শিরোনাম

কাঠালিয়ার ছৈলার চর: প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর একটি পর্যটন কেন্দ্র

Views: 8

ঝালকাঠির কাঠালিয়া উপজেলার বিষখালী নদীর তীরে অবস্থিত ছৈলার চর বর্তমানে একটি আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর এই চরটি এখন পর্যটকদের কাছে এক স্বপ্নের গন্তব্যস্থল। জায়গাটি ধীরে ধীরে বিকশিত হয়ে উঠছে, যেখানে রয়েছে ডিসি ইকোপার্ক, বিশ্রামাগার, শিশুদের জন্য চিত্ত বিনোদন ব্যবস্থা এবং একটি নয়নাভিরাম লেক।

বছরের পর বছর ধরে পর্যটকরা এখানে ভিড় করছেন, এবং এলাকাবাসীও সরকারের কাছ থেকে আরও উন্নয়ন প্রত্যাশা করছে। ছৈলার চরের প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য এবং পরিবেশের কারণে এখানে বেড়াতে আসা এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ছৈলার চরটি প্রায় এক যুগ আগে জেগে উঠেছিল, শুরুতে মাত্র ৪১ একর জমির ওপর এর বিকাশ শুরু হয়, কিন্তু বর্তমানে এটি ৬১ একর জমিতে পরিণত হয়েছে। চরটি ছৈলা গাছের কারণে জনপ্রিয়, যা একটি লবণ সহিষ্ণু গাছ এবং প্রকৃতিগতভাবে উপকূলীয় অঞ্চলে জন্মায়। এই গাছটি ঝড় এবং জলোচ্ছ্বাসের প্রতিরোধক হিসেবে পরিচিত এবং এর ফল কাঁচা, পাকা বা রান্না করা অবস্থায় খাওয়া যায়। চরটির পরিবেশে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি যেমন শালিক, ডাহুক এবং বক বাস করে, যা পর্যটকদের আরও আকর্ষিত করে।

ছৈলার চর পর্যটকদের জন্য একটি নিরাপদ এবং মনোরম স্থান হিসেবে বিবেচিত। এখানে কোনো হিংস্র প্রাণী নেই, এবং সহজ যোগাযোগ ব্যবস্থার ফলে ভ্রমণকারীরা এখানে আসতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। শীত মৌসুমে বিশেষ করে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা এখানে পিকনিক করতে আসেন এবং পরিবার-পরিজন নিয়ে আরও অনেকেই এখানে আসেন।

২০১৫ সালে ছৈলার চরকে সরকারিভাবে পর্যটন স্পট হিসেবে চিহ্নিত করা হয় এবং উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এখানে বেশ কিছু স্থাপনা তৈরি হয়েছে। ডিসি ইকোপার্ক, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত রেস্ট হাউজ এবং শিশুদের বিনোদনের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে। তবে, স্থানীয়দের দাবি, ছৈলার চরকে আরও উন্নত এবং আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে পর্যটন করপোরেশনের সহযোগিতা প্রয়োজন।

কিভাবে যাবেন ::
ঝালকাঠি জেলা শহর থেকে কাঠালিয়া উপজেলায় যেতে হবে ৩৫ কিলোমিটার পথ। সেখান থেকে মাত্র ৫ কিলোমিটার পরেই ছৈলার চর পৌঁছানো যাবে। সড়ক ও নৌ পথে সহজে পৌঁছানো সম্ভব, এবং প্রতিদিনই শত শত মানুষ এখানে আসছে প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করতে।

পর্যটকদের অভিজ্ঞতা
এখানে বেড়াতে আসা নুরনবী তালুকদার বলেন, “ছৈলার চর এখন আমাদের কাছে একটি ‘সুন্দরবন’। এখানে মৌচাক, ছৈলার বাগান এবং নদীর শান্ত পরিবেশ সত্যিই মনোমুগ্ধকর।” শিক্ষক মো. রবিউল ইসলাম জানান, “এটা সত্যিই অসাধারণ। নদী এবং বনের সৌন্দর্য একসাথে উপভোগ করা যায়। এখানে হিংস্র প্রাণী নেই, তাই পর্যটকদের জন্য এটি এক নিরাপদ জায়গা।”

ছৈলার চর শুধু একটি পর্যটন স্থান নয়, এটি একটি প্রাকৃতিক বিপ্লব। এখানে প্রতিদিন নতুন নতুন প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে, এবং এলাকাবাসীও এর উন্নয়নে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করছে। ছৈলার চরকে পর্যটন করপোরেশনের আওতায় নিয়ে গেলে, এটি দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম প্রধান পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে।

“মো: তুহিন হোসেন,
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম”

image_pdfimage_print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *