পটুয়াখালী প্রতিনিধি :
কুয়াকাটায় কালভার্ট ও খাল দখল করে বিশালাকৃতির ঘর নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। এতে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা বন্ধসহ খাল ভরাট হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে।
এ বিষয়ে কুয়াকাটা পৌর কর্তৃপক্ষ, স্থানীয় ভূমি প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনকে স্থানীয়রা জানালেও বন্ধ হয়নি নির্মাণ কাজ।
কুয়াকাটা পৌর এলাকার ২ নম্বর ওয়ার্ডের কম্পিউটার সেন্টার সংলগ্ন আশ্রয়ন প্রকল্পে এ দখল কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এমন দখলের কারণে পরিকল্পিত নগরায়ন কতটুকু বাস্তবায়িত হবে তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে পৌরবাসীর।
জানা গেছে, কুয়াকাটা পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের আশ্রয়ন প্রকল্পের বাসিন্দা জামাল মাঝির ছেলে আলী হায়দার আশ্রয়ন প্রকল্পের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া প্রবাহমান খালের উপরে বিশালাকৃতির একটি টং ঘর নির্মাণ করেছে। ওই টং ঘর নির্মাণ করতে গিয়ে সদ্য নির্মাণ করা একটি বক্স কালভার্ট ঘরের নিচে চাপা পরে গেছে। আশ্রয়নের কোল ঘেষে বয়ে যাওয়া খাল দিয়ে ওই এলাকার ফসলি জমিসহ জমে থাকা অতিরিক্ত পানি নিষ্কাশন হয়ে থাকে। প্রতিনিয়ত খালের দুই দিক দিয়ে দখলে নিচ্ছে সুবিধাভোগীরা। এতে খালটি সরু হতে হতে বন্ধ হবার উপক্রম হয়েছে। তদারকির অভাবে খালের পশ্চিম মাথা ভরাট করে দখলে নিয়েছে কতিপয় দখলবাজরা। পূর্ব দিকে করা হয়েছে মাছের ঘের। এ ব্যাপারে জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয়রা প্রতিবাদ করলেও মহিপুর ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা কর্মচারীদের যোগসাজশে চলে আসছে এ দখল প্রক্রিয়া।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আশ্রয়ন প্রকল্পের কয়েকজন বাসিন্দা জানান, দখল দূষণের কারণে খালটি ভরাট হয়ে গেছে। যেটুকু বাকি আছে তা ভরাটের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। দিন দিন যেভাবে খাল ভরাট ও দখল হয়ে আসছে তাতে আগামীতে খালের কোনো অস্তিত্ব থাকবে না এমন মন্তব্য সচেতন নাগরিকদের।
খাল ও কালভার্ট দখল করে ঘর নির্মাণ করার কথা স্বীকার করে অভিযুক্ত আলী হায়দার সাংবাদিকদের জানান, খালের উপর টং ঘর নির্মাণ করেছেন তিনি এটা সত্য। তবে ঘরের নিচ দিয়ে পানি চলাচল করতে পারবে। কালভার্ট দিয়ে পানি নিষ্কাশনেও কোনো সমস্যা হবে না।
তিনি দাবি করেন, এ বিষয়ে পৌর কাউন্সিলর, মেয়র ও ভূমি অফিসের লোকজন অবগত রয়েছে।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ঠ ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. তৈয়বুর রহমান বলেন, এই খাল দিয়ে এলাকার পানি নিষ্কাশন হয়ে আসছে। প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় ঘের নির্মাণসহ নানাভাবে দখল হয়ে গেছে খালটি। খাল রক্ষায় ভূমি কর্মকর্তারা উদ্যোগ না নেওয়ায় দখল রোধ করা যাচ্ছে না।
মহিপুর ইউনিয়নের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা আ.ন.ম. মুরাদুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। তার অফিসের অন্যরা জানতে পারে। কুয়াকাটা গিয়ে বিস্তারিত জানবেন।
কুয়াকাটা পৌর মেয়র আনোয়ার হোসেন হাওলাদার জানান, এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। কেউ তাকে জানায়নি। কাউন্সিলরের মাধ্যমে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আশ্বাস করেন।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, তিনি তহসিলদার পাঠিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলে দিয়েছেন।