২৫ ক্যাডারের কর্মকর্তাদের সংগঠন আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ সামান্য অপরাধে ঢালাওভাবে সাময়িক বরখাস্ত শুরু করার অভিযোগ তুলেছে। তারা জানিয়েছে, যদি এই প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকে, তাহলে চাকরিবিধি অনুসরণ করে বৃহৎ কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন (কেআইবি) মিলনায়তনে ‘জনবান্ধব সিভিল সার্ভিস বিনির্মাণে করণীয়: প্রেক্ষিত বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তারা এই বক্তব্য দেন। সভায় আরও জানানো হয় যে, বর্তমান পরিস্থিতিতে ২৫ ক্যাডারের কর্মকর্তাদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ হচ্ছে, বিশেষত জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের খসড়া সুপারিশের পর এই দ্বন্দ্ব আরো তীব্র হয়েছে।
জানা যায়, গত ১ জানুয়ারি, পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. জাহাঙ্গীর আলম এবং ঢাকায় সংযুক্ত উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম ফেসবুকে আপত্তিকর মন্তব্যের কারণে সাময়িক বরখাস্ত হন। এছাড়া, ২৯ ডিসেম্বর পাঁচ বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তাকে বিধি লঙ্ঘন ও অনৈতিক মন্তব্যের অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ বলছে, রাষ্ট্রের দায়িত্বভার হাতে থাকার পরও সামান্য অপরাধে কর্মকর্তাদের ঢালাওভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হচ্ছে, যা শীঘ্রই একটি বৃহৎ আন্দোলনে পরিণত হতে পারে। তারা জানিয়েছেন, এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে আইন অনুযায়ী বৃহৎ কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। তবে, সরকারের পক্ষ থেকে অনুরোধ থাকায় বড় কর্মসূচি থেকে এই মুহূর্তে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এছাড়া, এক মাসের মধ্যে দেশের বিভিন্ন কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও দপ্তরে মতবিনিময় সভা আয়োজনের পরিকল্পনা করা হয়েছে, যেখানে ভবিষ্যৎ সিভিল সার্ভিসের রূপরেখা নিয়ে আলোচনা করা হবে। একইসঙ্গে জনবান্ধব রাষ্ট্র গঠনে সিভিল সার্ভিস সংস্কারের জন্য সেমিনার ও সিম্পোজিয়ামের মাধ্যমে জনগণের মতামত গ্রহণ করা হবে।
সভায় বক্তারা অভিযোগ করেছেন যে, বর্তমান প্রশাসনিক অনিয়মের কারণে ২৫ ক্যাডারের শীর্ষ পদে পদায়ন করা হচ্ছে না। এছাড়া, একটি ক্যাডারের কর্মকর্তা পদ না থাকা সত্ত্বেও প্রমোশন পাচ্ছেন, আর অন্য ক্যাডারের কর্মকর্তারা পদ থাকা সত্ত্বেও প্রমোশন পাচ্ছেন না—এটি একটি অযৌক্তিক পরিস্থিতি। তারা সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, যাতে এই অনিয়ম দূর করা হয় এবং একটি দক্ষ ও পেশাদার সিভিল সার্ভিস ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়।
এছাড়া, প্রশাসন ক্যাডারের কোটা পদ্ধতি বাতিল করে মেধাভিত্তিক নিয়োগ ব্যবস্থা চালু করার দাবি জানিয়েছেন বক্তারা। তারা বলেছেন, “বৈষম্যহীন ও জনকল্যাণমূলক রাষ্ট্র গঠনের জন্য মেধাভিত্তিক উপসচিব পুল অত্যন্ত জরুরি।”
মো: তুহিন হোসেন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম