শিরোনাম

পটুয়াখালীতে স্মার্ট ও উন্নত আধুনিক পৌরসভা গড়ার প্রতিশ্রুতি প্রার্থীদের

Views: 57

বরিশাল অফিস :: পটুয়াখালীতে স্মার্ট ও উন্নত আধুনিক পৌরসভা গড়ার প্রতিশ্রুতি প্রার্থীদের সমুদ্র সৈকত কুয়াকাট, পায়রা বন্দর, পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, সাবমেরিন ল্যান্ডিং ষ্টেশনসহ একাধিক মেঘা প্রকল্পের কারণে অধিক গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে পটুয়াখালী জেলা শহর। সেই গুরুত্বপূর্ণ পটুয়াখালী পৌরসভার নির্বাচনের বাকি আর মাত্র ৯ দিন। এরই মধ্যে নির্বাচনকে ঘিরে জমজমাট পৌরসভার বিভিন্ন এলাকা। সকাল থেকে রাত অবধি ব্যস্ত সময় পার করছেন মেয়র, কাউন্সিলর, সংরক্ষিত নারী সদস্য প্রার্থীরা। ভোটারদের স্মার্ট-উন্নত আধুনিক পৌরসভা নির্মাণে নানা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন প্রার্থীরা।

আগামী ৯ মার্চ ৯টি ওয়ার্ডের ২৪টি কেন্দ্রে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ইভিএমএর মাধ্যমে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

পটুয়াখালী পৌরসভার নির্বাচনে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি প্রতীক বরাদ্দ দেওয়ার পর পরই পোস্টারে ছেয়ে গেছে পুরো পৌরসভা। শহরের রাস্তার বিভিন্ন মোড়ে, বাজার ঘাটে ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে দেখা যাচ্ছে এসব পোস্টার। লিফলেট নিয়ে দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত নিজ নিজ প্রার্থীদের পক্ষে এলাকায় ভোট চাইছেন কর্মীরা।

পটুয়াখালী পৌরসভা নির্বাচনে মোট ৬১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বী করছেন। এর মধ্যে মেয়র পদে ৫ জন। সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৪১ ও সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ১৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

মেয়র পদে বর্তমান মেয়র মহিউদ্দিন আহমেদ লড়ছেন জগ প্রতীক নিয়ে। সাবেক মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. মো. শফিকুল ইসলাম লড়ছেন মোবাইল ফোন প্রতীক নিয়ে। এ ছাড়াও বর্তমান মেয়র মহিউদ্দিন আহমেদের বড় ভাই আবুল কালাম আজাদ রেল ইঞ্জিন, পৌর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মো. এনায়েত হোসেন নারিকেল গাছ ও নাসির উদ্দিন খান কম্পিউটার প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

এসব প্রার্থীরা সবাই প্রচারে সন্ত্রাস ও মাদকমুক্ত স্মার্ট-উন্নত আধুনিক পৌরসভা নির্মাণে নানা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। তবে বর্তমান মেয়র মহিউদ্দিন আহমেদ ও সাবেক মেয়র মো. শফিকুল ইসলাম দুজনই পটুয়াখালী পৌরসভার আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছেন। পৌরসভার বর্তমান উন্নয়নের দাবি করে দুজনই প্রচার চালাচ্ছেন।

বর্তমান মেয়র ও প্রার্থী মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘গত পাঁচ বছর আমি পৌরবাসীর পাশে থেকে আমার সাধ্যমতো উন্নয়ন করার চেষ্টা করেছি। পৌরবাসী এরই মধ্যেই উন্নয়নের সুফল ভোগ করতে শুরু করেছে।’

মহিউদ্দিন আহমেদ দাবি করেন, প্রযুক্তির কল্যাণে পটুয়াখালী পৌরসভার গত ৫ বছরের উন্নয়ন সারা দেশসহ দেশের বাইরেও দৃষ্টি আকর্ষিত হয়েছে। আমি পৌরবাসীকে সঙ্গে নিয়ে ঢেলে সাজোনোর চেষ্টায় দিন-রাত এক করে কাজ করেছি। আমার সময়ে পটুয়াখালী পৌরসভা উন্নয়নের পথে হাত শুরু করেছে। ১৮৯২ সালে প্রতিষ্ঠিত এ পৌরসভাটি মূলত দীর্ঘ সময় পর্যন্ত পিছিয়ে ছিল উন্নয়নে। যে কারণে পরিপূর্ণ উন্নয়নে এ পৌরসভায় তিন থেকে চার হাজার কোটি টাকা দরকার।’

মহিউদ্দিন আহমেদ তাঁর সময়ে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের বর্ণনা দিয়ে আরও বলেন, ‘আগামী ১০ বছর পর কমপক্ষে ২৫ লাখ লোকের বসবাস হবে এ পৌরসভায়। সেটি মাথায় রেখেই উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন চলমান আছে। পৌরবাসী যদি আমাকে ভোট দিয়ে আবারও নির্বাচিত করে, আমি পটুয়াখালী শহরকে ঢেলে সাজাতে মাস্টারপ্ল্যান অনুযায়ী উন্নয়ন অর্জন লক্ষ্য বাস্তবায়ন করতে পারব।’

এদিকে সাবেক মেয়র মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘২০১১ সালে মেয়র নির্বাচিত হয়ে ৮ বছর মেয়রের দায়িত্ব পালন করেছি। আমার সময়ে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে এবং অনেক প্রকল্প চলমান ছিল। সে সব প্রকল্প বর্তমান মেয়রের সময়ে কাজ পূর্নতা পেয়েছে। আমার সময়ে পৌরবাসীর ওপর কোনো বাড়তি করারোপ করা হয়নি। যা এখন কয়েকগুণ বাড়ানো হয়েছে। জনগণ যদি আমাকে নির্বাচিত করে পৌরসভার যেসব প্রকল্পের কাজ চলমান আছে সেগুলোর কলেবর বাড়ানো হবে। নানাবিধ করের বোঝা কমিয়ে পৌরবাসীর নাগালে আনা হবে।’

শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘একদিন এই পৌরসভা সিটি করপোরেশনে পরিণত হবে। কাজেই পৌরসভায় উন্নয়নে মহাপরিকল্পনা নিয়ে কাজ করব। সকল নাগরিক সুবিধা ঘরে বসে পেতে পারে তার ব্যবস্থা করা হবে। পটুয়াখালী পৌরসভা হবে স্মার্ট পৌরসভা, মানবিক পৌরসভা, অসহায় মানুষের আশ্রয়স্থল। শাসক নয়, শোষক নয় সেবক হিসেবে আমি দায়িত্ব পালন করতে চাই।’

উল্লেখ্য, পটুয়াখালী পৌরসভা ১৮৯২ সালের ১ এপ্রিল প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৮৯ সালের ৫ আগস্ট পটুয়াখালী পৌরসভাটি প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত হয়। পৌরসভার আয়তন ২৬ বর্গকিলোমিটার । এ বারের পটুয়াখালী পৌরসভায় নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ৫০ হাজার ৬৯৯ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ২৬ হাজার ৭৫০ জন, পুরুষ ভোটার ২৩ হাজার ৯৪৭ জন এবং হিজড়া ভোটার ২ জন।

image_pdfimage_print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *