পটুয়াখালী প্রতিনিধি :: অতিরিক্ত তাপমাত্রার কারণে নাজেহাল জনজীবন। ঘর থেকে বের হতে পারছেন না সাধারণ মানুষ। শুধু তাই নয় পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় আগত পর্যটকরাও বাতিল করছেন অগ্রিম বুকিং দেওয়া হোটেল-রিসোর্টের কক্ষ। আবার কেউ কেউ কুয়াকাটায় দুই-তিন দিন থাকার জন্য এসে গরমের দাপটে ফিরে যাচ্ছেন একদিন থেকেই। এতে কাঙ্ক্ষিত পর্যটক পাচ্ছেন না পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।
আবহাওয়া অফিস বলছে আরও একসপ্তাহে অপরিবর্তিত থাকতে পারে বর্তমান অবস্থার।
আরো পড়ুন : গলাচিপা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থীদের মনোনয়ন পত্র দাখিল
কুয়াকাটায় থাকা বেশ কয়েকটি হোটেলের সাথে কথা বলে জানা যায়, ঈদ পরবর্তী লম্বা একটি সময় কুয়াকাটাতে পর্যটকদের আগমনে সরগরম থাকে। তবে প্রতি বছরের চেয়ে এই ঈদের পরপরই অসংখ্য পর্যটকদের আগমন থাকলেও হঠাৎ পর্যটকে ভাটা পড়ে। অতিরিক্ত দাবদাহের কারণে আগত পর্যটকরা দ্রুত চলে যাচ্ছেন এবং অগ্রিম বুকিং করা পর্যটকরা পরিবারের শিশু বৃদ্ধদের চিন্তা করে বুকিং বাতিল করছে।
কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ইব্রাহিম ওয়াহিদ জানান, প্রতিটি ঈদের পর আমরা প্রথম সপ্তাহ পুরোপুরি বুকিং পাই, দ্বিতীয় সপ্তাহে ৫০-৭০ শতাংশ বুকিং থাকে এভাবে কমপক্ষে ১৫ দিন আমরা পর্যটকদের সরগরমে ব্যস্ত থাকি। তবে এই ঈদের পর ৩ থেকে ৪ দিন ভালো পর্যটক পেলেও হঠাৎ সেই পর্যটকদের অবস্থা ২০-৩০ শতাংশে নেমে এসেছে। বর্তমানে তাপমাত্রার এমন অবস্থা যে আমাদের নিজেদেরই কষ্ট হয়ে যাচ্ছে, সেখানে পর্যটকদের অবস্থা তো আরো খারাপ।
বরিশাল থেকে বেড়াতে আসা পর্যটক মো. শাহ আলম জানান, আমি তিন সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে কুয়াকাটায় এসেছি। ২-৩ দিন থাকতে চেয়েছি। কিন্তু আজকে একদিন থাকার পর মনে হচ্ছে কালকে আর থাকা হবে না। কারণ সবাই তো আর এসি রুম নিয়ে থাকতে পারে না। আর বেড়াতে এসে সব জায়গায় ঘোরাঘুরি করব তাও হচ্ছে না। এখনও সৈকতের বালুতে বসে আছি আর আইসক্রিম খাচ্ছি।
হোটেল সমুদ্র বাড়ি রিসোর্টের পরিচালক নজরুল ইসলাম সজিব জানান, আমাদের হোটেলে ঈদের পরে বেশ ভালো অগ্রিম বুকিং পেয়ে থাকি। প্রতি বছর ঈদ পরবর্তী এমন সময় হোটেলের প্রায় ৫০-৬০ শতাংশ কক্ষ বুকিং থাকে। কিন্তু এবছর মাত্র ১০ শতাংশ বুকিং আছে। দুই দিন আগে বুকিং দেওয়া ৪টি রুম আজ বাতিল করেছে।
আরো পড়ুন : পর্যটক ও ব্যবসায়ীদের বর্জ্যে নষ্ট হচ্ছে সৈকতের পরিবেশ
ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব কুয়াকাটা (টোয়াক) সেক্রেটারি জেনারেল জহিরুল ইসলাম জানান, ঈদ পরবর্তী সময়কে আমরা পর্যটক মৌসুমের একটি বড় সময় ধরে থাকি। তবে এ বছর মৌসুমে পর্যটক আসা শুরু করলেও অতিরিক্ত তাপমাত্রা সবকিছু এলোমেলো করে দিয়েছে।
কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র আবহাওয়া পর্যবেক্ষক মো. জিল্লুর রহমান জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৬ দশমিক ০ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। গত কয়েকদিন যাবৎ এর আশপাশে অবস্থান করছে তাপমাত্রা। আরো এক সপ্তাহ এই অবস্থা অপরিবর্তিত থাকতে পারে। তাই তাপমাত্রা না কমা পর্যন্ত সকলকে সাবধানে থাকার পরামর্শ।