বরিশাল অফিস: উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রজনন মৌসুমে ইলিশ শিকারে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরু হচ্ছে আগামী বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) মধ্যরাত থেকে। সারা দেশের নদ-নদী থেকে ইলিশ আহরণ, মজুদ, ক্রয়-বিক্রয় ও পরিবহনে সরকার ২২ দিনের যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তা বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে ভোলা মৎস্য বিভাগ।
তবে ভরা মৌসুমের শেষ মুহূর্তেও উপকূলে ইলিশের নাগাল না পেয়ে হতাশ ভোলার জেলেরা। ঋণের টাকা এখনও পরিশোধ হয়নি। বন্ধের সময় পরিবার নিয়ে কীভাবে দিনগুলো পার করবেন এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন এ অঞ্চলের জেলেরা।
ভোলায় ইলিশের এই প্রধান প্রজনন মৌসূমে মা ইলিশ রক্ষায় জেলেদেরকে ইলিশ শিকার থেকে বিরত রাখতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
মৎস্য বিভাগ বলছে, যে সমস্ত জেলেরা নিষেধাজ্ঞা মেনে মাছ ধরা থেকে বিরত থাকবে তাদেরকে জনপ্রতি ২৫ কেজি করে চাল দেয়া হবে।
ভোলার চরফ্যাশনের সাম্রাজ ঘাটের জেলে মঞ্জু ফরাজি বলেন, সরকার বিভিন্ন সময় অভিযান দেয়। এখন ২২ দিনের অভিযান দিছে। সরকারের দেয়া অভিযান আমাদের মানতেই হবে যেহেতু আমরা জেলে। কিন্তু কোন অভিযানেই আমরা সঠিক সময়ে চাউল পাইনা। সরকারের কাছে এবার দাবি আমাদের চালটা যেন সঠিক সময় ঠিকঠাক মত দেয়।
দৌলতখান ঘাটের রহমান মাঝি বলেন, সরকার অভিযান দেয় আমাদের অনেক কষ্ট হয়। আমরা খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাই। তবুও সরকারের দেওয়া অভিযান আমরা সবসময়ই মানি। কিন্তু সরকার আমাদেরকে অভিযানের সময় যেন সাহায্য সহযোগিতা করে। আর আমাদের এনজিও থেকে যে সমস্ত ঋণের কিস্তি আছে এগুলো যাতে এই অভিযানের ২২ দিন বন্ধ রাখে এটাই সরকারের কাছে আমাদের দাবি।
ভোলার দৌলতখানের সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. মাহফুজুল হাসনাইন জানান, ইতোমধ্যেই বিভিন্ন মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ব্যবসায়ী, আড়ৎদার ও জেলেদেরকে নিয়ে সচেতনতামূলক সভার আয়োজন করা হয়েছে। জেলে পল্লিগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে লিফলেট। এছাড়া নদী তীরবর্তী এলাকায় মাইকিং করা হয়েছে। জেলেরা যদি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণে জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিয়ে প্রস্তুত রয়েছে মৎস্য বিভাগ ।
ভোলা জেলার ৭ উপজেলায় ১ লাখ ৬৫ হাজার নিবন্ধিত জেলে রয়েছে। এদের মধ্য থেকে ১ লাখ ৩৩ হাজার ৮ শত ৮৯ জেলেকে প্রণোদনার চাল দেয়া হবে।