চোখ মানবদেহের সবচেয়ে সংবেদনশীল অঙ্গগুলোর একটি এবং সঠিকভাবে যত্ন নেয়া অত্যন্ত জরুরি। মাঝে মাঝে আমরা চোখে ব্যথা বা জ্বালাপোড়ার মতো সমস্যা অনুভব করি, যা সাধারণ হলেও উপেক্ষা করা উচিত নয়। চোখে ব্যথা বা জ্বালাপোড়া হওয়ার পেছনে বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে।
চোখের সংক্রমণ
চোখের ব্যথা ও জ্বালাপোড়ার অন্যতম কারণ হলো চোখের সংক্রমণ, যেমন কনজাংটিভাইটিস বা ইউভাইটিস। কনজাংটিভাইটিসের ফলে চোখে লালভাব, ফোলাভাব এবং পানি পড়া হতে পারে। ইউভাইটিস চোখের ভিতরের অংশে প্রদাহ সৃষ্টি করে, যার কারণে চোখে ব্যথা এবং আলোর প্রতি সংবেদনশীলতা দেখা দেয়। এসব সমস্যা দেখা দিলে দ্রুত চক্ষু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেয়া উচিত।
ড্রাই আই (শুষ্ক চোখ)
চোখে আর্দ্রতার অভাব, বা ড্রাই আই একটি সাধারণ সমস্যা। এই অবস্থায় অশ্রু উৎপাদন কম হয় অথবা খুব দ্রুত শুকিয়ে যায়, ফলে চোখে ব্যথা ও জ্বালা হয়। একে এয়ার কন্ডিশনার, হিটিং সিস্টেম বা ডিজিটাল ডিভাইসের দীর্ঘ ব্যবহারও বাড়িয়ে দেয়। ড্রাই আইয়ের চিকিৎসা সাধারণত কৃত্রিম অশ্রু ব্যবহার করে করা হয়, যা চোখকে আর্দ্র রাখে এবং ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
চোখের অ্যালার্জি
ধুলাবালি, পরাগরেণু বা অন্যান্য অ্যালার্জেনের কারণে চোখে জ্বালা, ব্যথা ও চুলকানি হতে পারে। অ্যালার্জির কারণে চোখ লাল ও ফুলে যায়। অ্যালার্জির কারণে যদি আপনার চোখের সমস্যা হয়, তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করা উচিত।
ডিজিটাল আই স্ট্রেন
কম্পিউটার, মোবাইল ফোন, বা ট্যাবলেট ব্যবহারের অতিরিক্ত সময় চোখে শুষ্কতা ও জ্বালাপোড়া সৃষ্টি করতে পারে। একে ডিজিটাল আই স্ট্রেন বলা হয়। এর প্রতিকার হিসেবে প্রতি ২০ মিনিট পর পর ২০ ফুট দূরের কিছুতে ২০ সেকেন্ডের জন্য তাকানো উচিত। এছাড়া স্ক্রিনের আলো কমানো, চোখ আর্দ্র রাখতে নিয়মিত পলক ফেলা এবং ব্লু লাইট চশমা ব্যবহার করাও উপকারী।
গুরুতর সমস্যার সতর্কতা
চোখের ব্যথা বা জ্বালাপোড়া সর্বদা ছোটখাটো সমস্যা নয়। কখনও কখনও এটি গ্লুকোমা বা রেটিনাল ডিস্ট্রফির মতো গুরুতর সমস্যার লক্ষণও হতে পারে। তাই যদি হঠাৎ তীব্র ব্যথা, ঝাপসা দৃষ্টি বা দৃষ্টিশক্তিতে কোনো পরিবর্তন অনুভব করেন, তবে দ্রুত একজন চক্ষু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম