পটুয়াখালী প্রতিনিধি :: কুয়াকাটায় ‘সিসা দূষণ বন্ধ হলে, বাড়বে শিশু বুদ্ধি-বলে’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আন্তর্জাতিক সিসা দূষণ প্রতিরোধ সপ্তাহ (২০-২৬ অক্টোবর) উপলক্ষে আলোচনা সভা, র্যালি এবং সমুদ্রের তীরে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য ছিল জনগণের মধ্যে সিসা দূষণ সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করা ও এর ক্ষতিকর প্রভাব তুলে ধরা।
শনিবার (২৬ অক্টোবর) বেলা ১১টায় ইয়ুথনেট গ্লোবাল এবং পিওর আর্থ বাংলাদেশ যৌথভাবে কুয়াকাটা প্রেসক্লাবে আলোচনা সভার আয়োজন করে। পরে সেখান থেকে একটি সচেতনতা র্যালি বের হয়ে পর্যটন নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে এবং সমুদ্র তীরে মানববন্ধনের মধ্য দিয়ে কর্মসূচির সমাপ্তি ঘটে।
ইউনিসেফ বাংলাদেশ’র সহায়তায় আয়োজিত এই কর্মসূচিতে কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশের এসপি মো. আবুল কালাম আজাদ, কুয়াকাটা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো. হোসাইন আমির, ইয়ুথনেট গ্লোবালের পটুয়াখালী জেলা সমন্বয়ক মো. জাহিদুল ইসলামসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
আয়োজকরা জানান, সিসা একটি অত্যন্ত বিষাক্ত ধাতু, যা শিশুদের মস্তিষ্কের বিকাশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। বাংলাদেশে প্রায় ৬০ শতাংশ শিশু সিসার বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত, যার ফলে শিশুদের বুদ্ধিমত্তা হ্রাস, পড়াশোনায় পিছিয়ে পড়া এবং শারীরিক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এছাড়া গর্ভবতী নারীদের ক্ষেত্রেও সিসার ক্ষতিকর প্রভাব রয়েছে। অনিরাপদে সিসা ব্যাটারি ভাঙা এবং পুনর্ব্যবহার যোগ্য কারখানাগুলো থেকে ব্যাপক হারে সিসা দূষণ ছড়াচ্ছে।
এসময় মানববন্ধনে সিসা দূষণ প্রতিরোধে ৫ দফা দাবি তুলে ধরা হয়:
1. ভোগ্যপণ্য ও নিত্য ব্যবহৃত পণ্যে সিসার মিশ্রণ বন্ধ করা।
2. পণ্যের নিরাপদ মানদণ্ড ও কঠোর মনিটরিং নিশ্চিত করা।
3. দেশের বিভিন্ন স্থানে অনিরাপদ সিসা ব্যাটারি কারখানা বন্ধ করে নিরাপদ রিসাইক্লিং ব্যবস্থা গড়ে তোলা।
4. দূষিত এলাকাগুলো মনিটরিং করে পরিষ্কার রাখার পদক্ষেপ নেওয়া।
5. সিসা দূষণ প্রতিরোধে আইন পর্যালোচনা ও জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা।
ইয়ুথনেট গ্লোবালের জেলা সমন্বয়ক মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, “সিসা দূষণ দূরীকরণে সকলকে সচেতন করাই আমাদের লক্ষ্য। আমরা যুব সমাজের প্রতিনিধিরা সরকারের কাছে কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।”