শিরোনাম

উপকরণের দাম বৃদ্ধিতে বিপাকে ভোলার নারী উদ্যোক্তারা

Views: 11

ভোলার নারী উদ্যোক্তারা আজকাল অনলাইনে ব্যবসা করে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। যদিও নানা প্রতিকূলতা এবং সংকটের মাঝে তাদের ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন এখনও জেগে রয়েছে, তবে সাম্প্রতিক উপকরণের দাম বৃদ্ধির কারণে কিছুটা সমস্যায় পড়েছেন তারা। তবুও, তাদের দৃঢ় সংকল্প এবং চেষ্টা তাদের এই পেশা ধরে রাখতে সাহায্য করছে।

ধীরে ধীরে ভোলার নারী উদ্যোক্তারা সাফল্যের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন এবং এই ব্যবসার প্রতি আরও নারীদের আগ্রহ বাড়ছে। বর্তমানে ভোলায় নারী উদ্যোক্তাদের সংখ্যা বাড়ছে, কিন্তু তাদের ব্যবহৃত পণ্য তৈরির উপকরণের দাম বেড়ে যাওয়ায় কিছুটা সমস্যায় পড়েছেন।

এদের মধ্যে অন্যতম প্রধান উপকরণগুলো হল রং, কাপড়, সই-সুতা, এবং কাঁচামাল। এই উপকরণগুলোর দাম বৃদ্ধির ফলে পণ্য উৎপাদনে খরচ বাড়ছে এবং লাভ কমে যাচ্ছে, যা উদ্যোক্তাদের জন্য বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে তাদের আশা, সরকার যদি তাদের জন্য প্রশিক্ষণ, ঋণ, স্টল এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করে, তবে এই পরিস্থিতি কাটিয়ে নতুন উদ্যোক্তাদের সৃষ্টি হবে এবং জেলার অর্থনীতিতেও ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে।

বর্তমানে ভোলার নারী উদ্যোক্তারা শাড়ি, পাঞ্জাবি, বেডসিট, থ্রি পিচ, নকশীকাঁথা, ওয়ালমেট, কেক, বিভিন্ন রকমের রান্নার আইটেম, আচার, হাতের তৈরি মসলা এবং অর্গানিক প্রোডাক্ট তৈরি করেন। এসব পণ্যের দাম বাজারে গড়ে দুই থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এর ফলে উদ্যোক্তারা লাভের মার্জিন কমে আসায় ক্ষতির মুখে পড়ছেন।

ভোলা সদরের নারী উদ্যোক্তা ফারজানা হাসি বলেন, “আমি তিন বছর ধরে নকশি কাঁথা তৈরি করে অনলাইন এবং সরাসরি বিক্রি করছি। নানা বাধা কাটিয়ে ব্যবসার পরিধি বাড়ানোর চেষ্টা করেছি, তবে বর্তমানে উপকরণের দাম বৃদ্ধি এবং বাজারের মন্দা পরিস্থিতি আমাদের জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।”

এছাড়া, নারী উদ্যোক্তা ইশরাত জাহান সুমাইয়া জানান, তিনি অনলাইনে অর্গানিক হেয়ার অয়েল বিক্রি করেন। “এখন তেল ও পেঁয়াজসহ কাঁচামালগুলোর দাম বেড়ে গেছে, তাই লাভ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। দাম বাড়ালে ক্রেতা কমে যায়, যা আমাদের জন্য একটি বড় সমস্যা,” বলেন তিনি।

ভোলা সদরের মুছাকান্দি গ্রামের নারী উদ্যোক্তা এবং ভোলা জেলা নারী উদ্যোক্তা ফোরামের সাধারণ সম্পাদক প্রমিতা এনি জানান, “আমরা সব নারী উদ্যোক্তা অত্যন্ত পরিশ্রমী। সংসার সামলানোর পাশাপাশি হাতের তৈরি হ্যান্ড পেইন্টিং, নকশি কাঁথা ও কেক তৈরিসহ নানা পণ্য অনলাইন এবং অফলাইনে বিক্রি করি। তবে সরকারি সহায়তা এবং প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা হলে আরও বেশি উৎসাহ পাবেন নারী উদ্যোক্তারা।”

তিনি আরও বলেন, “দাম নিয়ন্ত্রণে মনিটরিং ব্যবস্থা জরুরি। এতে উৎপাদন খরচ কমবে এবং উদ্যোক্তারা তাদের ব্যবসা ধরে রাখতে পারবেন।”

এদিকে, নারী উদ্যোক্তা সৃষ্টিতে সরকারি সহায়তা এবং প্রণোদনা দাবি করেছেন নারী উদ্যোক্তারা।

এ ব্যাপারে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণের সহকারী মাহমুদুল হাসান জানান, “আমরা নিয়মিত বাজার মনিটরিং করছি। যদি কোনো ব্যবসায়ী নির্ধারিত দামের বাইরে অতিরিক্ত দামে পণ্য বিক্রি করে, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ভোলা বিসিক শিল্প নগরীর উপ-ব্যবস্থাপক এসএম সোহাগ হোসেন বলেন, “আমরা নারী উদ্যোক্তা সৃষ্টিতে কাজ করছি। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নারীদের ঋণ, প্রশিক্ষণ এবং প্লাট বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। কারো সহযোগিতা প্রয়োজন হলে তাদের পাশে আমরা আছি।”

মো: তুহিন হোসেন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম

image_pdfimage_print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *