মো: আল-আমিন (পটুয়াখালী): পটুয়াখালীতে বাণিজ্যিকভাবে শসার চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। উৎপাদন খরচ কম ও অল্প সময়ে বেশি লাভ হওয়ায় শসা চাষে ঝুঁকছেন উপকূলের কৃষকরা।
খুচরা বিক্রেতারা জানান, সারা বছর শসার চাহিদা থাকে। অন্য সবজির তুলনায় শসার সরবরাহ বেশি। তাই বাজারে শসার দামও অন্য সবজির থেকে কম।
পটুয়াখালীর গলাচিপা এলাকার শসা চাষি আমানুল্লাহ বলেন, ‘শসার বীজ রোপণের আড়াই মাস পরেই ফলন দিতে শুরু করে। পরিকল্পিতভাবে চাষ ও খেতের পরিচর্যা করায় এ বছর ফলন ভালো হয়েছে। এতে উৎপাদন খরচও কম হয়।’
শ্রমিক আনছার মিয়া বলেন, ‘আগে ধান ওঠার পরে অলস সময় পার করতে হতো। তবে শসা চাষের কারণে বর্তমানে প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হয়েছে। শসা চাষের কারণে আমার মতো স্থানীয় অনেক নারী-পুরুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।’
অপর শ্রমিক নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘জমিতে যদি বারো মাস বিভিন্ন প্রকার শাকসবজি চাষাবাদ করা যায় তাহলে আমিও সারা বছর কাজের মধ্য থাকতে পারব। এতে আমাকে আর বেকার বসে থাকতে হবে না।’
কৃষক আনিস মিয়া বলেন, ‘আমাদের এখানে শসার ভালো ফলন হয়ে থাকে। গলাচিপা উপজেলার আমখোলায় ৫ হেক্টর জমিতে শসা চাষ করেছি। এখন পর্যন্ত ৪০ লাখ টাকার শসা বিক্রি করেছি। জমিতে এখন যে পরিমাণ শসা আছে তাতে আরও ৬০ লাখ টাকা বিক্রি করতে পারব।’
পটুয়াখালীর নিউ মার্কেটের পাইকারি ব্যবসায়ী সোবাহান মোল্লা বলেন, ‘বাজারে চাহিদার চেয়ে শসার সরবরাহ বেশি রয়েছে। আমরা নিয়মিত শসা সরবরাহ করতে পারছি। তবে শসার দাম কিছুটা কম রয়েছে। শসার যোগান বেশি থাকায় সামনে বাজার দর কিছুটা কম। তবে শসার বাজার দর সামনে বাড়বে।
নিউ মার্কেট এলাকার সবজি বিক্রেতা মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘সারা বছর শসার চাহিদা রয়েছে। তবে শীতের সময় শসার চাহিদা বেশি থাকে। বর্তমান বাজারে শসার সরবরাহ বেশি তাই দাম কিছুটা কম। সরবরাহ কম থাকলে দাম বেশি থাকে। এতে কৃষক ও বিক্রেতা উভয় লাভবান হয়।’
পটুয়াখালী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক নজরুল ইসলাম বলেন, ‘জেলায় দিন দিন শসা চাষ বাড়ছে। কয়েক বছর আগেও জেলায় ১০ হেক্টর জমিতে শসা আবাদ হতো, চলতি বছর জেলায় ১৬৩ হেক্টর জমিতে শসা আবাদ হয়েছে। জেলায় শসার বাম্পার ফলন হওয়ায় ও বাজারে দাম ভালো দাম পাওয়ায় কৃষকরা শসা চাষে ঝুঁকছেন। আগামী মৌসুমে শসার আবাদ আরও বাড়বে।