পিঠা, যা শুধু একটি খাবার নয়, বরং এটি বাংলা ও বাঙালির গভীর ঐতিহ্যের অংশ। বছরের বিশেষ কিছু সময়, বিশেষত শীতকালে, পিঠার আয়োজন একটি অপরিহার্য সংস্কৃতির অংশ হয়ে দাঁড়ায়। আধুনিকতার ছোঁয়া পিঠা তৈরির রেওয়াজে কিছুটা ভাটা পড়লেও মৌসুমী পিঠা বিক্রেতাদের প্রচেষ্টায় এটি এখনও বাঙালি ঘরে ঘরে বর্তমান। কুয়াশায় আচ্ছন্ন সকালে কিংবা সন্ধ্যার হিমেল বাতাসে ভাপা পিঠার গরম ধোঁয়া এবং মসলাযুক্ত চিতই পিঠার সুগন্ধ আমাদের মনকে আকর্ষণ করে।
শীত আসতেই পটুয়াখালী জেলার দুমকিতে বিশেষ করে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২য় গেট পির তলা বাজারের মন্টুর দোকানে ভাপা ও চিতই পিঠার বিক্রি বেড়ে গেছে। সন্ধ্যার দিকে, রাস্তার পাশে বসে পিঠা বিক্রি করতে থাকা মন্টু জানান, শীতকাল আসলে তার দোকানে ক্রেতাদের ভিড় বেড়ে যায়। পিঠার দোকানে একদিকে যেমন আড্ডা জমে, তেমনি ক্রেতাদের ব্যস্ততার মধ্যে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এসে পিঠা কেনেন। বিশেষ করে রিকশা চালক, দিনমজুর, শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী—সবই পিঠার স্বাদ নিতে আসছেন। কেউ কেউ বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন পরিবারে খাওয়ার জন্য।
পিঠা বিক্রেতা মিন্টু বলেন, “শীতের মৌসুমে আমাদের দোকানে কাজের চাপ বেড়ে যায়। পিঠা বানানোর পাশাপাশি ক্রেতাদের চাহিদা মেটাতে প্রায় প্রতিদিন ৬টি চুলায় পিঠা তৈরি করতে হয়। বিকেল ৩:৩০ থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত পিঠা তৈরির কাজ চলে।”
এছাড়াও, চিতই এবং ভাপা পিঠার মধ্যে ১০ টাকায় বিক্রি হয় বিভিন্ন ধরণের পিঠা। পিঠা খেতে আসা সিপন হাওলাদার বলেন, “শীতের সময় চিতই, ভাপা পিঠা খেতে সত্যিই ভালো লাগে। গরমের সময় তেমন খাওয়া যায় না, কিন্তু শীতের দিনগুলোতেই পিঠা খাওয়ার মজাই আলাদা।”
পিঠা বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, বর্তমানে পিঠার দোকানগুলোতে বিভিন্ন ধরনের পিঠা বিক্রি হচ্ছে। এর মধ্যে ভাপা, চিতই, বরাপিঠা, ডিম চিতই, ডিম ভাপা এবং পাটিসাপটা রয়েছে। এছাড়া নারকেল গুড় সহ বিভিন্ন ভর্তা দিয়ে পিঠা খাওয়ার মজা আলাদা। শীত যত বাড়বে, পিঠার বিক্রিও ততো বাড়বে।