শিরোনাম

টানা বৃষ্টিতে বরিশালে জনজীবন বিপর্যস্ত, কীর্তনখোলা নদীর পাড়ে বাঁধ নির্মাণের দাবি

Views: 61

এস এল টি তুহিন (বরিশাল): পূর্ণিমার জোয়ার ও উজানের ঢলে দক্ষিণাঞ্চলের নদ-নদীর পানির প্রবাহ বিপদসীমা অতিক্রম করেছে। নদীর তীরবর্তী জনপদ ও চরাঞ্চল দুই-তিন ফুট পানির নিচে তলিয়ে গেছে। জোয়ারের সময় পানিতে তলিয়ে গেলেও ভাটায় নেমে যাচ্ছে। জোয়ারের ৩-৪ ঘণ্টা পর ভাটার সময় আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে। খানিক সময়ের জন্য হলেও দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে নদীর তীরবর্তী ও নিচু এলাকায় বসবাস করা মানুষদের।

বরিশাল নগরীর স্থান বাসিন্দারা  জানান, জোয়ারের পানিতে তাদের ঘরে পানি ঢুকছে, রাস্তা ঘাট ডুবে যাচ্ছে। এতে চলাচলের যোগ্য সড়ক ও ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সোমবার বিকেলের পর কীর্তনখোলার পানিতে বরিশাল নগরী ও নিচু এলাকাগুলো প্লাবিত হয়েছে।

বিকেল থেকে বরিশাল নগরীর রসুলপুর, পলাশপুর ৩, ৭, ৮ নম্বর, ভাটিখানা, সাগরদী, ধান গবেষণা রোড, জিয়ানগর, ব্যাপ্টিস্ট মিশন রোড, স্টেডিয়াম কলোনি নগরীর সদর রোড, নগরীর মাইনুল হাসান সড়ক, বগুড়া রোডের একাংশ, বটতলার একাংশ, আমির কুটির জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যায়।

বরিশাল নগরীর  ৫নং ওয়ার্ডের পলাশপুর এলাকার বাসিন্দা সামীম হোসেন জনি বলেন, চারদিন ধরে বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত তিন ফুটের বেশি উচ্চতায় পানি থাকে। দুটি ওয়ার্ডের তিন কিলোমিটারের এলাকাবাসী এ পানিতে জিম্মি। কিন্তু একজন জনপ্রতিনিধিকে দেখলাম না খবর নিতে।

এদিকে পানিতে প্লাবিত থাকে ১২ নম্বর ওয়ার্ডের খ্রিস্টান পাড়া ও ত্রিশ গোডাউন এবং ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের চরআইচা খেয়াঘাট, জিয়ানগর, পূর্ব রূপাতলী ও পাকার মাথা।

বরিশাল নগরীর বটতলার এলাকার বাসিন্দা হেমন্ত লাল সরকার  বলেন, এ পানি প্রতি বছর উঠছে। বিশেষ করে বর্ষাকালে বিভিন্ন প্রাকৃতিক সমস্যা সৃষ্টি হলে পানি বেড়ে যায়। এখন কীর্তনখোলা নদীর পানিরস বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার নিচু এলাকা প্রতিদিন ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা পানিতে নিমজ্জিত থাকে। ওই সময় ঘর থেকে বের হতে হলে তিন ফুট পানি অতিক্রম করতে হয়।

বরিশাল নগরীর ধান গবেষণা এলাকার বাসিন্দা আমজেদ আলী হা্ওলাদার বলেন, কীর্তনখোলার পানির উচ্চতা বেড়ে গেলে এ সমস্যা বড় আকার ধারণ করে। তবে প্রতি বছর বর্ষাকালের স্বাভাবিক দিনগুলোতেও পানিতে প্লাবিত হয় ধান গবেষণা এলাকার সড়ক থেকে শুরু করে অলিগলি। পানি সরানোর জন্য ড্রেন নেই। ড্রেন থাকলে এ অবস্থার সৃষ্টি হতো না।

বরিশাল নগরীর নবনির্বাচিত কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন রয়েল বলেন, কীর্তনখোলা নদীর পাড়ে বাঁধ নির্মাণ জরুরি হয়ে পড়েছে। একই সঙ্গে সড়ক উঁচু করে ড্রেন নির্মাণ করে সাগরদী খালের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে।

বরিশাল নগরীর নবনির্বাচিত মেয়র খোকন সেরনিয়াবাত বলেন, শপথ গ্রহণের পর বেশকিছু এলাকা পরিদর্শন করে সমস্যা তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।  স্থানীয় এমপিকে সঙ্গে নিয়ে এ সমস্যার সমাধান করা হবে। যে ওয়াদা করেছি, তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করে নজির স্থাপন করব।

পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী, বরিশাল সদর আসনের এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি জাহিদ ফারুক বলেন, কী কারণে বরিশাল নগরীতে কাজ করতে পারিনি তা গণমাধ্যম কর্মীরা জানেন। তবে এখন নবনির্বাচিত মেয়রকে সঙ্গে নিয়ে নগরীর ভাঙা সড়ক সংস্কার থেকে শুরু করে জলাবদ্ধতা এবং কীর্তনখোলার পানি থেকে নগরবাসীকে রক্ষায় বড় ধরনের কাজ করা হবে। এ জন্য শিগগির সাতটি খাল খনন করা হবে।

image_pdfimage_print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *