ইতালির তেরনি চলচ্চিত্র উৎসবে সেরা স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের পুরস্কার লাভ করেছে বাংলাদেশের নির্মিত ‘দ্য টেস্ট অব হানি’। এই চলচ্চিত্রটি সুন্দরবনের বাঘ-বিধবার গল্প এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিয়ে তৈরি করা হয়েছে। ছবিটি নির্মাণ করেছেন বাংলাদেশের দুই আলোকচিত্রী ফাবিহা মনির ও মোহাম্মদ রকিবুল হাসান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম: তেরনি চলচ্চিত্র উৎসব
২০১৯ সালের ১৬ থেকে ২৪ নভেম্বর ইতালির আমব্রিয়া প্রদেশের তেরনি শহরে অনুষ্ঠিত হয় তেরনি চলচ্চিত্র উৎসব। এ বছর ২০তম আসরের উৎসবে ২৪টি দেশ থেকে ৩,০০০ চলচ্চিত্র জমা পড়েছিল, এর মধ্যে ৭৭টি ছবিকে প্রদর্শনীর জন্য বেছে নেয়া হয়। এদের মধ্যে ‘দ্য টেস্ট অব হানি’ সেরা স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র হিসেবে পুরস্কৃত হয়।
পুরস্কারের জন্য ২৩ নভেম্বর তেরনি চলচ্চিত্র উৎসবের পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র সংসদ আন্দোলনের পুরাধা ব্যক্তিত্ব আহমেদ মুজতবা জামাল ছবির পুরস্কার গ্রহণ করেন। পুরস্কার গ্রহণকালে তিনি ছবির নির্মাতাদের জন্য এক অনুভূতিপূর্ণ বক্তব্য দেন।
চলচ্চিত্রের কাহিনী
‘দ্য টেস্ট অব হানি’ চলচ্চিত্রের মূল কাহিনী সুন্দরবনের বাঘ-বিধবা নারীদের জীবন সংগ্রামের উপর ভিত্তি করে তৈরি। এই নারীরা জীবিকা নির্বাহের জন্য মধু সংগ্রহকারী হিসেবে কাজ করেন এবং তাঁদের মধ্যে অনেকেই বাঘের আক্রমণে তাদের স্বামী হারিয়েছেন। জলবায়ু পরিবর্তন ও তার প্রভাব এই ছবির মূল বক্তব্য।
ফাবিহা মনির ও মোহাম্মদ রকিবুল হাসান ছবির নির্মাতাদের মধ্যে অন্যতম। তাঁদের মতে, এই ছবিটি শুধুমাত্র একটি চলচ্চিত্র নয়, বরং এটি সেই নারীদের সংগ্রামের দলিল যারা প্রতিকূল পরিবেশেও তাদের জীবন সংগ্রাম অব্যাহত রেখেছেন।
বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত
‘দ্য টেস্ট অব হানি’ পৃথিবীর বিভিন্ন চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয়েছে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য আফ্রিকা ইন্টারন্যাশনাল হিউম্যান রাইটস ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল, পোল্যান্ডের ১৪তম অন আর্থ ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল, সিঙ্গাপুরের আর্থ ইন ফোকাস এবং স্পেনের ভায়ান্যাচার এনভাইরনমেন্টাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে প্রদর্শিত হয়। এছাড়া ব্যাংকক মুভি অ্যাওয়ার্ডস, ইন্ডিয়ে ফিল্ম অ্যাওয়ার্ড, এবং অ্যাক্টিভিস্ট উইদাউট বর্ডার প্ল্যাটফর্মগুলোতেও এটি প্রশংসিত হয়েছে।
এই পুরস্কারের মাধ্যমে আরও একবার প্রমাণিত হলো যে, সুন্দরবনের বাঘ-বিধবাদের সংগ্রাম এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব বিষয়ক সচেতনতা সৃষ্টি করার জন্য এই ছবি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।