ও দুই ছেলের মধ্যে ষষ্ঠ ছিল।
এছাড়াও একই দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন তাদের স্বজন লতিফ মল্লিকের মামাতো ভাই আব্দুর রাজ্জাক মল্লিকের ছেলে ফজলে রাব্বি মল্লিক (২৬)। রাব্বিদের পত্র বাড়ি একই উপজেলার পার্শ্ববর্তী ইউনিয়ন কনকদিয়া ইউনিয়নের কলতা গ্রামে ও তবে বাবা পরে দশমিনা উপজেলার আদম পুরায় শ্বশুর বাড়ি বাড়ি বসবাস করায় রাব্বি এখানেই বড় হয়।
সন্ধ্যার পরে রাব্বির মরদেহ দশমিনের আদমপুরা গ্রামে পৌঁছে এবং রাত আটটায় তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। সে বরিশালের একটি হাসপাতালে চাকরি করতো। বাপ্পির স্বজনদের মধ্যেও বিরাজ করছে শোকের ছায়া।