ঢাকা-বরিশাল নৌরুটে চলাচলকারী বিলাসবহুল যাত্রীবাহী লঞ্চগুলোতে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি থাকা সত্ত্বেও, লঞ্চ চালক ও অন্যান্য ক্রুদের সেগুলো ব্যবহারের দক্ষতা নেই। প্রশিক্ষণ অভাবের কারণে প্রায়ই এসব লঞ্চ দুর্ঘটনার কবলে পড়ছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বারবার তাগিদ দিলেও, প্রশিক্ষণের কোন ব্যবস্থা নেয়নি বিআইডব্লিউটিএ এবং লঞ্চ মালিকপক্ষ।
ঢাকা-বরিশাল রুটে ১৭০ কিলোমিটার পথের উপর চলাচল করে প্রায় ৩০টি বিলাসবহুল লঞ্চ। এসব লঞ্চে রয়েছে আধুনিক যন্ত্রপাতি যেমন রাডার, ইন্ডিকেটর, রিমোট কন্ট্রোল, ইকো সাউন্ডার, জিপিএস এবং ভিএইচএফ। এই যন্ত্রগুলো নদীপথে দুর্ঘটনা কমাতে সহায়ক হতে পারে, তবে চালকরা এসব প্রযুক্তি ব্যবহারে অদক্ষ।
চালক এবং সুকানিদের অভিযোগ, লঞ্চ পরিচালনার জন্য আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহারে তাঁদের কোনও প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়নি। ফলে এই অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতির বেশিরভাগই ব্যবহৃত হয় না।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) এবং লঞ্চ মালিকদের মধ্যে একে অপরের ওপর দায় চাপানোর ফলে চালক-সুকানিদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার বিষয়ে কোনও কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
সুন্দরবন গ্রুপের ম্যানেজার জাকির হোসেন বলেন, “লঞ্চ চালানোর পদ্ধতি অনেক বদলে গেছে। বৈরি আবহাওয়া ও কুয়াশার কারণে অনেক সময় দুর্ঘটনা ঘটে। মালিকপক্ষ বড় অংকের বিনিয়োগ করে লঞ্চ পরিচালনা করে, কিন্তু বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষের উচিত চালক এবং সুকানিদের প্রতি বছর নিয়মিত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা।”
বরিশাল বিআইডব্লিউটিএর বন্দর ও পরিবহন বিভাগের যুগ্ম-পরিচালক আব্দুর রাজ্জাক জানান, “কুয়াশায় কীভাবে লঞ্চ চালাতে হবে, সে বিষয়ে আমরা আগে থেকেই লঞ্চ মালিকদের জানিয়ে দিয়েছি। কুয়াশায় যদি ১০০ মিটারের মধ্যে কিছু না দেখা যায়, তবে লঞ্চ বন্ধ রাখতে এবং ঘন ঘন হর্ন বাজানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে, সচেতনতার অভাবেই চালকরা এই নির্দেশনা মানছে না। আমাদের মনে হয় মাস্টার ও সুকানিদের প্রশিক্ষণ দেওয়া খুবই জরুরি।”
বরিশাল বিভাগে প্রায় ২০০ চালক এবং সুকানি অদক্ষভাবে বিলাসবহুল লঞ্চ পরিচালনা করছেন, যার ফলে কুয়াশা ও বৈরী আবহাওয়ার কারণে এই রুটে সবচেয়ে বেশি নৌ-দুর্ঘটনা ঘটে থাকে।
মো: তুহিন হোসেন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম