শিরোনাম

কারখানা নদীর ভাঙনে ঘরবাড়ি, ফসলি জমি ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিলীন

Views: 9

বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার দুধল, কবাই ও ফরিদপুর এই তিন ইউনিয়নের মধ্যে দিয়ে বয়ে গেছে কারখানা নদী। তবে এই নদীর অব্যাহত ভাঙনে হাজার হাজার বসতবাড়ি, তিন ইউনিয়নের প্রায় ৫ হাজার একর ফসলি জমি এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিলীন হয়ে গেছে।

প্রথমত, নদী ভাঙনের শিকার হয়েছে কবাই ইউনিয়নের শিয়ালঘুনী টেকনিক্যাল বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজ এবং শিয়ালঘুনী ৭০নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন, যা অনেক আগেই নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কারখানা নদীর দুই পাড়ে গড়ে ওঠা দুধল, কবাই ও ফরিদপুর ইউনিয়নের ৬টি গ্রাম ভাঙনের মুখে। নতুন করে গড়ে উঠা কবাই বাজার, ৪নং দুধল ইউনিয়নের শতরাজ বাজারও হুমকির মুখে রয়েছে। বিশেষত, ফরিদপুর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের ফরিদপুর গ্রাম এবং চর রাঘুনদ্দি গ্রামও নদী ভাঙনের কবলে পড়ছে। ১২৮নং চর রাঘুনদ্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ও নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

পশ্চিম ফরিদপুর গ্রামের ভেরি বাঁধের বিভিন্ন স্থানে ভেঙে যাওয়ার কারণে প্রতিবছর বর্ষাকালে নতুন বাঁধ নির্মাণ করা হলেও তা নদী গর্ভে হারিয়ে যায়। ভাঙন আতঙ্কে রাত জাগছেন নদী তীরবর্তী শত শত পরিবার।

কবাই ইউনিয়নের বাসিন্দা বারেক খান জানান, গত বর্ষা মৌসুমে বালুর বস্তা ফেলে ভাঙন রোধের চেষ্টা করা হয়েছিল, কিন্তু শুকনো মৌসুমে নদীর পানি কমতে শুরু করলে তীব্র স্রোতের কারণে নতুন করে ভাঙন শুরু হয়েছে। এতে দুটি গ্রামের দেড় শতাধিক বসতবাড়ি এবং দুই শত একর ফসলি জমি নদী গর্ভে চলে গেছে। ভাঙনের শিকার পরিবারগুলো বর্তমানে আশ্রয় নিয়েছে বাজার, নদীর পাড়ে কিংবা আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে।

ফরিদপুর গ্রামের শাহজাহান মল্লিক বলেন, “নদীর অব্যাহত ভাঙনে আমাদের সড়ক, বসত বাড়ি ও ফসলি জমি চলে যাচ্ছে। সরকারি কোন কার্যকরী পদক্ষেপ নেই। অনেকেই ভিটে মাটি হারিয়ে পথে বসেছেন। বর্ষাকালে বেরিবাঁধ ভেঙে পানিতে তলিয়ে যায় আমাদের বসতবাড়ি।”

কবাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. জহিরুল তালুকদার জানান, “আমরা অনেক আগেই আমাদের পূর্ব পুরুষের বাড়ি হারিয়েছি। এখন বাড়ির সামনে পারিবারিক গোরস্থানও নদী গর্ভে চলে যাচ্ছে। আমরা ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করছি।”

ফরিদপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান এস, এম, শফিকুর রহমান বলেন, “ভাঙন রোধে বড় বরাদ্দ প্রয়োজন। অন্যথায় আমাদের ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা নদী গর্ভে চলে যাবে।”

বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ খালেদ বিন অলীদ জানিয়েছেন, “আমরা কারখানা নদী ভাঙন এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন করেছি এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

মো: তুহিন হোসেন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম

image_pdfimage_print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *