শিরোনাম

দুই যুগের জটিলতায় অস্থির বরিশালের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিএড ও বিপিএড কলেজ

Views: 3

বরিশালের বিএড এবং বিপিএড কলেজগুলো প্রতিষ্ঠার পর থেকেই নানা জটিলতায় ভুগছে। দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে কলেজ দুটি আর্থিক দুর্নীতি, দালালচক্র এবং নিয়ন্ত্রণের জন্য বিভিন্ন পক্ষের মাঝে দ্বন্দ্বে অস্থির হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে, খন্ডকালীন শিক্ষক মো. ফয়জুল হক মিলন, যিনি রাজনৈতিক প্রভাবের মাধ্যমে কলেজটির নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে শুরু করেন, এর কেন্দ্রবিন্দু বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে, মিলন এসব অভিযোগকে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্র দাবি করে পাল্টা অভিযোগ করেছেন।

১৯৯৮ সালের ২০ মে, বরিশাল শহরের টিটিসি এলাকার রওনক ম্যানশনের একটি কক্ষে কার্যক্রম শুরু করে বরিশাল কলেজ অব এডুকেশন (বিএড) ও কলেজ অব ফিজিক্যাল এডুকেশন (বিপিএড)। প্রতিষ্ঠালগ্নে কলেজের সভাপতি ছিলেন প্রফেসর মো. হানিফ এবং সাধারণ সম্পাদক ছিলেন অধ্যক্ষ গৌড়াঙ্গ চন্দ্র কুন্ডু। কমিটির সদস্য ও হিসাবরক্ষকের দায়িত্ব পালন করছিলেন এ্যাড. আব্দুল খালেক মনা। ২০০০-২০০১ শিক্ষাবর্ষে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে কলেজ দুটি অন্তর্ভুক্তির পর, ২০০১ সালে কলেজ ক্যাম্পাস উত্তর আমানতগঞ্জ এলাকায় স্থানান্তরিত হয়। তবে, এরপর থেকে শুরু হয় কলেজের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে রাজনৈতিক দল ও বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে বিভক্তি।

এ্যাড. আব্দুল খালেক মনা অভিযোগ করেন, কলেজের প্রতিষ্ঠালগ্নে তাকে হিসাবরক্ষক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। ২০০১ সালে খন্ডকালীন শিক্ষক ফয়জুল হক মিলন, বিএনপি সরকারের সময় প্রভাব খাটিয়ে নানা দুর্নীতি শুরু করেন এবং নিজস্ব একটি সিন্ডিকেট গড়ে কলেজের নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে নেন। পরে ২০০১ সালের ৩০ জুন তাকে কলেজ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হলেও, মিলন বিভিন্ন সময় ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আঁতাত করে কলেজের নিয়ন্ত্রণে থাকেন। বর্তমানে, মিলন নিজেকে বিপিএড কলেজের ভারপ্রাপ্ত উপাধ্যক্ষ এবং কখনও আবার অধ্যক্ষ হিসেবে পরিচয় দিচ্ছেন, এমন অভিযোগও উঠেছে।

তবে, ফয়জুল হক মিলন এসব অভিযোগকে অস্বীকার করে বলেন, এসব তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এবং তিনি কখনও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বা উপাধ্যক্ষ বলে পরিচয় দেননি। তার দাবি, আব্দুল খালেক মনা কলেজের শিক্ষক না হয়ে, আওয়ামী লীগ নেতাদের মদদপুষ্ট হয়ে কলেজটির নিয়ন্ত্রণ নিতে চেষ্টা করেছেন।

কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষ কাজী মোক্তার হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে যে, তিনি ফয়জুল হক মিলনের সমর্থনে কলেজের অর্থ আত্মসাৎ এবং সম্পত্তি দখল করার চেষ্টা করেছেন। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে ২০২৪ সালে একটি মামলা দায়ের হলেও, সুষ্ঠু বিচার হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন কলেজের প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য আব্দুল খালেক। গত ১০ জানুয়ারী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একটি তদন্ত দল অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে।

কলেজের এই দীর্ঘস্থায়ী জটিলতা এবং বিতর্কের বিষয়টি শিক্ষার্থীদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। তবে, বিএড কলেজের অধ্যক্ষ লতিফুন্নেছার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে, তার কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

“মো: তুহিন হোসেন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম”

image_pdfimage_print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *