পটুয়াখালী প্রতিনিধি : যুবককে পিটিয়ে জখম করে টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগে পটুয়াখালী জেলা ছাত্রলীগের নেতা মো. মেহেদী হাসান বাদলের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার পটুয়াখালী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি করেন মো. সুমন হোসেন নামে ওই ভুক্তভোগী। মামলায় বাদলের সহযোগী মো. সজিব হাসান সূর্য ও সিয়াম হোসেন আবিদসহ অজ্ঞাত আরও পাঁচ-ছয়জনকে আসামি করা হয়েছে।
‘বাদীপক্ষের আইনজীবী মাকছুদুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে পটুয়াখালী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) তদন্তের দায়িত্ব দেন।’
অভিযুক্ত মেহেদী হাসান বাদল পটুয়াখালী শহরের একতা সড়ক এলাকার ব্যাপারী বাড়ির ফারুক মেকারের ছেলে। বর্তমানে তিনি জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।
এর আগে ২১ ফেব্রুয়ারি রাত ৯টার দিকে শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে ভুক্তভোগী যুবককে মারধর করে জখম করা হয়। এ সময় আহত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায় স্থানীয়রা।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, মো. সুমন হোসেন (ভুক্তভোগী) দীর্ঘদিন বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক দুস্থ প্রতিবন্ধী সোসাইটি সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে নানা রকম সামাজিক কর্মকাণ্ড করে আসছেন। তবে আসামি মো. মেহেদী হাসান বাদলের সঙ্গে তাঁর পূর্ববিরোধ থাকায় বিভিন্ন সময় তাঁকে মারধর কিংবা হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছিল।
এ অবস্থায় ২১ ফেব্রুয়ারি শহীদ মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে সন্ধ্যায় শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে স্থানীয় শিশু সংগঠন খেলাঘর আসর। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষে রাত ৯টার দিকে মো. সুমন হোসেন শহীদ মিনারের সামনে ঝাউতলা সড়কে আসলে জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মেহেদী হাসান বাদল এবং তাঁর সহযোগী মো. সজিব ও সিয়াম হোসেন আবিদসহ কয়েকজন তার ওপর রড–লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালায়। এ সময় তাঁর গলায় থাকা ১ ভরি স্বর্ণের চেইন এবং সুমনের সঙ্গে থাকা অপর ব্যক্তি সাঈদ শিকদারের পকেট থেকে সাত হাজার টাকা নিয়ে দৌড়ে পালায় মেহেদী হাসান বাদল ও তাঁর সহযোগীরা। পরে স্থানীয়রা এসে সুমন হোসেনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ভুক্তভোগী সুমন হোসেন বলেন, ‘আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমার ওপরে (নাতি বাদল) যেভাবে অতর্কিত হামলা চালিয়ে জখম করেছে, আমি তার বিচার চাই। আমাকে সে (মো. মেহেদী হাসান বাদল) প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছে, আমি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে আমার প্রাণের নিরাপত্তা চাই।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান আরিফ বলেন, ‘মামলার বিষয়ে আমরা এখন পর্যন্ত কিছু জানি না। ছাত্রলীগ কখনো মাদকাসক্ত, চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয় না। আর এই ঘটনার যদি সত্যতা পাওয়া যায়, তাহলে কেন্দ্রীয় সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের নির্দেশক্রমে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’