কৈশোরকাল অভিভাবকত্বের সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং সময়। এই সময় একসময়ের স্নেহপূর্ণ শিশুটি আচমকাই খিটখিটে মেজাজের, বিদ্রোহী কিংবা দূরে সরে যাওয়া বলে মনে হতে পারে। বাবা-মা এই পরিবর্তনে দ্বিধায় পড়েন এবং সন্তানের সঙ্গে কীভাবে সংযোগ স্থাপন করবেন তা বুঝতে পারেন না। অন্যদিকে, কিশোর-কিশোরীরাও তাদের ক্রমবর্ধমান স্বাধীনতা, বন্ধুদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা এবং মানসিক পরিবর্তনের ভারে দিশেহারা থাকে। এই সময়ে মা-বাবার দায়িত্ব সন্তানকে বুঝে, সমর্থন দিয়ে তার পাশে থাকা।
বেশি শুনুন, কম বলুন
সন্তানের সঙ্গে কথা বলার আগে, কথা বলার সময় এবং পরে তাকে মনোযোগ দিয়ে শুনুন। কিশোর-কিশোরীরা প্রায়ই বেশি উপদেশ পায়, যা তাদের বিরক্ত করে। অপ্রয়োজনীয় কথা কমিয়ে তাদের কথা শোনার অভ্যাস গড়ে তুলুন। এতে সন্তানের প্রতি আপনার সম্মান ও আস্থা প্রকাশ পায়। ফলে সে নিজের ভাবনা মন খুলে বলতে শুরু করবে।
কথার আক্ষরিক অর্থ ধরবেন না
কৈশোরে সন্তানেরা অনেক সময় নাটকীয় বা আঘাতমূলক ভাষা ব্যবহার করে। যেমন, “আমি তোমাকে ঘৃণা করি” বা “সবকিছু শেষ করে দেব।” এসব কথা তাদের হতাশার প্রকাশ এবং তা গুরুতরভাবে নেওয়ার দরকার নেই। বরং তার আবেগ স্থির হতে দিন এবং অযথা তর্ক এড়িয়ে যান।
সমর্থন দিন
এই বয়সে সন্তান তার শখ, বন্ধুত্ব ও জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে। তার পছন্দগুলো অদ্ভুত বা অস্থির মনে হতে পারে। তবুও এই অন্বেষণ তার পরিচয় তৈরির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। সীমা নির্ধারণের পাশাপাশি, তার নতুন উদ্যোগগুলোকে উৎসাহ দিন। এতে তার আত্মবিশ্বাস ও স্বাধীনতা বৃদ্ধি পাবে।
স্বাধীনতা ও সীমানা স্পষ্ট করুন
কিশোর-কিশোরীরা স্বাধীনতা চায়, তবে নিয়ন্ত্রণেরও প্রয়োজন। তাকে ছোট বিষয়গুলোতে স্বাধীনতা দিন, যেমন—পোশাক নির্বাচন। তবে বয়সের আগে ড্রাইভিং বা অপব্যবহার করার সুযোগ দেবেন না। সঠিক ভারসাম্য রক্ষা করলে সন্তান আপনার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবে এবং নিরাপত্তার সুরক্ষাও বজায় থাকবে।
কৈশোরে সন্তানের সঙ্গে সম্পর্ক দৃঢ় রাখতে তাকে বোঝা, তার কথা শোনা, এবং সঠিক দিকনির্দেশনা দেওয়াই মূল চাবিকাঠি। অভিভাবকত্বে ধৈর্য এবং ভালোবাসা বজায় রেখে সন্তানের সঙ্গে একটি সুন্দর সম্পর্ক গড়ে তুলুন।
মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম