শরীয়তপুর জেলার জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল আমিনের মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হলেও তার পরিবার একে হত্যাকাণ্ড হিসেবে দাবি করছে। তাদের মতে, আল আমিনের স্বাভাবিক মৃত্যু সম্ভব নয়, বরং তাকে হত্যা করে পরে আত্মহত্যার ঘটনা সাজানো হয়েছে। বুধবার, ১৫ জানুয়ারি, জাজিরা থানার দ্বিতীয় তলার নিজের কক্ষে ওসি আল আমিনের ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার হয়। তার পরিবারের সদস্যরা এই মৃত্যুকে অস্বাভাবিক মনে করছেন এবং মৃত্যুর কারণ উদ্ঘাটনের জন্য পুলিশের প্রতি তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন।
আল আমিনের বড় বোন, সালমা আক্তার কান্নায় ভেঙে পড়েন এবং বলেন, ‘‘আমার ভাই কখনও আত্মহত্যা করতে পারে না।’’ তিনি দাবি করেন যে, তার ভাই একজন ধার্মিক ও সৎ ব্যক্তি ছিলেন, যিনি ইসলামিক জীবনযাপন করতেন এবং আত্মহত্যার মতো পাপ কোনোভাবেই করতে পারেন না। মৃত্যুর আগে আল আমিনের মানসিক চাপ বা দুশ্চিন্তা ছিল না বলেও জানান তিনি।
আল আমিনের ছোট ভাই আবুল কালাম, যিনি মধুমতি ব্যাংকের কর্মকর্তা, জানান যে, তিনি কখনও ঘুষ বা অনিয়মে জড়িত ছিলেন না। বরং খুব সাদাসিধে জীবনযাপন করতেন এবং সংসার চালাতে কঠোর পরিশ্রম করতেন। তার মতে, ‘‘এটি আত্মহত্যা নয়, এটি একটি হত্যাকাণ্ড।’’
জাজিরা থানার ওসি হিসেবে যোগদানের পর থেকে তিনি সব সময় পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন এবং কখনও কোনো অভিযোগের মুখোমুখি হননি। মৃত্যুর পর, শরীয়তপুর পুলিশ সুপার নজরুল ইসলাম দাবি করেন যে, আল আমিন আত্মহত্যা করেছেন, তবে তার পরিবার সেই দাবি মেনে নিতে প্রস্তুত নয়।
এদিকে, ফরেনসিক বিভাগের টিম ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে ময়নাতদন্ত শেষে আল আমিনের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। তার পরিবার, বিশেষ করে স্ত্রী ও দুই সন্তান, শোকে স্তব্ধ অবস্থায় আছেন এবং পুরো ঘটনা পরিষ্কারভাবে তদন্তের দাবি জানাচ্ছেন।
শরীয়তপুর পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, ‘‘অপমৃত্যু মামলা রুজু করা হয়েছে এবং বিষয়টি তদন্তের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।’’ তারা আশা করছেন, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
মো: তুহিন হোসেন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম