ভোলার খায়ের হাট ৩০ শয্যা হাসপাতাল বর্তমানে নানা সংকটের মুখে। চিকিৎসক ও নার্সের অভাবে ব্যাপকভাবে ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসা সেবা। প্রায় দেড় মাস ধরে রোগী ভর্তি বন্ধ রয়েছে এবং হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় পরীক্ষার যন্ত্রাংশও নেই। এমন পরিস্থিতিতে, জরুরি বিভাগেও সামান্য সমস্যা ছাড়া সেবা দেওয়া হচ্ছে না।
খায়ের হাট হাসপাতালটি তিনটি উপজেলার মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত, যেখানে পাঁচটি ইউনিয়নের প্রায় দেড় লাখ মানুষ চিকিৎসা সেবা পাওয়ার কথা। কিন্তু অভাবনীয় চিকিৎসক সংকট এবং অবকাঠামোগত দুর্বলতার কারণে তাদের সেবা পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে, রোগীদের ভোলা সদর হাসপাতাল কিংবা বরিশাল যেতে বাধ্য হতে হচ্ছে, যা তাদের জন্য একাধিক ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, বর্তমানে হাসপাতালে একটি ডেন্টাল সার্জন ও একটি মেডিকেল অফিসার কাজ করছেন, তবে তিনি দিনের কয়েক ঘণ্টা ছাড়া অন্যান্য সময় বহির্বিভাগে সামান্য রোগীই দেখেন। প্রায় দেড় মাস ধরে রোগী ভর্তি বন্ধ থাকায়, অনেক রোগী চিকিৎসার জন্য দীর্ঘ পথে চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছেন।
রোগী ও স্বজনরা জানান, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অভাবে তারা সঠিক চিকিৎসা পাচ্ছেন না। উদাহরণস্বরূপ, শিশুদের চিকিৎসার জন্য এখানে কোনো বিশেষজ্ঞ নেই। এক রোগী জানান, বুকে ও কোমরে ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে আসলে চিকিৎসক এক্সরে করার পরামর্শ দেন, কিন্তু যন্ত্রাংশের অভাবে তাকে ভোলা সদর হাসপাতালে যেতে বলা হয়।
এছাড়া, হাসপাতালের জরুরি বিভাগে সামান্য রোগও চিকিৎসা পাচ্ছে না, যার ফলে আশেপাশের গ্রামের মানুষের ভোগান্তি বৃদ্ধি পাচ্ছে। রোগীদের অভিযোগ, তাদের চিকিৎসা নেওয়ার জন্য ২০ কিলোমিটার দূরে ভোলা সদর হাসপাতালে যেতে হচ্ছে, যা অত্যন্ত কষ্টকর।
হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক, ডেন্টাল সার্জন ডা. আরেফিন রশীদ জানান, হাসপাতালটির চিকিৎসক ও নার্সের ঘাটতি মেটাতে কর্তৃপক্ষকে বারবার জানানো হলেও সমস্যার সমাধান হয়নি। বর্তমানে ৫৩টি পদে মাত্র ১৫ জন কর্মী রয়েছেন, ফলে চিকিৎসা সেবা প্রদান কঠিন হয়ে পড়েছে।
ভোলা সিভিল সার্জন ডা. মো. মনিরুল ইসলাম জানান, সমস্যা সমাধানে ইতোমধ্যে কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে অবহিত করা হয়েছে এবং একজন নতুন চিকিৎসক দেওয়া হলেও তিনি এখনও যোগদান করেননি। কর্তৃপক্ষ দ্রুত এই সমস্যা সমাধানে কাজ করছে এবং হাসপাতালের কার্যক্রম স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে।
মো: তুহিন হোসেন,
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম