জীবনের কোনো না কোনো সময়ে ডিপ্রেশন বা বিষণ্নতায় ভুগতে হয় অনেককেই। তবে দীর্ঘমেয়াদে এ সমস্যা শারীরিক ও মানসিক অসুস্থতা ডেকে আনে। বিশ্বের নানা গবেষণা দেখায়, ডিপ্রেশন যেকোনো বয়স বা শ্রেণির মানুষকে প্রভাবিত করতে পারে। বিশেষ করে নারীরা পুরুষদের তুলনায় এই মানসিক সমস্যায় বেশি ভোগেন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, ডিপ্রেশন অক্ষমতার অন্যতম প্রধান কারণ। এটি শুধু ব্যক্তিগত জীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে না, সামাজিক ও পেশাগত ক্ষেত্রেও এর বিস্তৃত প্রভাব পড়ে।
কেন নারীরা বেশি বিষণ্নতায় আক্রান্ত হন?
বর্তমান যুগে নারীরা মাল্টিটাস্কিংয়ে বেশি যুক্ত। পরিবারের দায়িত্ব, পেশাগত চাপ এবং ব্যক্তিগত চাহিদার মধ্যে ভারসাম্য রাখতে গিয়ে তারা প্রায়ই মানসিকভাবে ক্লান্ত হয়ে পড়েন। বিশ্রামের অভাব, পারিবারিক চাপে নিজের চাহিদা উপেক্ষা করা এবং সর্বদা উৎপাদনশীল থাকার চেষ্টা নারীদের বিষণ্নতার ঝুঁকি বাড়ায়।
তাছাড়া জৈবিক, হরমোনজনিত এবং সামাজিক চাপও নারীদের ডিপ্রেশনের জন্য দায়ী। বিশেষজ্ঞরা বলেন, সন্তান জন্মের পর অনেক নারী পোস্টপার্টাম ডিপ্রেশনে ভোগেন। এছাড়া ক্যারিয়ারে অনিশ্চয়তা বা সামাজিক প্রত্যাশার চাপও বিষণ্নতা সৃষ্টি করে।
ডিপ্রেশনের লক্ষণ
নারীদের মধ্যে ডিপ্রেশনের কিছু সাধারণ লক্ষণ দেখা যায়, যেমন:
অনিদ্রা ও ক্লান্তি
বিরক্তিভাব
ওজন কমে যাওয়া বা বেড়ে যাওয়া
কাজের প্রতি অনাগ্রহ
নেতিবাচক চিন্তা
একাকিত্ব
স্মৃতিশক্তি হ্রাস
ফোকাস করার সমস্যা
খাবারে অরুচি
মেজাজ পরিবর্তন
সমাধানের উপায়
নারীদের ডিপ্রেশন এড়াতে কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে:
1. যোগব্যায়াম ও ধ্যান: মানসিক চাপ কমাতে যোগব্যায়াম ও ধ্যান খুবই কার্যকর। এটি বিষণ্নতা নিরাময়ে বিশেষ ভূমিকা রাখে।
2. বিশেষজ্ঞের পরামর্শ: গুরুতর ডিপ্রেশনের ক্ষেত্রে একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হতে হবে। প্রয়োজনে তাদের পরামর্শ অনুযায়ী অ্যান্টি-ডিপ্রেসেন্ট ওষুধ গ্রহণ করা যেতে পারে।
3. পর্যাপ্ত বিশ্রাম ও সময়ের ব্যবস্থাপনা: নিজের জন্য সময় বের করুন। বিশ্রাম নিন এবং নিজের চাহিদাগুলোকে গুরুত্ব দিন।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নারীদের উচিত ডিপ্রেশনের লক্ষণগুলো চিহ্নিত করা এবং দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া। না হলে এটি আরও জটিল আকার ধারণ করতে পারে।
মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম