বরিশাল অফিস :: মায়াভরা চোখের শিশুটির নাম নুসরাত। বয়স মাত্র পাঁচ-ছয় বছর। মিষ্টি ও বিনয়ী স্বভাবের এই শিশুটি প্রতিদিন তার পঙ্গু বাবার চিকিৎসা সংসার চালানোর অর্থ যোগাতে হুইল চেয়ারে বসিয়ে নিয়ে ভিক্ষা করে বেড়ায় বরিশাল শহরের বিভিন্ন জায়গায়।
শনিবার (২ অক্টোবর) দুপুরে বরিশালের জিলা স্কুলের সামনে এমনই এক দৃশ্য দেখে মর্মাহত হন চা দোকানে বসা মানুষজন।
এ সময় শিশুটি অসহায়ভাবে জানায়, আমার বাবা কাজ করতে পারে না। সংসারের খরচ ও বাবার চিকিৎসারখরচ জোগাতে বাধ্য হয়েই ভিক্ষাবৃত্তি করতে হয়।
নুসরাতের বাবা নুরে আলম জানান, ২০১৪ সালে এক সড়ক দুর্ঘটনায় তার পায়ে গুরুতর আঘাত পায়। এরপর পায়ে ইনফেকশন ছড়িয়ে পড়ে, যার কারণে ২০২১ সালে পুরো পা কেটে ফেলতে হয়। এখন তিনি হুইল চেয়ারে চলাচল করেন। বরিশালের কাউনিয়া বিসিক রোডের একটি ভাড়া বাসায় স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে বসবাস করছেন তিনি। নুসরাত তাদের বড় মেয়ে এবং ছোট একটি ছেলে আছে। ভিক্ষা করেই চলছে তাদের সংসার।
বিজ্ঞাপন
প্রতিবেদকের অনুসন্ধানে উঠে আসে আরও করুণ তথ্য। নুরে আলমের পরিবার প্রায় ১০ বছর ধরে কাউনিয়ার একটি ছোট টিনের ঘরে থাকছেন। ঘরভাড়া ৩ হাজার টাকা, এবং লাকড়ির চুলায় রান্না করেন তারা।
নুসরাতের মা কাকলী বেগম জানান, খাদ্য সংকটের কারণে তাদের সন্তানদের সঠিকভাবে শিক্ষাদান করা সম্ভব হচ্ছে না। বিভিন্ন জায়গায় সরকারি সহায়তা চাইলেও তারা এখন পর্যন্ত কোনো সাহায্য পাননি।
পরিবারটির অসহায় অবস্থার কথা জানিয়ে বাড়িওয়ালা রেনু বেগম বলেন, ওরা খুব ভদ্র মানুষ, তবে আমার পক্ষে তাদের সাহায্য করা সম্ভব হচ্ছে না।