বরিশাল অফিস :: ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার শুক্তাগর ইউনিয়নের কাঠিপাড়া আহমদিয়া দাখিল মাদ্রাসায় দাখিল পরীক্ষার একদিন আগেও প্রবেশপত্র হাতে না পেয়ে অঝরে কাঁদছিলো ওই মাদ্রাসার ফারজানা নামে এক শিক্ষার্থী। পরীক্ষা দেয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকায় পাগল ছিলো ওই শিক্ষার্থীসহ তার পরিবার।
কিন্তু চন্দ্রদীপ নিউজে সংবাদ প্রকাশের পড়ে অল্প সময়ের মধ্যে ফারজানা ও তার পরিবারের মুখে হাসি ফোটালো রাজাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা ইয়াসমিন।
বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) ফারজানা চন্দ্রদ্বীপ নিউজ এর রিপোর্টারের কাছে কাছে কেঁদে কেঁদে জানিয়েছিলে পরীক্ষা না দিতে পারলে সে আত্মহত্যা করবে। ফারজানা ও তার পরিবারের অভিযোগ ছিলো, বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) শুরু হবে দাখিল পরীক্ষা। কাঠিপাড়া আহমদিয়া দাখিল মাদ্রাসায় রেগুলার মোট ৬ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। এদের মধ্যে সবাই প্রবেশপত্র হাতে পেয়েছে শুধুমাত্র ফারজানা ছাড়া। প্রবেশপত্র না পাওয়ার কারণ জানতে চাইলে মাদ্রাসা সুপার জহিরুদ্দিন কামাল ও অফিস সহায়ক কবির ফারজানাকে বলে তোমার ফরম ফিলাপের টাকা আমরা ফেরত দিবো নয়তো আগামী বছর তুমি পরীক্ষা দিলে তোমাকে আর কোনো টাকা দিতে হবেনা।
এ বিষয়ে ফারজানার ভাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগ পেয়ে বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১ টায় সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাদ্রাসায় সুপারসহ ওই প্রতিষ্ঠানে মোট ১৯ জন শিক্ষক কর্মচারী থাকলেও শিক্ষার্থীর উপস্থিতি ১০ থেকে ১৫ জন। মাদ্রাসার শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যেও চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
এদিকে ফারজানার ভাইয়ের কাছ থেকে লিখিত অভিযোগ পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারহানা ইয়াসমিন ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোস্তফা আলমের কঠোর হস্তক্ষেপে ঢাকা মাদ্রাসা বোর্ড থেকে মাদ্রাসা সুপার জহিরুদ্দিন কামাল প্রবেশপত্র এনে ১৪ ফেব্রুয়ারি রাতে ফারজানার হাতে তুলে দেয়। আর প্রবেশপত্র হাতে পেয়ে ১৫ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়া পরীক্ষায় অংশ নেয় ফারজানা।
ফারজানার ভাই শাওন জানান, আমার বোন ১৫ ফেব্রুয়ারি রাজাপুর ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্র থেকে পরীক্ষা দিয়েছে। তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ও সাংবাদিকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তার বোন ফারজানার জন্য দোয়া চান।
রাজাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারহানা ইয়াসমিন জানান, সাংবাদিকদের মাধ্যমে একটি চন্দ্রদীপ নিউজের মাধ্যমেও অভিযোগ পেয়ে ওই মাদ্রাসার সুপারকে দ্রুত এই সমস্যা সমাধান করে ফারজানার হাতে প্রবেশপত্র পৌঁছে দিতে বলি। ১৪ ফেব্রুয়ারি রাতে প্রবেশপত্র হাতে পায় ফারজানা। প্রবেশপত্র হাতে পেয়ে ১৫ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়া পরীক্ষায় অংশ নেয় ফারজানা।