শিরোনাম

’কাঁচা টাকা চাষে’ ভাগ্য ফিরেছে পটুয়াখালীর কুমিরমারার চাষীদের

Views: 53

আল-আমিন (পটুয়াখালী):  বর্ষা মৌসুমেও মালচিং পদ্ধতি ব্যবহার করে বানিজ্যিক ভাবে মরিচ উৎপাদন করছে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের সবজি গ্রাম খ্যাত কুমিরমারা গ্রামের কৃষকরা লাভবান হয়েছেন। তাইতো চাষীরা একে কাচাঁ মরিচ না বলে ‘কাচাঁ টাকা’ চাষ বলতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য মনে করে।

Ôজমিকে উত্তমরূপে তৈরি করে প্রয়োজনীয় জৈব ও রাসায়নিক সার মিশিয়ে বেড তৈরি করে মালচিং পেপার বিছিয়ে সেখানে নির্দিষ্ট দূরত্বে পরপর ছিদ্র করে চারা রোপণ করে কাঁচা মরিচ চাষ করাই হচ্ছে মালচিং পদ্ধতি।

২০০১ সালে প্রথম এ গ্রামে মালচিং পদ্ধতিতে কাঁচা মরিচ চাষ শুরু হলেও কাঙ্খিত সাফল্য আসে প্রায় এক যুগ পর। ২০১৩ সালের দিকে। তবে পদ্মা সেতু পরবর্তী বাস্তবতায় নতুন মাত্রা যোগ হয় এই মরিচ চাষে। দীর্ঘ সময় ফলন এবং বাজারে সারাবছর চাহিদা থাকায় কাঁচা মরিচ চাষ করে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। এ পদ্ধতিতে কাঁচা মরিচ চাষ করলে সময় ও খরচ কম হয়। ফলনও ভালো পাওয়া যায়।

কুমিরামাড়া গ্রামের কৃষক জাকির হোসেন বলেন, ‘এক শতক জমিতে যে কাঁচা মরিচ হয়েছে, তা থেকে অনায়াসে ২০-২৫ হাজার টাকা বিক্রি করা যাচ্ছে। এবার আমি মোট ২০ শতাংশ জমিতে কাঁচা মরিচ আবাদ করেছি। এখন প্রতি কেজি মরিচ ১৮০ টাকায় বিক্রি করছি। কাঁচা মরিচ হলো এখন কৃষকের মানিব্যাগ। কাঁচা মরিচ নয় এটা বলতে পারেন কাঁচা টাকা।’

কুমিরমাড়া গ্রামের কৃষক সুলতান গাজী বলেন, ‘মালচিং পেপার ব্যবহার করে কাঁচা মরিচ চাষ করলে বেশ উপকার পাওয়া যায়। প্রথমত একবার সার দিয়ে গাছ লাগালে পরে আর সার প্রয়োগের প্রয়োজন হয় না। এছাড়া মালচিং পেপারের কারণে পোকামাকড়ের আক্রমণও কম হয়। গাছের গোড়ায় ছাড়া পুরো বেড মালচিং পেপার দিয়ে ঢেকে দেওয়ায় কোনো ধরনের আগাছা জন্মাতে পারে না। আগাছা দমনে বাড়তি খরচ করতে হয় না। ফলে উৎপাদন যেমন বাড়ছে; তেমনই ফলনও অনেক বেশি হচ্ছে। তাই দিন দিন এ পদ্ধতিতে কাঁচা মরিচ আবাদের পরিমাণ বাড়ছে।

পটুয়াখালী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘নীলগঞ্জের কৃষকেরা সবজি উৎপাদনে অনেক সমৃদ্ধ। এ পদ্ধতি পুরো জেলার কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে পারলে কাঁচা মরিচ উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব। বর্তমানে নীলগঞ্জে যে কাঁচা মরিচ উৎপাদন হচ্ছে, তা জেলার চাহিদা মিটিয়ে বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করা হচ্ছে। কৃষি বিভাগ সব সময়ে তাদের পাশে আছে।’

image_pdfimage_print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *