বরিশাল অফিস :: আমতলীর আরপাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের ঘোপখালী গ্রামে বুধবার গভীর রাতে নেশার টাকা না পেয়ে স্ত্রী শাহনাজ বেগম (৩৫) নামে এক গৃহবধূকে ধারালো দা দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করেছে স্বামী মাহতাব হাওলাদার। দায়ের কোপে শাহনাজ বেগমের পেটের নারী-ভূরি পেটের বাইরে বের হওয়ায় তাকে শেবাচিমে ভর্তি করা হয়েছে। বুধবার গভীর রাতে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত মাহতাব হাওলাদারকে (৪০) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ।
জানা গেছে, আমতলী উপজেলার আরপাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের ঘোপখালী গ্রামের মৃত মো. আমির আলী হাওলাদারের ছেলে মো. মাহতাব হাওলাদারের সাথে তালতলী উপজেলার ছোটবগী ইউনিয়নের চরপাড়া গ্রামের মৃত মনু গাজীর মেয়ে শাহনাজ বেগমের সাথে ২০০৪ সালে বিয়ে হয়। স্বামী মাহতাব নেশাসক্ত হওয়ায় তাদের মধ্যে দাম্পত্য কলহ লেগেই থাকতো। এরই মধ্যে শাহনাজের কোলজুড়ে আসে দুটি ছেলে সন্তান। নেশার কারনে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো।
এ নিয়ে স্বামীর বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ এনে মামলাও করেন শাহনাজ বেগম। ঘটনার দুই দিন আগে সোমবার রাতে শাহনাজ বেগমকে মারধর করেন স্বামী মাহতাব হাওলাদার। মাহতাবের এ নেশার কাজে সহায়তা করেন তার মা নূরজাহান বেগম ও তার ভাই মাহবুব হাওলাদার। ঘটনার দিন বুধবার সন্ধ্যায় শাহনাজ বেগমমের কাছে নেশার টাকা দাবী করেন স্বামী মাহতাব।
টাকা না পেয়ে তাকে সন্ধ্যায় লাঠি দিয়ে ব্যাপক মারধর করে ঘরের বাইরে চলে যান। এরপর গভীর রাতে ফিরে এসে স্ত্রীর নিকট আবার টাকা দাবী করেন। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বাগবিতন্ডার এক পর্যায়ে মাহতাব শাহনাজ বেগমকে ধারালো দা দিয়ে এলোপাথাড়ি কোপাতে থাকে। দায়ের কোপে শাহনাজ বেগমের পেটের ভূরি বের হয়ে যায়। শাহনাজ বেগমের ডাক চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে মাতাবকে আটক করে। দায়ের কোপে শাহনাজ বেগমের শরীর থেকে অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরণের ফলে এক পর্যায়ে সে অজ্ঞান হয়ে পড়ে।
আহত শাহনাজ বেগমের মা রোকেয়া বেগম কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, মোর মাইয়াডারে আহত শাহনাজ বেগমের মামা মো. নাসির হাওলাদার জানান, মাহতাব নেশার টাকার জন্য আমার ভাগ্নিকে প্রায়ই মারধর করতো।
আমতলী হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিৎসক ডা. লুনা বিনতে হক জানান, শাহনাজের অবস্থা খুবই আশঙ্কাজনক। দায়ের কোপে তার পেটের ভূরি বাইরে চলে এসেছে। তার শরীরে ২০-২৫টি কোপের চিহ্ন রয়েছে।
আরপাঙ্গাশিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহেলী পারভীন মালা বলেন, আহত শাহনাজ বেগমের স্বামী মাহতাব হাওলাদার একজন মাদকাসক্ত। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায়ই হতো।
আমতলী উপজেলা হাসপাতালের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. চিন্ময় হাওলাদার বলেন, শাহনাজ বেগম নামে এক নারীকে মুমূর্ষ অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসাতালে পাঠানো হয়েছে।
আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাজী সাখাওয়াত হোসেন বলেন, এ ঘটনায় আহত শাহনাজ বেগমের স্বামী মাহতাবকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে। মামলা প্রক্রিয়াধীন।