বরিশাল অফিস:: শীত মানেই পিঠা-পুলির স্বাদ। শীতের মৌসুমে বাহারি রকম পিঠা বানিয়ে বিক্রি করে অর্থ উপার্জন করছেন কুয়াকাটার মৌসুমি পিঠা বিক্রেতারা। পিঠার স্বাদ নিতে ভিড় করছেন ক্রেতারা।
সরেজমিনে দেখা যায়, পটুয়াখালীর কুয়াকাটার চৌরাস্তার পাশে এবং রাখাইন মার্কেট বাজারে রাস্তার পাশে কয়েকটি পয়েন্টে ভ্যানের মধ্যে গ্যাসের চুলা, সিলিন্ডার ও পিঠা তৈরির উপকরণ নিয়ে দুপুরের পরপরই হাজির হন মৌসুমি পিঠা বিক্রেতারা।
রিকশাচালক, দিনমজুর, ব্যবসায়ী, ছাত্র, শিক্ষক, এবং ঘুরতে আসা পর্যটক সহ ছোট বড় সব শ্রেণিপেশার মানুষ এই মৌসুমি পিঠা দোকানের ক্রেতা।সন্ধ্যার পরপরই ব্যস্ত হয়ে পড়েন এসব পিঠা বিক্রেতারা, কেউ দাঁড়িয়ে, কেউবা বসে খাচ্ছেন এবং কেউ পিঠার স্বাদ নেওয়ার জন্য দাঁড়িয়ে আছেন।
পিঠা কিনতে এসে অপেক্ষায় থাকা স্থানীয় ঝিনুক ব্যবসায়ী এমাদুল জানান, শীতের সময় চিতই, ভাপা, পাটিসাপটা পিঠা খেতে ভালো লাগে। বিশেষ করে নানা রকম ভর্তা দিয়ে গরম চিতই পিঠার স্বাদই আলাদা।
তিনি আরো বলেন, গরমের সময় এসব পিঠা ততটা খাওয়া যায় না। তা ছাড়া ভাপা পিঠাও বেশ মজার। এই শীতের সময় পিঠার জন্য দোকানে সিরিয়াল দেওয়া লাগে। বাজার কেন্দ্রিক থাকার সুবাদে বিকালের নাশতায় চিতই আর ভাপা পিঠা দিয়ে সেরে নেই।
পিঠা কিনতে আসা ব্যাংক কর্মকর্তা আলামিন হাওলাদার বলেন, শীত আর পিঠা একে অপরের সাথে সম্পর্কিত। ছোটোবেলায় মা মাটির চুলোয় পিঠা বানিয়ে দিতো আর সন্ধ্যার সময় বই নিয়ে পড়তে পড়তে পিঠা খেতাম। কর্মব্যস্ততার কারণে এসব পিঠা বানানোর সময় হয়ে উঠে না। তাই দোকানে আসলাম পিঠা বাসায় নিয়ে ছেলে মেয়েসহ একসঙ্গে খাওয়ার জন্য।
স্থানীয় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও পিঠা বিক্রেতা দম্পতি মামুনুর রশীদ ও শিউলি জানান, শীত আসতেই আমাদের কাজের চাপ বেড়ে যায়। পিঠা বানানো থেকে সবকিছু আমরা স্বামী স্ত্রী দুইজনে করি। ক্রেতাদের চাহিদা মেটাতে ব্যস্ত সময় পার করতে হয় আমাদের।
বেচাকেনা ভালো উল্লেখ করে এ দম্পতি আরও জানান ৫টি চুলায় পিঠা তৈরি করি আমরা। প্রতিদিন বিকাল সাড়ে ৪টা থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত চলে আমাদের এ কর্মযজ্ঞ।
চৌরাস্তার জিরো পয়েন্টের পিঠা বিক্রেতা দুই মামু ভাইগ্না বলেন, পাটিসাপটা, কুলি, চিতই, খিজানো পিঠা ও তেলের পিঠা বিক্রি করেন তারা। দামে কম ও মান ভালো হওয়ায় দোকানে প্রায় ক্রেতাদের ভিড় লেগে থাকে।
স্থানীয়দের ভাষ্য মতে, বছরের এই শীতকালীন সময়টা পিঠার বেচা-বিক্রি বেশি হয়। তাদের অর্জিত মুনাফার দ্বারা দোকানিরা স্বাচ্ছন্দ্যে জীবনযাপন করতে পারেন। বর্তমানে চিতই, ভাপা, বরাপিঠা, পাটিসাপটাসহ ৫ থেকে ৬ ধরনের পিঠা তৈরি করছেন তারা। বিভিন্ন বাহারি রকমের ভর্তা সহ এসকল পিঠা খাওয়ার জন্য থাকছে নারিকেল এবং গুড়। তবে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়ার কারণে তাদের লাভের পরিমান দিন দিন কমে যাচ্ছে।