শিরোনাম

ক্যান্সার আক্রান্ত পটুয়াখালীর রশিদের জন্য সাহায্য চাই

Views: 42

 

মো:আল-আমিন, পটুয়াখালী : গলায় ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন ধরে যন্ত্রণা ভুগছেন পটুয়াখালী পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের হাওলাদার বাড়ির আব্দুর রশিদ হাওলাদার (৪৭)। জীবনের শেষ সম্বলটুকু নিজের চিকিৎসার পেছনে খরচ করে এখন টাকার অভাবে মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করছেন তিনি।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় যে, অসুস্থ রশিদ হাওলাদার টাকার অভাবে ওষুধ না কিনতে পেরে ব্যাথায় কাঁদছেন। যন্ত্রণায় কখনো কখনো বাড়ির পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়া পথচারীদের কাছে সাহায্যের জন্য অনুরোধ করছেন। তার গলার বাম পাশ থেকে টিউমার ফুলে ফেটে রক্ত পড়ছে। তিনি কথা পর্যন্ত বলতে পারছেন না।

রশিদ হাওলাদার এখন নড়বড়ে টিনের ঘরে একটি বিছানা ও কিছু হাঁড়ি পাতিল ছাড়া কিছুই নেই। প্রতিবেশীদের দেওয়া দুবেলা খাবার খেয়ে কোনোমতে বেঁচে আছে। গলার টিউমারে মশা, মাছি যেন বসতে না পারে এইজন্য গামছা দিয়ে বেঁধে রেখেছেন। ব্যাথার যন্ত্রনায় বালিশে শুয়েও থাকতে পারেন না তিনি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২ বছর আগেও ফেরি করে বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে মোড়ে পপকন বিক্রি করতেন তিনি। একটি ১২ বছরের ছেলে রাসেল ও ১০ বছরের লামিয়া নামে কন্যাসন্তান রয়েছে তার। রশিদ হাওলাদার অসুস্থ হওয়ার পর থেকে পড়াশুনা বাদ দিয়ে রাসেল কাজের খোঁজে ঢাকায় চলে যায়। আর তার স্ত্রী জেসমিন আক্তার দুই সন্তান ও অসুস্থ স্বামী রশিদ‌ হাওলাদারকে রেখে বাপের বাড়ি চলে যান। আর ফিরে আসেনি। এরপর থেকেই কষ্টের দিন শুরু হয় রশিদের। রাস্তার পাশে নিজের ছোট একটি টিনের ঘর আছে তার। শেষ সম্বল এই জায়গাটুকু ছাড়া আর কিছু নেই। উন্নত মানের ব্যয়বহুল চিকিৎসা করাতে পারলে রশিদ হাওলাদার পুরোপুরি সুস্থ হয়ে যাবে বলে জানান তার ছোট মেয়ে লামিয়া।

প্রতিবেশী সৈয়দ বেল্লাল হোসেন পাভেল বলেন, আমরা যখনি এই ঘরের কাছ থেকে চলাচল করি তখনি তার কান্নার আওয়াজ শুনতে পাই। আমাদের রশিদ ভাই অনেক কষ্টে আছেন। ওষুধ কিনতে পারছেন না। তাই যন্ত্রণায় কাঁদছেন। আমাদের এলাকার পক্ষ থেকে  যতটুকু পেরেছি সহযোগিতা করেছি।

রশিদ হাওলাদারের বোন সালেহা বেগম বলেন, আমার ভাইয়ের বউ তাকে ফেলে রেখে চলে গেছে। আমার তো আপন ভাই আমি তো‌ ফালাইয়া দিতে পারি না। আমার ভাইটা অনেক কষ্ট পাচ্ছে। তাকে আমরা ওষুধ কিনে খাওয়াতে পারি না‌ টাকার অভাবে। আপনারা আমার ভাইকে একটু ওষুধ খাওয়ার টাকা দিয়ে সহযোগিতা করুন। দিন দিন ফুলে যাচ্ছে তার গলার টিউমার, মানুষে তার টিউমার দেখলে ভয় পায়। আমার ভাইকে একটু সহযোগিতা করুন।

রশিদ হাওলাদারের ছোট মেয়ে লামিয়া বলেন, আমার বাবার কেউ নেই। আমার বাবাকে একটু সহযোগিতা করুন। তাকে ভালো অপারেশন করাতে পারলে সে সুস্থ হয়ে যাবে। আমার বাবা ছাড়া কেউ নেই।

অসুস্থ রশিদ হাওলাদার বলেন, আমি অনেক অসুস্থ, আমার আর কিছু নাই যা দিয়ে চিকিৎসা করাব। আমার আত্বীয় স্বজন কেউ নেই, জায়গা জমি কিছু নেই যে‌ বিক্রি করব। আপনারা যদি কেউ সাহায্য সহযোগিতা করেন তাহলে আমি ওষুধ কিনে খেতে পারি। আমার গলার এই টিউমার দেখলে মানুষ ভয় পায়।

পটুয়াখালী পৌরসভার মেয়র মহিউদ্দিন আহম্মেদ বলেন, আপনাদের মাধ্যমে বিষয়টি জানলাম। এই রশিদ ভাইয়ের বিষয়টি জানা ছিল না। আমি খুব তাড়াতাড়ি তাকে আর্থিক সহায়তা করতে তার বাড়িতে যাব। এছাড়া তার ছোট মেয়ের পড়াশুনার জন্য সহযোগিতা করব।

image_pdfimage_print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *