শিরোনাম

উন্নয়নের মিথ্যা গল্প শুনিয়েছে আওয়ামী লীগ: চরমোনাই পীর

Views: 31

চন্দ্রদ্বীপ নিউজ :: ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম (পীর সাহেব চরমোনাই) বলেছেন, আওয়ামী লীগ নিজেদেরকে দেশের মালিক আর জনগণকে তাদের দাস মনে করেছে। তাদের অপশাসনের বিরুদ্ধে কথা বললেই খুন, গুম করেছে। দেশ উন্নয়নের মহাসড়কে আছে জানিয়ে জনগণকে মিথ্যে গল্প শুনিয়েছে। অথচ দেশের কোনো ব্যাংকে টাকা নেই। সব টাকা তারা বিদেশে পাচার করে নিয়েছে। বৈদেশিক ঋণের চাপে দেশের অগ্রযাত্রা থমকে যাচ্ছে! তাদের সকল অপকর্মের বিচার থেকে বাঁচতেই তারা পালিয়ে গেছে।

তিনি বলেন, ৭১ সালে দেশ স্বাধীন হলেও বিগত সরকারের আমলে আমরা স্বাধীন দেশে ছিলাম পরাধীন। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার বিপ্লবের পরে মানুষ স্বাধীনভাবে কথা বলার সুযোগ পেয়েছে। তাই এ অর্জন আমাদের ধরে রাখতে হবে। আগামীতে পরীক্ষিত দুর্নীতিবাজ, খুনি ও জুলুমবাজদের ক্ষমতায় নেওয়া যাবে না।

বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) বিকেলে নোয়াখালী জেলা জামে মসজিদ চত্ত্বরে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নোয়াখালী জেলা শাখার উদ্যোগে অনুষ্ঠিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ক্ষমতা মানুষকে দুর্নীতির দিকে নিয়ে যেতে পারে। অসীম ক্ষমতা মানুষকে নিশ্চিতভাবে চরম দুর্নীতিগ্রস্ত করে। আমাদের সংবিধান সরকারকে অসীম ক্ষমতা দেয়। এ কারণেই বাংলাদেশের যেকোনো সরকারই দানবে পরিণত হয়।

চরমোনাই পীর বলেন, বিগত ১৬ বছরে যারা দেশকে অর্থনৈতিকভাবে ভঙ্গুর করে দিয়ে, দেশের টাকা বিদেশে পাচার করে দেশকে দেউলিয়া করে ফেলেছে এবং সর্বত্র জুলুম নির্যাতনের রাজত্ব কায়েম করে রেখেছিলো সেই ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সবাইকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় কাজ করতে হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে ছাত্র-জনতার বিপ্লবে প্রমাণিত হয় জুলুম করে, অত্যাচার করে, জনগণের কন্ঠরোধ করে ক্ষমতায় টিকে থাকা যায় না। একটি সরকার পরিবর্তনের জন্য কেবল জুলাই বিপ্লব সংগঠিত হয়নি। এই বিপ্লব রাষ্ট্রের সকল বৈষম্য দূর করার বিপ্লব, ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিপ্লব। শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থাকার জন্য বাংলাদেশের সব রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনাকে ধ্বংস করে দিয়েছেন অভিযোগ করে পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, ‘পুলিশ বাহিনীকে ব্যবহার করে জেলে নিয়ে গিয়ে মানুষকে নির্যাতন করেছেন। বাংলাদেশের মানুষকে একটা ভীতির রাজত্বে নিয়ে গিয়েছিলেন। তাই তিনি যখন ছাত্র, শ্রমিক, জনতার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে পালিয়ে গেছেন, তখন এ দেশের মানুষ হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছেন।’

মাওলানা ইমতিয়াজ আলম বলেন, হাজারো শহীদের রক্তের বিনিময়ে এদেশের মানুষ নতুন বাংলাদেশ পেয়েছে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সৎ ও যোগ্য নেতৃত্বের মাধ্যমে একটি সুখি সমৃদ্ধ দেশ গড়ে তুলতে চায়। একটি কল্যাণ রাষ্ট্র গড়ে তুলতে চায়, যাতে ১৮ কোটি মানুষ মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে। ন্যায়বিচার, আইনের শাসন ও মৌলিক মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় যে সংগ্রাম চালিয়ে আসছে তা চূড়ান্তরূপ নেওয়া পর্যন্ত সকলকে কার্যকর ভূমিকা অব্যাহত রাখতে হবে।

মুফতী শামসুদ্দোহা আশরাফী বলেন, শেখ হাসিনার মতো একটি পুতুল ফ্যাসিবাদী সরকারকে আমাদের ওপর চাপিয়ে বন্ধুরাষ্ট্রের নামে ভারত এদেশে যেসব অনাচার করেছিল, আমরা তার কিছুই ভুলিনি। ভারত সেসবের দায় এড়াতে পারে না। দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে ভয়ংকর ফ্যাসিস্ট দানবকে এদেশের তরুণ শক্তি উৎখাত করতে পেরেছে। তারুণ্যের এই শক্তির মর্ম ভারত যত তাড়াতাড়ি বুঝবে ততই তাদের মঙ্গল।

ছাত্র-জনতার গণ অভ্যূত্থানে সংগঠিত গণহত্যার বিচার, দুর্নীতিবাজদের গ্রেফতার, অবৈধ সম্পদ বাজেয়াপ্ত ও নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা, সংখ্যানুপাতিক (চজ) পদ্ধতিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন, নোয়াখালীতে জলাবদ্বতা নিরসনে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের দাবীতে ও সাম্য, মানবিক মর্যাদা এবং সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় ইসলামী সমাজভিত্তিক কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বিশাল গণসমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন দলের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, সহকারি মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম, মুফতী শামসুদ্দোহা আশরাফী।

image_pdfimage_print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *