চন্দ্রদ্বীপ নিউজ : বুধবার দিবাগত গভীর রাতে আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার, যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমান পঙ্গু হাসপাতালের সামনে আসেন। তাদের দাবি পূরণের আশ্বাসে সড়ক থেকে হাসপাতালে ফিরতে রাজি হয়েছেন বিক্ষোভকারীরা।
এ সময় উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুর ২টায় সচিবালয়ে আহতদের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে বৈঠক হবে। কীভাবে তাদের পাশে সরকার থাকতে পারে, সে বিষয়ে সেখানে আলোচনা করা হবে।
বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, ‘আমাদের ব্যর্থতা আছে, ভুল আছে। আপনাদের প্রতি আমাদের অনেক অনেক অনেক বেশি দায়িত্বশীল হওয়া উচিত ছিল। আমরা চেষ্টা করেছি। চেষ্টার কোনো ঘাটতি ছিল না। কিন্তু আমরা করতে পারিনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি প্রধান উপদেষ্টার কাছে গিয়েছি। তিনি আন্তরিকতার সঙ্গে বলেছিলেন যে সবার চিকিৎসাসহ যা কিছু দরকার, তা উনি করবেন। আমাদের অবশ্যই ঘাটতি ছিল। আপনাদের এভাবে বসে থাকা আমাদের ভালো লাগছে না। এটি আমাদের জন্যও হৃদয়বিদারক ঘটনা।
এদিন রাত ১২টার দিকে দ্বিতীয় দফায় সেখানে যান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ। তিনি বলেন, আন্দোলনকারীরা যে চারজন উপদেষ্টাকে এখানে আসার দাবি জানিয়েছেন, তাদের মধ্যে দুজন ঢাকার বাইরে, একজন বিদেশে ও আরেকজন ক্যানসারের রোগী। তারা চাইলে সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী এখানে আসতে পারেন। আর তা না হলে বৃহস্পতিবার বেলা ২টা পর্যন্ত সময় দেওয়া যায়, তখন উপদেষ্টাদের সঙ্গে বসা যাবে। উপদেষ্টাদের কাছ থেকে আহত ব্যক্তিদের দাবির বিষয়ে লিখিত নেওয়ার কথা বলেন তিনি।
এ সময় আহত আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে একজন বলেন, ‘আমরা হাসনাত ভাইয়ের সঙ্গে একমত। কালকে চার উপদেষ্টা আসা পর্যন্ত আমরা এখানে অবস্থান করব।’ হাসপাতাল থেকে বিছানাপত্র নিয়ে এসে সবাই সড়কে অবস্থান করবেন বলে ঘোষণা দেন তিনি। এরপর থেকে ক্ষুব্ধ আহতরা বিছানাপত্র নিয়ে এসে পঙ্গু হাসপাতালের সামনের সড়কে অবস্থান নেন।
ঘটনার শুরু বেলা সাড়ে ১১টার দিকে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম বাংলাদেশে ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুককে সঙ্গে নিয়ে পঙ্গু হাসপাতাল পরিদর্শনে যাওয়ার পর। তারা চতুর্থ তলার পুরুষ ওয়ার্ড প্রায় এক ঘণ্টারও বেশি সময় ঘুরে দেখেন এবং রোগীদের সঙ্গে কথা বলেন। এক পর্যায়ে তারা চলে যেতে চাইলে তিন তলার ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীনদের দেখতে না যাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন গণআন্দোলনে আহতরা। পরে নিচে এসে স্বাস্থ্য উপদেষ্টার গাড়ির সামনে শুয়ে পড়েন কয়েকজন।
হাত, পা, চোখে ব্যান্ডেজ বাঁধা এই রোগীরা হুইলচেয়ারে করে হাসপাতালের সামনের সড়ক অবরোধ করেন। তারা বলেন, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা সবার সঙ্গে দেখা না করা পর্যন্ত রাস্তা ছাড়বেন না। এ ছাড়া ঘোষণার পর এখনও আহত ব্যক্তিদের ১ লাখ করে টাকা না দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা। এর পর অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ও ব্রিটিশ হাইকমিশনার অন্য গাড়িতে করে স্থান ত্যাগ করেন।