শিরোনাম

এআই সবকিছু কেড়ে নিতে পারবে না: গুগল কর্তার দাবি

Views: 14

মানুষের তুলনায় বহুগুণ দ্রুত কাজ করতে সক্ষম আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই)। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বিকাশের ফলে মানুষ যে অনেক ক্ষেত্রেই কর্মসংস্থানের চাপে পড়তে পারে, সে আশঙ্কা ক্রমেই বাড়ছে। বিশেষ করে চ্যাটজিপিটিসহ আধুনিক বটগুলো কোডিং থেকে শুরু করে বিভিন্ন সৃজনশীল কাজেও দক্ষ হয়ে উঠছে। এ কারণে ডেভেলপারদের জগতে শঙ্কা তৈরি হয়েছে, এআই কি মানুষের কাজ পুরোপুরি দখল করে নেবে?

তবে গুগলের হেড অব রিসার্চ ইয়োসি মাতিয়াসের মতে, এআই যতই উন্নত হোক, সব ক্ষেত্রে মানুষের বিকল্প হতে পারবে না। সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে তিনি কোডিং এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ভূমিকা নিয়ে বিস্তারিত কথা বলেন। তাঁর মতে, এআই নির্দিষ্ট কিছু ক্ষেত্রে সহায়তা করতে সক্ষম, তবে এর চূড়ান্ত রূপ দেওয়া বা সব কাজ একাই করতে এখনও এআইয়ের অনেক দূর যেতে হবে।

মানুষের বিকল্প নয় এআই

ইয়োসি মাতিয়াস বলেন, “কোডিংয়ের ক্ষেত্রে এখনো মানুষের ভূমিকা অপরিহার্য। কোডিংয়ের পুরো প্রক্রিয়াকে এআই দ্বারা নিয়ন্ত্রিত করা সম্ভব নয়। বিশেষত, জটিল প্রকল্পে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার কাজ মানুষের হাতেই থাকবে।” তিনি আরও যোগ করেন, “এআই জুনিয়র স্তরের কাজগুলোতে সাহায্য করতে পারে, যেমন বেসিক কোড লেখা বা কিছু সাধারণ সমস্যার সমাধান। তবে কোডিংয়ের পুরো প্রকল্পকে কার্যকর করার দায়িত্ব এখনো মানুষের ওপর নির্ভরশীল।”

শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা ও শৃঙ্খলা

মাতিয়াসের মতে, প্রযুক্তির এই যুগে সবারই কোডিং শেখা গুরুত্বপূর্ণ। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “নিয়মিত শেখার অভ্যাস এবং শৃঙ্খলাবদ্ধ শিক্ষার প্রক্রিয়া আগের মতোই প্রাসঙ্গিক।” তাঁর মতে, এআই যদিও অনেক ক্ষেত্রেই কাজ সহজ করে দিচ্ছে, তবুও দক্ষতা অর্জনের জন্য মানুষকে প্রয়োজনীয় জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতা অর্জনে মনোযোগী হতে হবে।

কোডিংয়ে মানুষের ভূমিকা অপরিহার্য

তাঁর ভাষায়, “এআই কোডিং প্রক্রিয়ার একটি অংশ করতে পারে, তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া এবং কাজের গুণগত মান নিশ্চিত করার দায়িত্ব মানুষের হাতেই থাকবে। কোডিং শুধুমাত্র একটি প্রযুক্তিগত কাজ নয়, এটি একটি সৃজনশীল কাজও।”

বিরোধী মতামত ও শঙ্কা

গুগল কর্তার মন্তব্যের বিপরীতে অনেক প্রযুক্তিবিদ মনে করেন, এআই ইতোমধ্যেই ডেভেলপারদের মধ্যে চাপে ফেলেছে। এইচসিএলের প্রাক্তন সিইও বিনীত নায়ার একবার বলেছিলেন, “তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে এআই-এর বিকাশ এতটাই বিপ্লব ঘটাবে যে, অন্তত ৭০ শতাংশ কাজ মানুষ ছাড়া চালিয়ে দেওয়া সম্ভব হবে।”

তবে ইয়োসি মাতিয়াসের বক্তব্য এ ধারণার বিপরীত। তিনি বলেন, “এআই কোড লিখতে পারে, তবে সেটি খতিয়ে দেখার কাজ এবং কোডিংয়ের পূর্ণাঙ্গ রূপ দেওয়া মানুষের হাতেই থাকবে।” তাঁর মতে, বর্তমান পরিস্থিতিতে এআই শুধুমাত্র কোডিং প্রক্রিয়ার সহায়ক একটি অংশ হতে পারে, তবে সেটি পুরোপুরি মানুষের কাজ দখল করবে না।

ডেভেলপারদের ভবিষ্যৎ

যদিও এআই-প্রস্তুত প্রযুক্তি জুনিয়র ডেভেলপারদের কাজে কিছুটা চাপ সৃষ্টি করেছে, তবুও মানুষের সৃজনশীলতা এবং বিশ্লেষণী দক্ষতার কাছে এআই অনেক ক্ষেত্রেই এখনও পিছিয়ে। গুগল কর্তার মন্তব্য থেকে স্পষ্ট, প্রযুক্তির বিকাশ সত্ত্বেও মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ এখনও অনেকটাই রয়েছে।

মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম
image_pdfimage_print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *