পটুয়াখালী প্রতিনিধি :: টানা তিনদিনের ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ ও বৃষ্টির প্রভাব কাটিয়ে শুক্রবার সকালে পটুয়াখালীতে সূর্যের দেখা মিলেছে। সকাল ৭টা ২০ মিনিটে পূর্ব আকাশে সূর্যের উজ্জ্বল কিরণ চারপাশ আলোকিত করে দেয়, যা স্থানীয় জনজীবনে স্বস্তির বার্তা বয়ে এনেছে।
ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’-এর প্রভাবে পটুয়াখালীসহ উপকূলীয় এলাকায় টানা কয়েকদিনের বৃষ্টি ও বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। তবে আজকের এই সোনালি রোদ যেন সব দুর্ভোগ মুছে দিয়েছে। কৃষকদের জন্য এটি আশীর্বাদস্বরূপ, কারণ দীর্ঘ সময় ধরে জমিতে কাজ না করতে পারায় ফসলের ক্ষতির শঙ্কা ছিল।
দুমকির আঙ্গারিয়া উপজেলার কৃষক শহিন হাং (৪৯) বলেন, “তিন দিন ধরে কাজ করতে পারিনি। ফসলের অবস্থা দেখে খুব চিন্তিত ছিলাম। তবে আজকের সূর্যের আলো আমাদের জন্য আশীর্বাদস্বরূপ। শ্রমিকরাও কাজে নেমে গেছে, আশা করি ফসলের ক্ষতি আর হবে না।”
গলাচিপা উপজেলার পানপট্টি গ্রামের কৃষক নজরুল ইসলাম (৫৩) বলেন, “আজকের রোদে আমার জমির ফসল নতুন করে প্রাণ ফিরে পেয়েছে। বন্যায় ধানের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা ছিল, কিন্তু আজকের রোদে সেই চিন্তা দূর হয়েছে। আমরা দ্রুত ফসলের যত্ন নেওয়া শুরু করেছি।”
কলাপাড়া উপজেলার ধানখালী গ্রামের দিনমজুর হালিম আলী বলেন, “আজ সকালে সূর্য দেখে কাজে বের হতে পেরেছি। বন্যার কারণে গত কয়েকদিন কোনো কাজ করতে পারিনি। এই রোদ আমাদের কাজে ফিরিয়ে এনেছে, আমরা আবারও ফসলের মাঠে ফিরেছি।”
পটুয়াখালী আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা রাহাত হোসেন জানান, “আজ সকাল ৭টায় রেকর্ডকৃত তাপমাত্রা ছিল ২৩.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত ২৪ ঘণ্টায় ৭১.২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। তবে আজকের দিনের তাপমাত্রা ১-২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। সামনের দিনগুলোতে আবহাওয়া ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে আসবে এবং কৃষির জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি হবে।”
গত কয়েকদিনের ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ এবং বৃষ্টির প্রভাবে পটুয়াখালীর কৃষিতে যে ক্ষতির আশঙ্কা করা হয়েছিল, আজকের রোদে তা অনেকটাই কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে। কৃষকরা পুনরায় তাদের ক্ষেতে ফিরে কাজ শুরু করেছেন। বিশেষ করে ধানের ক্ষেতে পানির কারণে যে সমস্যা হচ্ছিল, তা রোদে শুকানোর ফলে মিটে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
পটুয়াখালীর বিভিন্ন এলাকায় আজকের সূর্যোদয় কৃষকদের মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার করেছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের পর এমন রোদ কৃষি ও অর্থনীতির জন্য আশীর্বাদ। আবহাওয়ার উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে কৃষির উৎপাদনশীলতা বাড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।