পরিমিত খাওয়া দরকার আমরা সবাই বুঝি। কিন্তু ঘন ঘন ক্ষুধা লাগে। ফলে বেশি খাওয়া হয়ে যায়। এখন নিয়ন্ত্রণের উপায় কী?
ক্ষুধা লাগলে অবশ্যই খেতে হবে। ক্ষুধার্ত অবস্থায় না খেয়ে থাকা যাবে না। তবে এই ছয়টি কারণ জানলে অকারণ ক্ষুধা লাগা বন্ধ হবে ইনশাআল্লাহ।
১. পিপাসার জন্য ক্ষুধা
আমরা দুইটা বাজে অভ্যাস করে ফেলেছি। এক- পানি কম খাই, দুই- পানিসমৃদ্ধ ফল ও সবজি কম খাই। উল্টো যেসব ফাস্টফুড খাই তাতে পানি থাকে না বললেই চলে। তাই শরীরে পানির অভাব দেখা দিলেই ক্ষুধা লাগে, যাতে শরীর একটু পানি পায়।
সমাধান- পর্যাপ্ত পানি পান করলে অপ্রয়োজনীয় ক্ষুধা লাগবে না।
২. পুষ্টির অভাবে ক্ষুধা
যেহেতু পুষ্টিসমৃদ্ধ ফল ও সবজি কম খাই তাই শরীরে পুষ্টির অভাব দেখা দেয়। শরীর তো পুষ্টি তৈরি করতে পারে না। শরীরে পুষ্টির উৎস হচ্ছে খাবার। তাই ক্ষুধা লাগে। কিন্তু পুষ্টিকর খাবার না খেয়ে যদি চকলেট, চিপস, আইসক্রিম, বিরিয়ানি ইত্যাদি খাই তাহলে পুষ্টির অভাব থেকেই গেল।
সমাধান- খাবার তালিকায় পুষ্টিসমৃদ্ধ ফল ও সবজি রাখলে বারে বারে ক্ষুধা লাগবে না।
৩. বৈচিত্র্যের অভাবে ক্ষুধা
জীবনটাকে বড়ই একঘেয়ে করে ফেলেছি। ডেইলি একই রুটিন। অথচ মানুষের মন বৈচিত্র্য তালাশ করে। কিন্তু পায় না। এজন্য ঘুরে ফিরে ক্ষুধা লাগে। খাবার খেয়ে একঘেয়েমি দূর করার চেষ্টা করি। অফিসে চা-কফি মূলত একঘেয়েমি দূর করে।
সমাধান- একঘেয়েমি দূর করার অন্য উপায় খুঁজে বের করতে হবে। যেমন- গল্প করা, একটু হেঁটে আসা, টিভি দেখা, পত্রিকা পড়া, মোবাইলে পরিবারের সাথে কথা বলা ইত্যাদি।
৪. শরীরে সুগার কমে যাওয়ার ক্ষুধা
আমরা সুগার বার্ন করে চলি। শরীরে প্রচুর চর্বি থাকলেও চর্বি বার্ন করে চলা শরীরকে শেখাইনি। ফলে সুগার কমে গেলেই ক্ষুধা লাগে।
সমাধান- প্রতিদিন যে সময়ে ক্ষুধা লাগে তার ৩০ মিনিট আগে হালকা ব্যায়াম করতে হবে। এতে কিছু দিনের মধ্যে ক্ষুধা কমে আসবে। চর্বি বার্ন করতে মূলত দুইটা জিনিস দরকার হয়। এক হচ্ছে- ব্যায়াম, দুই হচ্ছে- সুগার ফ্রি খাওয়া। এই দুইটার সমন্বয়ে চর্বি বার্ন হওয়া শুরু হয়।
সুগার ফ্রি মানে চিনি ছাড়া চা-কফি খেতে হবে। কেউ কেউ জিরো-ক্যাল খেয়ে থাকেন। এটা আরও ক্ষতিকর। শরীরে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
৫. খালি পেটের ক্ষুধা
পেট খালি থাকলেই আমরা খেতে চাই। আমাদের পাকস্থলি আমাদের প্রত্যেকের মুষ্টিবদ্ধ কবজির সমান। কিন্তু পাকস্থলির বিশেষ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে- এটা বেলুনের মতো ফুলতে পারে। অতিরিক্ত খেতে খেতে আমাদের পাকস্থলির আকার বড় হয়েগেছে।
সমাধান- পেট খালি থাকা আর ক্ষুধা লাগা দুটো ভিন্ন বিষয়। মূলত ক্ষুধা লাগলে খেতে হবে।
৬. আবেগের ক্ষুধা
মন খারাপ থাকলে আমরা আইসক্রিম, চা-কফি, ফাস্টফুড খেয়ে থাকি। আবার মন ভালো থাকলেও এগুলো খাই। এটা আমাদের কালচারে মিশে গেছে।
ফলে যেকোনো সেলিব্রেশনে খাওয়াটাই আমাদের কাছে মূখ্য। দাওয়াতে গেলে, ভালো রেজাল্ট করলে মিষ্টি নিতেই হবে। ঘুরতে গেলে আমাদের প্রধান আগ্রহ থাকে কী খাবো। সবাই মিলে বেড়ানো, গল্প করা, খেলাধুলা করা, প্রকৃতি দেখা ইত্যাদির মাধ্যমে আমরা সেলিব্রেশন করতে পারি না।
সামধান- বেড়াতে গিয়ে অবশ্যই আমরা কিছু খাবো। তবে সেলিব্রেশনের অন্য উপায়ে ফোকাস করতে হবে। যেমন- প্রকৃতি দেখা, ঘুরাঘুরির মজা, এডভেঞ্জার ইত্যাদি।
ব্যবসায়ী Eric Edmeades এর লেকচার অবলম্বনে ফিচারটি লিখেছেন লতিফুর রহমান। এরিকের Wildfit নামেস্বাস্থ্যবিষয়ক কোর্স রয়েছে।