মো: আল-আমিন (পটুয়াখালী): পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলায় পৌষ-মাঘ মাসে (ডিসেম্বর-জানুয়ারি) থেকেই গাছ কাটছে গাছিরা। পরিশ্রমের তুলনায় লাভ কম ও শুধু নাতীদের জন্য ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন বলে জানান গাছি আবদুর রাজ্জাক।
উপজেলার বাসিন্দা আবদুর রাজ্জাক বলেন, এক সময়ে গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে জীবন জীবিকা পরিচালনা করলেও এখন শুধু নাতীদের জন্যই গাছ কাটি। পরিশ্রমের তুলনায় লাভ খুব কম তবুও ঐতিহ্য ধরে রেখেছি।
তিনি আরো বলেন, গাছের মাথার অংশকে ভালো করে পরিষ্কার করা হয়। নভেম্বর মাসের মাঝামাঝিতে গাছ পরিষ্কার করতে হয়। গাছ পরিষ্কার করার পর ১৫-২০ দিন পর গাছ ছাটতে হয়। ছাটা যে অংশে রস নিঃসরণ হয় সে অংশে চিকন ৭-৮ ইঞ্চি লম্বা বাঁশের কঞ্চি আধা ইঞ্চি ঢুকিয়ে দিতে হয়। কাঠির মধ্যে দিয়ে ফোটায় ফোটায় নির্গত রস গাছে ঝুলানো ছোট বড় হাড়িতে সংগ্রহ করা হয়। গাছ একবার ছাঁটলে ৩-৪ দিন রস সংগ্রহ করা যায় এবং পরবর্তীতে ৩ দিন শুকাতে হয়। এরপর আবার হালকা ছেটে পুনরায় রস সংগ্রহ করা যায়।
ডালবুগঞ্জ ইউনিয়নের গাছি ইদ্রিস মৃধা এই বছর ৭০টির বেশি খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করছেন।
ইদ্রিস বলেন, বছরে ৮০-৯০ হাজার টাকার রস সংগ্রহ করবেন তিনি তবে পরিশ্রমের তুলনায় লাভ খুব কম। এই সময়ে সবচেয়ে বেশি রস পাওয়া যায় সাধারণত ঠান্ডা আবহাওয়া, কুয়াশাচ্ছন্ন পরিবেশে পর্যাপ্ত রস পাওয়া যায় এবং এর স্বাদও ভালো হয়। তাপমাত্রা বাড়লে খেজুর গাছ হতে নির্গত রসের পরিমাণ কম হয় এবং এর সুস্বাধু স্বাদও হারিয়ে যায়।
এদিকে কলাপাড়া উপজেলা মেডিকেল কর্মকর্তা জেইস খান লেলিন বলেন, কাঁচা খেজুরের রস খাওয়ার মাধ্যমে নিপাহ ভাইরাস ছড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে। বিগত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ ভাইরাসে সংক্রমণের আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। তাই এ রস খাওয়ার ক্ষেত্রে সর্তক থাকার পরামর্শ দেন তিনি।