শিরোনাম

নেছারাবাদে ক্ষুদ্র ঋণে কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে ১৬ হাজার মানুষের

Views: 89

এস এল টি তুহিন,বরিশাল : সরকারের পিষ্ঠপোষকতায় বৈদেশিক মুদ্র অর্জনে সম্ভাবনাময় খাত হতে পারে নেছারাবাদের ফুল চাষ। নেছারাবাদে ক্ষুদ্র ঋণে ফুলের আবাদে কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে প্রায় ১৬ হাজার শ্রমজীবী মানুষের। আর এতে সাবলম্বী হয়ে উপজেলার হাজার হাজার শিক্ষিত যুবক স্কুল/কলেজ পড়-য়া ছেলেরা। বর্হিবিশে^ প্রায় তিন ‘শত বছর আগে ফুলের সুচনা ঘটলেও, এ অঞ্চলে ফুলের বাণিজ্যিক ভাবে আবাদ শুরু হয় প্রায় ১৯৭২ সালের। সারা বছর অনিন্দ্য ফুলের সৌন্দর্যে চাদরে ডাকা স্বরুপকাঠির(নেছারাবাদ) ফুল চাষের আবাদ অঞ্চলগুলো।

পিরোজপুরের স্বরুপকাঠির ছারছীনা, অলেংকারকাঠি, আরামকাঠি, জগন্ন্াৎকাঠি, কুনিহারী,পান্নাল্লাপুর, সুলতানপুর, সঙ্গীতকাঠি, মাহামুদকাঠিসহ চারিদিকে দুই শতাধিক নার্সারিতে হাজারো রংঙের ফুলের সমরাহকে ঘিরে গ্রামকে-গ্রাম। পল্লীর মাঠ জুড়ে ফুটে আছে- কারনেশন, কসমস, প্যানজি, পপি, অর্কিড়, সিলভিয়া, ডালিয়া, গাঁদা, শাপলা, বেলী, গ্লাডিওলাস,গোলাপ, রজনীগন্ধা, টিউলিপ, অ্যাস্টার গোলাপ,কলাবতী, জুই, ডেইজি, ডায়াস্থান, জিনিয়া, চন্দ্রমল্লিকা, পদ্ম,, সূর্যসুখী, স্টারপিটুনিয়া, পপি, অর্কিড়, সিলভিয়া, ভারবেন, লুপিংস, ফ্লক্স, পর্টুলেকা, এন্টিরিনাম লুপিংস, মনিং, ক্যালেন্ডলা, গ্লোরি, সুইটপি, ন্যাস্টারশিয়াম, হলিংকস, জারবেরা,অ্যাজালিয়া, চেরি, বাগান বিলাস, বিডিøং হার্ট, সহ শতাধিকফুল। তবে বিশ্বের পিরোজপুর জেলার নেছারাবাদ (স্বরূপকাঠি) উপজেলা ক্ষুদ্র কুটির শিল্পের জন্য বিখ্যাত হলেও, অনুকূল পরিবেশ থাকায় অর্ধশত বর্ষ আগে বাণিজ্যিকভাবে শুরু হয় এসব ফুলের চাষ। অন্য ফসলের চেয়ে অধিক লাভের আশায় প্রতিদিন বাড়ছে ফুলের আবাদ, বাড়ছে ফুল চাষী, গ্রামকে-গ্রাম ছড়িয়ে পড়ছে ফুলের আবাদ।

সারি-সারি লাল, হলুদ, কমলা আর সাদা রংঙের সমহার দেখার জন্য বিভিন্ন জেলা থেকে দর্শনার্থীরা ছুটে আসে ফুলের মিলন মেলার দর্শনে। ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস, ২ এপ্রিল বাংলা নববর্ষ,২১ ফের্রুয়ারী, ১৬ ডিসেম্বরসহ বিভিন্ন জাতীয় দিবস উৎয্পানে উপলক্ষে চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ও রপ্তানী করা হয় এখানকার ফুল। নেছারাবাদে প্রায় ১৫৩ হেক্টর জমিতে প্রায় দেড় শতাধিক নার্সারিতে ১১ হাজার শ্রমজীবী নারী-পুরুষ ফুল চাষে প্রত্যক্ষ ও পরক্ষ ভাবে আয়ের পথ খুজে পেয়েছেন। এখানকার বসতি চাষীরা অধিক লাভের আশায় ফুলের চাষের আগে প্রায় ৭২-৭৩ বছর ধরে বিভিন্ন ধরনের বনজ, ফলজ ও ঔষুধী গাছের চারার কলম উৎপাদন করে আসছেন।

এসব ঔষধী চারাগুলো ্এখন ফুলচাষের পাশাপাশি বাগানের চারপাশের কান্দিতে ভরা। কার্তিক মাসের প্রথম দিকেই ফুলের বিজ রোপন করা হয়, রোপনের প্রায় ৪০ দিনেই ফুলফোটা শুরু হলেও একটি ফুলের জীবন কাল থাকে ৪-৬দিন। সৌন্দর্য্যরে প্রতীকফুলের জীবনকাল ক্ষীন হলেও বিশ^জুড়ে রাষ্ট্রীয় ও জাতীয় দিবসগুলোতে ফুলের শোভাবর্ধন ছাড়া সম্ভাব হয় না।

কোনো-কোনো ফুলগাছ ফুলফোটার ৪১দিনের মধ্যে গাছটি মরে যায়, আবার অনেক ফুল গাছের জীবনকাল থাকে প্রায় আড়াই বছর। তবে ফুল শুধূ সৌন্দর্য্যরে শোভাবর্ধন করে না এটি দেশের অর্থকারী ফসলও বটে। মৌমাছি ফুল থেকে মধূ সংগ্রহ, ঔষুধী ফুল থেকে ঔষুধ তৈরী, সূর্যমুখী ফুল থেকে সু-গন্ধী তৈল উৎপাদন, টিউলিপ ও অ্যাস্টার ফুল দ্বারা বিভিন্ন ধরনে মূল্যবান সেন্ট তৈরী, সু-গন্ধযুক্ত ফুলের নির্যাস থেকে উন্নতমানের পারফিউম, সেন্ট ও আতর ইত্যাদি তৈরীর প্রায় শতাধিক শিল্পকারখানা দেশে গড়ে উঠায় ৫৫ হাজার শ্রমজীবী মানুষ জীবিকা নির্বাহ করছে।

সারা দেশে ফুল সংশ্লিষ্ট এসব পণ্য বর্হিবিশ্বে রপ্তানি করে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সারা দেশে প্রায় ৪৯ কোটি টাকার সমমুল্যের মুদ্রা অর্জন করছে বলে সংশ্লিষ্ট দপ্তর সুত্রে জানা যায়, এছাড়াও ফুল চাষের মাধ্যমে ফুল চাষী, ফুল বিক্রিতা, ফুল দোকানী, বড় ব্যবসায়ী, রপ্তানী ব্যবসায়ী, ফুল দ্বারা বিভিন্ন শিল্পকারখানার পণ্য উৎপাদনের শ্রমিক সংখ্যাও প্রায় অর্ধলক্ষ।

কৃষি প্রধান দেশ হওয়ায় বাংলাদেশ বৈদেশিক মুদ্র অর্জনের আর একটি সম্ভাবনাময় খাত হতে পারে এই ফুল চাষ। ফুলঅতীত কালে কেবল মানুষের মনের ক্ষুধা মেটালেও আজকের দিনে ফুল থেকে উপর্জিত টাকা দিয়ে অনেকেরই পেটের ক্ষুধা মিটাচ্ছেন।

image_pdfimage_print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *