শিরোনাম

আমার স্বার্থ অবহেলিত নগরবাসীকে সেবা দান করা: মেয়র খোকন সেরনিয়াবাত

Views: 81

সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় সিটি মেয়র খোকন সেরনিয়াবাত

বরিশাল অফিস: বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের দায়িত্ব নেওয়ার পূর্বে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেছেন নব নির্বাচিত মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত। রোববার নগরীর কালুশাহ সড়কের নবনির্বাচিত মেয়রের বাসভবনে সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি। এ সময় নতুন মেয়র বলেন, আমি চট্টগ্রাম, নোয়াখালীসহ বিভিন্ন জায়গায় গিয়েছি, সেখানকার মানুষের কার্যক্রম নিজে প্রত্যক্ষ করেছি। চট্টগ্রামে আমাদের সবচেয়ে বড় সমুদ্র বন্দর রয়েছে।

সেখানে বন্দর কেন্দ্রিক অর্থনৈতিক কর্মকান্ড ব্যাপকভাবে বিস্তৃতি লাভ করে। মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দরসহ এখন তিনটি বন্দর তৈরি হয়েছে ওখানে। আর এই অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি মানুষের জন্যই এগুলো করেছেন, যাতে জনগন আত্মনির্ভরশীল হয়। কক্সবাজারের পর্যটনকে উন্নত করার জন্য সেখানে রেল লাইন হয়েছে, নান্দনিক রেল স্টেশন নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া আজ মেট্রোরেল ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসের কারণে ঢাকায় মানুষের জীবনযাত্রা আরও সহজ হয়েছে। এককথায় সময় মানুষকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। আমি বিশ্বাস করি বরিশালবাসীও এগিয়ে যাবে।

তিনি বলেন, অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় বিগত দিনে কোন একটি প্রজেক্ট করতে পারেনি। সুতরাং আপনারা সবাই আমার আন্তরিক ভালোবাসা গ্রহণ করবেন এবং এই বরিশালকে একটা নতুন নগরী করার মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে সহযোগীতা করবেন।

জননেত্রী শেখ হাসিনার চিন্তা-চেতনায় বরিশালের বিষয়টি রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা যদি সেই সুযোগ গ্রহণ করতে না পারি সেই ব্যর্থতা আমাদের। আমাদের যে সমস্যা, তার যে সমাধান তা কেউ বসে করবে না। এখানে এনজিওদের কার্যক্রম টোটালি বন্ধ ছিলো, অত্যন্ত দুঃখের বিষয়। অনেক অভিযোগ আমি শুনতে পাই যা আমাকে মর্মাহত করে। এ সময় তিনি সরকারের শেষ মুহূর্তে জননেত্রী শেখ হাসিনা যে টাকা আমাদের দিয়েছেন তার এ আন্তরিকতার জন্য বরিশালবাসীর পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা জানান।

মেয়র খোকন সেরনিয়াবাত বলেন, মন্ত্রণালয়ে যখন গিয়েছি তখন মন্ত্রী থেকে সচিবসহ সবাই আমাকে সাদরে গ্রহণ করেছে। তখন বিভিন্ন কথায় আমার নিজের কাছেও খারাপ লেগেছে এবং লজ্জিত মনে হয়েছে যে বরিশালে আমাদের কোন দায়িত্ব নেই। কান্ডজ্ঞানহীন কর্মকান্ড কিছুতেই মানা যায় না।

বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ ও সদর হাসপাতালের গিয়ে অব্যবস্থাপনা দেখে হতাশ হয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, বরিশালে অনেক সমস্যা। মেডিকেল কলেজ ও সদর হাসপাতাল থেকে মানুষ সেবা পাবে, তাই এখানে কিছু একটা সুন্দরভাবে করার চিন্তা আমার রয়েছে।
এ বিষয়ে দায়িত্বশীল লোকদের সাথে অবশ্যই আলোচনা করবো। সমস্যা যেমন আছে, সমাধানও তেমনি আছে, যা সবাইকে মিলেই করতে হবে। আমার কোথাও ব্যক্তিগত স্বার্থ নেই, আমার স্বার্থ হলো বরিশালের মানুষকে সেবা দান করা, সেবার নিশ্চয়তা দান করা এবং সর্বোপরি উন্নয়নের অবকাঠামো তৈরি করা।

বরিশাল নগরীর দুটি বাস টার্মিনালের ব্যবস্থাপনার বিষয়ে তিনি হতাশা প্রকাশ করে বলেন, এখানকার অব্যবস্থাপনা নিয়ে ভাবা যায়না। স্যানিটেশন, পার্কিং ব্যবস্থা নেই। বিল্ডিং ভেঙ্গে পড়ছে। এখানকার উন্নতি দ্রততার সাথে করতে চাই। তবে সামনে জাতীয় নির্বাচনের কারনে কিছু সময়ের জন্য সমস্যা হতে পারে।

তিনি বলেন, আমি কারও প্রতি অন্যায় অবিচার করবো না, কিন্তু কেউ যদি অন্যায়-অনিয়ম করে থাকে সেই বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। বরিশালে কোন অফিসার আসতে চায়না, এখানে কর্মকর্তাদের মান সম্মান থাকে না। আমাদের প্রতি তাদের এই দৃষ্টিকোন খুবই খারাপ বিষয়। আমাদের এখানে আঞ্চলিক কোন কর্মকর্তা নেই, সিও নেই, ম্যাজিষ্ট্রেট নেই। সচিব আসার পরে ভয়-ভীতির কারনে চলে যেতে চেয়েছে। আমি তাকে কোনভাবে রিকোয়েষ্ট করে রাখার ব্যবস্থা করেছি। যাই হোক আমি আপনাদের কাছে অভিযোগ করতে চাই না। আমি চাই পেছনের দিকে না তাকিয়ে এগিয়ে যেতে চাই।

এসময় মেয়র ১৪ নভেম্বরের অভিষেক অনুষ্ঠানে সকল সাংবাদিকদের উপস্থিত হওয়ার আহবান জানান। সংবাদ সম্মেলন শেষে তিনি সাংবাদিকদের কাছ থেকে পরামর্শমূলক মতামত গ্রহণ করেছেন। বিভিন্ন সাংবাদিকদের দেয়া মতামত শুনেছেন নতুন এ মেয়র। মতবিনিময় সভার সঞ্চালনা করেন মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মাহমুদুল হক খান মামুন। বিভিন্ন দাবী নিয়ে মতামত তুলে ধরেন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক কাজী মফিজুল ইসলাম কামাল, নাসিম উল আলম, হুমায়ুন কবির, মুরাদ আহমেদ, কাজী মকবুল হোসেন, কাজী আবুল কালাম আজাদ, স্বপন খন্দকার, আকতার ফারুক শাহীন, জসিম উদ্দিন, কাজী মিরাজ, অপূর্ব অপু, গিয়াস উদ্দিন সুমন, আলী জসিম প্রমুখ।

image_pdfimage_print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *