পটুয়াখালী জেলার বিভিন্ন এলাকায় ৪৭টি ইটভাটা রয়েছে, যার মধ্যে ১৬টি অবৈধভাবে পরিচালিত হচ্ছে। এসব ইটভাটায় আইন উপেক্ষা করে কয়লার পরিবর্তে কাঠ ব্যবহার এবং ফসলি জমির মাটি কেটে ইট তৈরি করা হচ্ছে। এতে পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি কৃষিজমি এবং জনস্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক প্রভাব পড়ছে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, জেলার ১০-১২টি ইটভাটায় নিয়ম মেনে কয়লা পোড়ানো হলেও বেশিরভাগ ভাটায় ব্যবহার করা হচ্ছে বনের কাঠ। কিছু ইটভাটায় ড্রাম চিমনি স্থাপন করা হলেও তা পরিবেশসম্মত নয়। স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন, হাট-বাজার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও জনবসতিপূর্ণ এলাকার কাছাকাছি এসব ইটভাটা স্থাপন করা হয়েছে, যা পরিবেশের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।
কৃষিজমির সংকট
জেলার আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ ক্রমশ কমে আসছে। কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, গত দুই-তিন বছরে কৃষিজমির পরিমাণ ২০ লাখ ৩ হাজার ৮১১ হেক্টর থেকে কমে ১৯ লাখ ৫ হাজার ২৫০ হেক্টরে নেমে এসেছে। ইটভাটার জন্য মাটি কাটার পাশাপাশি লবণাক্ততা বৃদ্ধি, বসতবাড়ি নির্মাণ এবং মাছ চাষের পুকুর খনন এ সংকটের পেছনে বড় ভূমিকা রাখছে।
আইনি ব্যবস্থা ও কর্তৃপক্ষের বক্তব্য
পটুয়াখালী পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. আসাদুজ্জামান জানান, অবৈধ ইটভাটাগুলোর বিষয়ে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে এবং ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।
জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীন বলেন, “নিয়মবহির্ভূতভাবে চরের মাটি কাটলে কিংবা কাঠ পোড়ালে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
পটুয়াখালী সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) চন্দন কর বলেন, “চর বা ফসলি জমির মাটি কাটার কোনো অনুমতি নেই। এ কাজে জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
পরিবেশবাদীদের মতামত
পরিবেশবাদীরা বলছেন, ইট তৈরি একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলেও এর মাধ্যমে পরিবেশের ওপর যে প্রভাব পড়ছে, তা গভীর উদ্বেগের বিষয়। ইটভাটা স্থাপন ও পরিচালনায় কঠোর নিয়ম মানা জরুরি।