পটুয়াখালী প্রতিনিধি :: “মসজিদে ১০০ টাকা দিছি আর আল্লাহর কাছে বাবার প্রাণ ভিক্ষা চাইছি কিন্তু আল্লায় আমার কথা শোনলো না” এমন কথা বলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন সদর ঘাটে লঞ্চের রশি ছিঁড়ে নিহত রিপন হাওলাদারের ছোট মেয়ে মেঘলা।
মেঘলা আরো বলেন, নামাজ পড়ছি আর আল্লাহর কাছে মানত করছি বাবায় সুস্থ হইলে সবাই মিলে মির্জাগঞ্জ ইয়ার উদ্দিন খলিফা সাহেবের মাজারে যামু। আমার বাবারেতো আল্লায় নিয়া গেলো।
আরো পড়ুন : অটোরিকশার চাকায় ওড়না পেঁচিয়ে কিশোরীর মৃত্যু
নিহত রিপনের ছেলে রিফাত বলেন, চানরাইতে বাবার সাথে কথা হইছে হে আমাগো ঈদের জামা কাপড় কেনার জন্য দুই হাজার টাকা পাঠাইছে আর কইছে ঈদের পরদিন আইতাছি তোগো নিয়া জামা কাপড় কিন্না দিমু হানে। কিন্তু কাইল লঞ্চে ওডার সময় তার এক্সিডেন্ট হইছে। বাবায় আমাগো ছাইড়া চইল্যা গেছে।
নিহত রিপনের বৃদ্ধ বাবা জয়নাল আবেদীন হাওলাদার বলেন, বাবায় কইছে ঈদের পরদিন বাড়ি আইবে মায়ের কবর জিয়ারত করবে। বাড়িতেতো আইলো কিন্তু লাশ হইয়া।
শুক্রবার (১২ এপ্রিল) বেলা ১১ টার দিকে নিহত রিপনের লাশ তার গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালী সদর উপজেলার শিয়ালীতে নিয়ে আসা হলে সেখানে হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারনা ঘটে। কান্নায় ভেঙ্গ পড়েন বৃদ্ধ বাবা, ৪ সন্তান, দুই স্ত্রী, ভাই বোন সহ আত্মীয় স্বজনেরা।
শুক্রবার (১২ এপ্রিল) সকাল সাড়ে আটটায় বরগুনার বেতাগী উপজেলার চান্দখালী গ্রামে তার শ্বশুর বাড়িতে দ্বিতীয় জানাজা এবং শিয়ালী গ্রামে নিজ বাড়িতে তৃতীয় জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তার লাশ দাফন করা হয়।
আরো পড়ুন : একসঙ্গে ৬ সন্তান জন্ম দিলেন গৃহবধূ
রিপনের দুই স্ত্রী, তিন মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। তিনি ঢাকায় মোটর সাইকেল চালাতেন। গুলশান নতুন বাজার এলাকায় দ্বিতীয় স্ত্রীর বড় বোন হেলেনা বেগম ও তার মেয়ে তানিয়াকে নিয়ে থাকতেন। ঈদের দিন তিনি তানিয়াকে নিয়ে শ্বশুর বাড়ি বরগুনার বেতাগী উপজেলায় আসার জন্য সদর ঘাটে যান। ঢাকা-বরগুনা রুটে চলাচল রত তাসরিফ-৪ লঞ্চে ওঠার জন্য অপেক্ষা করার সময় ঘটা দুর্ঘটনায় মাথায় আঘাত পেয়ে মারা যান তিনি।