জীবনে সুখ-দুঃখ আসে পালাক্রমে। সুখের মুহূর্তগুলো দ্রুত কেটে গেলেও ভয়ের বা খারাপ অভিজ্ঞতাগুলো দীর্ঘ সময় ধরে মনে থেকে যায়। এমনটি কেন ঘটে, তা নিয়ে গবেষণা চালিয়েছেন তুলেন ইউনিভার্সিটি স্কুল অব সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং এবং টাফটস ইউনিভার্সিটি স্কুল অব মেডিসিনের গবেষকরা।
তাদের গবেষণায় উঠে এসেছে, মস্তিষ্কের সংবেদনশীল কেন্দ্র অ্যামিগডালার একটি বিশেষ প্রক্রিয়া এর জন্য দায়ী। বিশেষত, ভয়াবহ ঘটনার সময় স্ট্রেস নিউরোট্রান্সমিটার নরপাইনফ্রাইন অ্যামিগডালাকে উদ্দীপিত করে। এতে মস্তিষ্কে বৈদ্যুতিক স্রাবের বিশেষ একটি প্যাটার্ন তৈরি হয়, যা ভীতিকর স্মৃতি গঠনে সহায়তা করে।
গবেষক দলের সদস্য এবং তুলেন সেল ও আনবিক জীববিজ্ঞানের অধ্যাপক জেফরি টাস্কার এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘যখন কেউ আপনাকে বন্দুকের মুখে আটকে রাখে, তখন মস্তিষ্ক প্রচুর পরিমাণে নরপাইনফ্রাইন নিঃসরণ করে। এটি অ্যামিগডালায় বৈদ্যুতিক নিঃসরণের ধারা পরিবর্তন করে মস্তিষ্ককে উত্তেজিত অবস্থায় স্থানান্তরিত করে।’
তারা আরও জানান, ‘ভয়ানক অভিজ্ঞতার কারণে এই বৈদ্যুতিক পরিবর্তন দীর্ঘ সময় ধরে স্থায়ী হয়। এর ফলেই ভয়ের স্মৃতি সহজে ভুলে যাওয়া সম্ভব হয় না। সুখের মুহূর্তগুলো এমন বৈদ্যুতিক উত্তেজনা সৃষ্টি করে না, তাই সেগুলো মস্তিষ্কে দীর্ঘস্থায়ী হয় না।’
গবেষণাটি আমাদের মস্তিষ্কের কর্মপদ্ধতি এবং স্মৃতির কার্যপ্রক্রিয়া সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে। ভয়ের স্মৃতিগুলো ভুলতে না পারার মূল কারণ এটি।
—