শিরোনাম

গাফিলতিতে হারাচ্ছে বলেশ্বর নদীর গতি, বাণিজ্যিক ক্ষতির মুখে স্থানীয়রা

Views: 5

পিরোজপুর জেলার বলেশ্বর নদী একসময় দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক নৌপথ ছিল। এই নদী ঘিরে ঝালকাঠি বন্দর এবং বাখরগঞ্জ দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম ব্যবসাকেন্দ্র হিসেবে গড়ে ওঠে। তবে, বর্তমানে এই নদী তার গতি হারিয়ে ফেলেছে এবং এটি এখন মৃতপ্রায়।

স্থানীয়রা অভিযোগ করছেন, পিরোজপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের গাফিলতি ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোর অবহেলার কারণে বলেশ্বর নদী সংকটের মুখে পড়েছে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে পিরোজপুর শহরের খেয়াঘাট ও তার সংলগ্ন এলাকার নদী তীর সংরক্ষণে তিন কোটি ৮২ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্প শুরু হয়েছিল। কিন্তু সঠিকভাবে ব্লক প্লেসিং না করার কারণে নদীর তীরে এলোমেলো ব্লক ফেলা হয়েছে, যা নদীটির গতিপথে বড় ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে।

এ ব্লকগুলির কারণে নৌযানগুলো নদীর তীরে ভিড়তে পারছে না, ফলে পণ্য পরিবহন বন্ধ হয়ে গেছে। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করছেন যে, ব্লকের কারণে তাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রমে ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। একজন স্থানীয় ব্যবসায়ী আসাদুজ্জামান খান আসাদ বলেন, “ব্লকের কারণে নদীর পাড়ে পণ্যবাহী নৌযান ভিড়তে পারে না। এ পরিস্থিতিতে আমরা খুবই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।”

এছাড়াও, নদীর মাঝখানে জেগে ওঠা চরগুলোও অবৈধভাবে দখল করা হচ্ছে। এসব চর দখলকারীরা কৃষি জমি ও ব্যক্তিগত স্থাপনা গড়ে তুলছে, যা নদীটির আরও সংকোচন সৃষ্টি করছে।

একজন খেয়া নৌকা মাঝি জগো বলেন, “আগে এই নদীতে বড় বড় কার্গো জাহাজ চলাচল করত, কিন্তু এখন ব্লকগুলোর কারণে আমাদের ছোট নৌকা চালাতেও সমস্যায় পড়ছি। মাঝেমধ্যে নৌকা ব্লকের সঙ্গে আটকে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।”

স্থানীয় বাসিন্দা মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, “যত দ্রুত নদী পুনঃখনন না করা হবে, ততই শহরে জলাবদ্ধতার সমস্যা বাড়বে এবং বসবাসের পরিবেশ আরও খারাপ হয়ে যাবে। বলেশ্বর নদী খনন করা অত্যন্ত জরুরি।”

এ বিষয়ে পিরোজপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী কর্মকর্তা নুসাইর হোসেন বলেন, “আমরা ইতোমধ্যে বলেশ্বর নদীর ৯০ মিটার ড্রেজিংয়ের জন্য খুলনা আঞ্চলিক ড্রেজার অপারেশন বিভাগে লিখিতভাবে জানিয়ে দিয়েছি। ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে নদীর নাব্যতা সংকট দূর হবে এবং এর স্রোতের পরিমাণ বাড়বে।”

মো: তুহিন হোসেন*
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম

image_pdfimage_print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *