ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম রয়টার্সের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, বৈশ্বিক সামুদ্রিক শিল্পে আধিপত্য বিস্তার করতে চীনের অনৈতিক কার্যকলাপের বিরুদ্ধে নতুন পদক্ষেপ নিতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। চীন যে ধরনের অর্থনৈতিক সহায়তা, প্রযুক্তি হস্তান্তরের চাপ এবং মেধাস্বত্ব চুরির মাধ্যমে জাহাজ নির্মাণ শিল্পে প্রভাব বিস্তার করছে, তা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
২০২৪ সালের এপ্রিলে মার্কিন ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভ (ইউএসটিআর) ক্যাথরিন টাই-এর অধীনে শুরু হওয়া তদন্তে চীনের শিপ বিল্ডিং শিল্পে ত্বরান্বিত অগ্রগতি এবং মার্কিন শিল্পের ওপর এর প্রভাব নিয়ে বিস্তারিত তথ্য উঠে এসেছে। ২০০০ সালে বৈশ্বিক ১৫০ বিলিয়ন ডলারের শিপ বিল্ডিং বাজারে চীনের শেয়ার ছিল মাত্র ৫ শতাংশ, যা বর্তমানে ৫০ শতাংশে পৌঁছেছে। একই সময়ে, দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানও শক্তিশালী বিকল্প হিসেবে উঠে এসেছে।
এদিকে, চীনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগের মধ্যে রয়েছে, শ্রমিকদের মজুরি কৃত্রিমভাবে কমিয়ে রাখা, বিদেশি কোম্পানির জন্য অযৌক্তিক বাধা সৃষ্টি এবং প্রযুক্তি হস্তান্তর নিয়ে চাপ সৃষ্টি করা। এই পরিস্থিতি মার্কিন শিল্পের জন্য একটি বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে, যার ফলস্বরূপ যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক আরোপ বা পোর্ট ফি বৃদ্ধি করতে পারে।
অন্যদিকে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন এবং নির্বাচনী দল চীনকে নিয়ে আরও কঠোর পদক্ষেপের পক্ষে। এর আগে, ট্রাম্প প্রশাসন চীনা পণ্যের ওপর হাজার হাজার কোটি ডলারের শুল্ক আরোপ করেছিল। বর্তমান পরিস্থিতি এবং চীনা পণ্যের ওপর আরও শুল্ক আরোপের সম্ভাবনা নিয়ে শংকা প্রকাশ করা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের জন্য এই শিপ বিল্ডিং শিল্প পুনর্গঠন করতে কয়েক দশক এবং বিলিয়ন ডলার খরচ হতে পারে, এবং বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এটি একটি দীর্ঘমেয়াদী প্রক্রিয়া হতে চলেছে। বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করেন, যুক্তরাষ্ট্রে জাহাজ নির্মাণের বেসরকারি ও সরকারি কারখানাগুলোর সংখ্যা বর্তমানে অত্যন্ত সীমিত, এবং এই শিল্পকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য কার্যকর পদক্ষেপের প্রয়োজন।
এছাড়া, ট্রাম্প প্রশাসনের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজ ও ডেমোক্র্যাট সিনেটর মার্ক কেলি সহ বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ একত্রে কাজ করছেন যাতে মার্কিন জাহাজ নির্মাণশিল্পের পুনর্গঠন সম্ভব হয়।
মো: তুহিন হোসেন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম