বরিশাল অফিস :: আগামী এক বছরের মধ্যে বরিশাল নগরীর চিত্র বদলে যাবে। ব্যাপক উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ শুরু হয়েছে নগরীতে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন উন্নয়নমুলক কাজের টেন্ডার আহবান হয়ে গেছে। গত ১০ বছর ধরে বেহাল অবস্থায় পড়ে থাকা বিভিন্ন সড়কের কাজও শুরু করা হয়েছে। সিটি মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহর তত্ত্বাবধানে হচ্ছে এ সকল উন্নয়ন কাজ। বরিশাল সিটি মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ বলেছেন, জনগনের দুর্ভোগ লাগবে তিনি কাজ করছেন। বরিশাল নগরীকে সুন্দর নগরীতে পরিনত করা হবে।
গত ১১ বছর ধরে কোন কাজ হয়নি নগরীর অক্সফোর্ড মিশন রোডের। এই সড়কের কাজ শুরু হয়েছে গত ২৯ জুন। অক্সফোর্ড মিশন রোডের সড়ক মেরামতের শুরু হওয়ায় খুশি ২০ হাজার বাসিন্দা। সরেজমিনে ৩০ জুন বরিশাল সিটি করপোরেশনের ২০ ও ২১ নং ওয়ার্ডের অক্সফোর্ড মিশন ও গোরস্থান সড়ক ঘুরে এলাকাবাসীর চোখেমুখে এই নতুন স্বপ্ন দেখা গেছে। অভিযোগ, অনুযোগ ও দৈনিক আজকের পরিবর্তন পত্রিকার সংবাদের প্রশংসা করে এলাকাবাসী অনেকেই নতুন মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাতকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রায় বছর পার হতে চললো। মেয়রের কাজের অগ্রগতি শুধু নগরীর খালকে ঘিরেই সীমাবদ্ধ ভেবেছিলাম। এখন গত ২৯ জুন অক্সফোর্ড মিশন সড়কের খোঁড়াখুঁড়ি দেখে বুঝতে পারলাম, প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কাজ করছেন আমাদের মেয়র। অক্সফোর্ড মিশন রোডের হোটেল ব্যবসায়ী বলেন, আজ বৃষ্টির জন্য কাজ বন্ধ আছে, তবে বালুর ট্রাক এসে বালু রেখে যাচ্ছে।
আর গোরস্থান রোডের চা দোকানী বলেন, শুনেছি অক্সফোর্ড মিশন রোড ধরে এই গোরস্থান রোডে এসে শেষ হবে এই অংশের কাজ। ২০ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র জিয়াউর রহমান বিপ্লবও খুশিতে আত্মহারা অনেকটা। বললেন, দুটি সড়কেরই ঠিকাদার মাহফুজ খান। তার কাজের মান নিয়ে কোনো সংশয় নেই কারো।
অনুসন্ধানে জানা গেছে শুধু অক্সফোর্ড মিশন বা গোরস্থান রোড নয়, নগরীর ১৬৭ সড়কেরই কাজের টেন্ডার হয়ে গেছে এবং আগামী এক বছরের মধ্যে বদলে য়াবে বরিশালের সড়ক ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার চিত্র। যা দেখে বুঝে একথা নির্দ্বিধায় বলা যায়, যে অবশেষে দূর হতে শুরু করেছে নগরবাসীর ভোগান্তি ও অপ্রাপ্তির যন্ত্রণা।
ইতিমধ্যেই দুএকটি এলাকা বাদে প্রায় সব এলাকার জলাবদ্ধতা দূর হয়েছে। সাতটি খালের চারটিতেই এখন নিয়মিত জোয়ারভাটা খেলা করছে। সড়কেও দীর্ঘ সময় আর স্থায়ী হচ্ছেনা বৃষ্টির পানি। শুধু বিষফোঁড়া এখন ঐ নবগ্রাম রোডের জলাবদ্ধতা। এখানের জলাবদ্ধতা দূর করতে হলে স্থানীয় বাসিন্দাদের আন্তরিকতা খুবই জরুরী বলে জানালেন সিটি করপোরেশনের ২১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাঈদ আহমেদ মান্না। জানালেন, অক্সফোর্ড মিশন রোডটি পরেছে তারই ওয়ার্ডে। তিনি বলেন, ১৪, ১৫, ১৭, ১৮, ১৯, ২০, ২১ ও ২৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের সমন্বয়ে এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে তবেই এই নবগ্রাম রোডের জলাবদ্ধতা দূর করা সম্ভব হবে। তা না হলে খালটি পুনরুদ্ধার প্রায় অসম্ভব এখানে । বিশেষ করে চৌমাথা বাজার এলাকায় বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ দেয়ার অনুরোধ জানান তিনি।
কাউন্সিলর মান্না আরো বলেন, গত পাঁচ বছর তিনি এলাকার উন্নয়নে কোনো কাজ করতে পারেননি। বর্তমান মেয়র আশ্বস্ত করেছেন, তার মেয়াদকাল আমার ওয়ার্ডের সব কাজ পরিপূর্ণ হবে বলে জানান মান্না।
নগরীর গোরস্থান রোড থেকে অক্সফোর্ড মিশন রোড পর্যন্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও সড়কের কাজ শুরু হয়ে গেছে। যা ছিলো এতোদিন নগরবাসীর কাছে অভিশাপের মতো জানিয়ে বরিশাল সিটি করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল বাসার বলেন, নগরবাসীতো অনেকটা বছর কষ্ট করেছেন, তারা যেন আর একটু ধৈর্য ধরেন। এক বছরের মধ্যে বরিশালের সব সড়ক ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার ব্যপক পরিবর্তন দেখবেন নগরবাসী।
এসময় সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আবদুল মোতালেব বলেন, ১৬৭টি সড়ক ৯৫টি ড্রেনসহ আনুষঙ্গিক কাজের ১৮টি প্যাকেজে কাজ শুরু করেছে বরিশাল সিটি করপোরেশন। সবগুলো কাজের টেন্ডারও হয়ে গেছে। ৬টি করে ৩টি প্যাকেজে এই কাজের টেন্ডার ইতিমধ্যেই হয়েছে এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজও শুরু করেছেন। তাদের এক বছরের মধ্যে কাজ সমাপ্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত। মেয়র মহোদয় নিজেই এসব কাজের নিয়মিত তদারকি করছেন বলে জানান প্রকৌশলী আব্দুল মোতালেব।