বরিশাল অফিস :: মহেন্দ্র সিং ধোনির পর কেউই শিরোপা জিততে পারছিলেন না। বারবার সেমি অথবা ফাইনালে হার নিয়ে মাঠ ছাড়া। অবশেষে অপেক্ষার অবসান। সেই সঙ্গে দিয়ে গেল জীবনের রুঢ় বাস্তবতার শিক্ষা ও কিছু গল্প।
রোহিত শর্মা। বিশ্বকাপের ঠিক আগেই আইপিএলে হারালেন মুম্বাইয়ের অধিনায়কত্ব। ব্যাটে আশানুরূপ রান নেই। তবে কি অধিনায়ক হিসেবে তিনি শেষ? সেই উত্তরটা আজ ফাইনালেই দিয়ে দিলেন। ক্রিকেটকে কেন ক্যাপ্টেন্স গেম বলা হয়, তার সবচেয়ে বড় উদাহরণ রোহিতের আজকের সব কার্যক্রম।
বিরাট কোহলি। আইপিএলে রান পেলেও বিশ্বকাপের শুরু থেকে ব্যর্থ। একেরপর এক ম্যাচ গেছে, অল্প রানে আউট হয়েছেন। চারদিকে সমালোচনার বাণ। অবশেষে ফাইনালে, দলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে খেললেন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস।
রিশাভ পান্ট? তার তো বেঁচেই থাকার কথা না। বেঁচে থাকা যদি অলৌকিক হয়, তার পায়ে হাটা আরো বড় অবিশ্বাস্য ব্যাপার। অথচ সেই মানুষটাই বিশ্বজয়ের আসরে দেখালেন পাগলাটে সব শটের বাহার। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে রাখলেন প্রয়োজনীয় অবদান।
হার্দিক পান্ডিয়ার কথা আলাদাভাবে বলতেই হয়। স্ত্রীর কাছে প্রতারিত হলেন। আইপিএলে অধিনায়কত্ব পেলেন ঠিকই কিন্তু পারিবারিক অশান্তির ফলে দল ও ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স যারপরনাই বাজে। বিশ্বকাপের আগে সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় থাকা মানুষই ফাইনালে ভারতকে ম্যাচে ফিরিয়েছেন। ফিরে আসার গল্পের অন্যতম বড় নায়ক তো তিনিই।
জাসপ্রিত বুমরাহ তো ম্যাজিশিয়ান। আমার কাছে টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় তিনিই। অবিশ্বাস্যভাবে প্রতিটি ম্যাচে পারফর্ম করে গেছেন। ভারতের চিট কোড হিসেবে দলের সবচেয়ে বড় ইমপ্যাক্ট খেলোয়াড় তিনি।
সূর্যকুমার যাদব তো ফাইনাল ওভারের প্রথম বলে ক্যাচ নেননি। নিয়েছেন ভারতের ১১ বছরের অপেক্ষার শিরোপা। ফিল্ডিং যে কীভাবে একটা ম্যাচকে বদলে দিতে পারে তার সবচেয়ে বড় উদাহরণ তিনিই।
এভাবে প্রত্যেককে নিয়ে ছোটবড় গল্প লেখা যাবে। আক্সার প্যাটেল থেকে শুরু করে শিভম দুবে, রবীন্দ্র জাদেজা বা আর্শদীপ সিং… ভারতের প্রতিটি ক্রিকেটারই একেকটা চ্যাম্পিয়ন। শিরোপা জেতার যোগ্য দল তাদের চেয়ে আর কে আছে?
ক্রিকেটকে অনেকেই জীবনের সঙ্গে তুলনা করেন। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রের শিক্ষা পাওয়া যায় একটা ক্রিকেট ম্যাচ থেকে। হারার আগে যারা হারতে জানে না, জয়টা হয় তাদেরই। যার উদাহরণ আজকের ম্যাচ!
অভিনন্দন ভারত।