চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ::১৬ জুলাই ২০২৪ তারিখ মঙ্গলবার। সেদিনই বদলে যায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের চিত্র ৷পরেরদিন থেকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ছাত্র-জনতার আন্দোলনে রুপ নেয়।সেদিন রংপুরে পুলিশের গুলিতে নিহত হন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ। সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাকে অভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ হিসেবে দাবি করেন।
ওইদিনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) সহ সারাদেশে বিক্ষোভ করেছিলো সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভের সময় দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে ছাত্রলীগের নেতা- কর্মীরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপরে হামলা চালায়। ঢাবিতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিতে হামলায় বহিরাগতরাও যোগ দেয়।
তাদের নৃশংস হামলায় ঢাবির প্রায় তিন-শতাধিক ছাত্র-ছাত্রী আহত হয়। ওইদিন হাসপালাতে গিয়ে ছাত্র- ছাত্রীদের পেটায় বহিরাগত ছাত্রলীগ।
বরিশাল টাইমস এর কাছে আশা একটি ভিডিওতে দেখা যায়, সেদিন ঢাবি ছাত্র- ছাত্রীদের বেধড়ক পিটিয়ে রক্তাক্ত করেছে পটুয়াখালীর বাউফল পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক পদ প্রত্যাশী জিহাদ আহম্মেদ।
হামলার সময় তার হিংস্রতার দৃশ্য ভিডিওতে স্পষ্ট ফুটে উঠেছে। তার বিরুদ্ধে এখনো কোনো আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের করা হয়নি। জিহাদ আহমেদ বাউফল উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা।
ঢাকায় গ্রীন ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন তিনি। ১৬ জুলাই ঢাবিতে তার কর্মকান্ডের কারণে নিজ ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীরা তাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে। আজ পর্যন্ত তিনি নিজ ক্যাম্পাসে যেতে পারেনি।
বাউফলে ছাত্রলীগের একাংশের সকল সভা সমাবেশে প্রথম কাতারে দেখা যেতো তাকে। বাউফল সরকারি কলেজে অধ্যায়কালেও মারপিটসহ উশৃঙ্খল কর্মকান্ডে জড়িত ছিলেন জিহাদ আহমেদ।
অনলাইন কেসিনো কর্মকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগও আছে তার বিরুদ্ধে। বাউফল উপজেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক মুনতাসীর তাসরিপ বলেন, ঢাবিতে হামলার মধ্য দিয়েই দেশ উত্তপ্ত হয়৷ওই হামলা চালায় ছাত্রলীগ।
বাউফলসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের যে বহিরাগতরা হামলায় জড়িত ছিলো, তাদের শাস্তি নিশ্চিত করতেই হবে। তারা এখনো নানা ভাবে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। তাদের বিচারের মাধ্যমেই স্বাধীন বাংলাদেশ পূর্ণতা পাক।
ছাত্রলীগ নেতা জিহাদ আহম্মেদের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমার কোনো সমস্যা নেই। ঢাকাতেই আছি, নিরাপদে আছি। সেদিন আমরা কয়েকজন ছিলাম।
নিজেদের আত্মরক্ষার জন্য করেছি, নাহলে ওরা আমাদেরকেই মেরে ফেলতো। ইউনিভার্সিটি থেকে ভর্তি বাতিল করেছি, ওখানে যাওয়া নিজের জীবনের রিস্ক তাই যাইনি।চাইলে ক্যাম্পাস কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে পড়তে পারতেন বলেও জানান তিনি। এ বিষয়ে বাউফল থানার ওসি মো. কামাল হোসেন বলেন, যে ঘটনায় আমরা তাকে অভিযুক্ত করবো, সেই ঘটনা আমার থানা এড়িয়ায় হতে হবে।
অন্য থানায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে সেই থানা চাইলে আমরা সহযোগিতা করতে পারি। এছাড়া অন্য ঘটনায় চাইলেও ব্যবস্থা গ্রহণ করার নেই বলে জানান তিনি।
বহিরাগত হয়েও ঢাবি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারী জিহাদ আহম্মেদসহ হামলায় জড়িত সকল সন্ত্রসীদের শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন বাউফল উপজেলার সাধারণ শিক্ষার্থীরা।