বরিশাল অফিস :: বরিশাল অঞ্চলে এডিস মশার দাপটে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা পুনরায় উদ্বেগ সৃষ্টি করছে। গত একমাসে শুধু সরকারি হাসপাতালেই প্রায় সোয়া ৬শ ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে। এ সময়ে শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১ জন ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
এ নিয়ে গত কয়েক মাসে বরিশালের সরকারি হাসপাতালগুলোতে ১১ ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হলো। এরমধ্যে ১০ জনই শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তরের মতে গত কয়েক মাসে বরিশালের সরকারি হাসপাতালে আগত দেড় হাজার ডেঙ্গু রোগীর মধ্যে আগষ্টেই পরিস্থিতি ছিল উদ্বেগজনক। এমনকি সরকারি হাসপাতালের বাইরে আরো কয়েকগুন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসকদের প্রাইভেট চেম্বারে চিকিৎসা নিচ্ছে বলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
এডিস মশা নিয়ন্ত্রনে বরিশাল সিটি করপোরেশন সহ স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর ন্যূনতম প্রস্তুতি না থাকার মধ্যেই আগষ্টজুড়ে প্রতিদিনই গড়ে ২০ জনের ওপর ডেঙ্গু রোগী এসেছে সরকারি হাসপাতালগুলোতে। আগষ্টের শেষ দিনে আগত রোগীর সংখ্যা ছিল ৩৫। গতবছর এডিস মশার বংশ বিস্তার সহ নির্মূলে ব্যর্থতার কারণে বরিশাল অঞ্চলের সরকারি হাসপাতালগুলোতে প্রায় ৩৮ হাজার ডেঙ্গু আক্রান্ত ভর্তি সহ চিকিৎসা গ্রহণ করলেও মৃত্যু হয়েছিল দু শতাধিক নারী-পুরুষ ও শিশুর।
স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গুর পরিপূর্ণ নিয়ন্ত্রনে আবারো মশক নিধনে নিবিড় কর্মসূচী গ্রহণের বিকল্প নেই বলে জানানো হয়েছে। এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বরিশাল বিভাগের পরিচালক ডা. শ্যামল কৃষ্ণ মন্ডল জানান, এডিস মশা নির্মূল ছাড়া ডেঙ্গু থেকে পরিত্রাণের কোন বিকল্প পথ চিকিৎসা বিজ্ঞানে আপাতত নেই। বরিশাল সিটি করপোরেশন ছাড়াও বিভিন্ন পৌরসভা ও স্থানীয় সরকার প্রশাসনকে এ বিষয়টি বার বারই স্মরন করিয়ে দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়ে তিনি এ লক্ষ্যে সবাইকে আন্তরিক পদক্ষেপ গ্রহনের ও অনুরোধ জানান। বরিশালের সরকারী হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসায় সার্বক্ষনিক প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানিয়ে তিনি জ্বর সহ যেকোন উপসর্গ দেখা দিলে চিকিৎসকের স্মরনাপন্ন হবারও অনুরোধ জানান।
এদিকে সাম্প্রতিক সময়ে বরিশাল অঞ্চলের হাসপাতালগুলোতে আগত প্রায় দেড় হাজার ডেঙ্গু রোগীর মধ্যে বরিশাল জেনারেল হাসপাতাল ও শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেই প্রায় ৪শ রোগী ভর্তি হয়েছেন। প্রতিদিনই এ দুটি হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্তদের আগমনও অব্যাহত আছে।
এসব বিষয়ে বরিশাল সিটি করপোরেশনের সিইও মোঃ ইসরাইল হোসেনের সাথে আলাপ করা হলে তিনি জানান, মহানগরীতে মশক নিধনে আমাদের আন্তরিকতার কোন ঘাটতি নেই। নগর ভবনের কাছে মশক নিধনে ওষুধের কোন ঘাটতি নেই বলে জানিয়ে তিনি বলেন, সাম্প্রতিক গোলযোগের সময় আমাদের বিপুল সংখ্যক স্প্রেয়ার বিনষ্ট হয়েছে। কিছু চুরিও হয়ে গেছে। এর পরেও অবশিষ্ট স্প্রেয়ার ও ফগার মেশিনের সহায্যে আমরা নগরীতে মশক নিধনে কাজ করছি। তবে সাম্প্রতিক প্রবল বর্ষণে ওষুধ ছিটানো যথেষ্ট ব্যাহত হচ্ছে বলে জানিয়ে গত ২৫ আগষ্ট নগর পরিষদের সভায় মশক নিধনে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার কথাও জানান তিনি।