পটুয়াখালী প্রতিনিধি :: পটুয়াখালী জেলার আইন-শৃঙ্খলা এবং নিরাপত্তা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। যার ফলশ্রতিতে এখন অবদি জেলার কোথাও কোন ধরনের বিশৃংখলার খবর পাওয়া যায়নি। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জনগনের বন্ধু সেই বিষয়টি মাথায় রেখে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। দিনরাত চব্বিশ ঘন্টা জনগনের সেবায় সেনাবাহিনী মাঠে আছে।
পটুয়াখালীতে আইন-শৃংখলা ও নিরাপত্তা বিষয়ক এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে লেবুখালী সেনানিবাসের কমান্ডিং অফিসার কর্নেল মোহসীন এসব কথা বলেন।
আজ পটুয়াখালী জেলা প্রশাসকের সম্মেলণ কক্ষে সদর উপজেলার আইন শৃংখলা এবং নিরাপত্তা পরিস্থিতি সম্পর্কে মতবিনিময় সভায় জেলা প্রশাসক মোঃ নূর কুতুবুল আলম এর সভাপতিত্বে সভায় অন্যান্যর মধ্যে বক্তব্য রাখেন মেজর সাব্বির, পুলিশ সুপার আবদুস সালাম, জেলা জামাতের নায়েবে আমির এডভোকেট নাজমুল আহসান, পৌর বিএনপির সভাপতি কামাল হোসেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র অন্দোলনের তোফাজ্জেল হোসেন, জেলা যুবদলের সভাপতি মনিরুল ইসলাম লিটন, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মোঃ শামিম চৌধুরী, সাধারন সম্পাদক জাকারিয়া আহম্মেদ প্রমুখ ।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির আহবায়ক আবদুল রশিদ চুন্নু মিয়া, সদস্য সচিব স্নেহাংশু সরকার কুট্টি, জেলা জামাতের আমির অধ্যক্ষ মোঃ শাহআলম, জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি জাফর উল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক আঃ রাজ্জাক, জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্ট্রান ঐক্যপরিষদের সভাপতি অতুল চন্দ্র দাস, জেলা মহিলা দলের সাধারন সম্পাদক ফারজানা রুমা, জেলা সেচ্ছাসেবকদলের সভাপতি মশিউর রহমান মিলন ,জেলা ইমাম পরিষদের সভাপতি মাওলানা আবু সাইদ, পটুয়াখালী প্রেস ক্লাবের সাধারন সম্পাদক জাকারিয়া হ্রদয় , সাবেক সভাপতি গোলাম কিবরিয়া, মো: জাকির হোসেন সহ ১৪টি ইউনিয়নের ইউপি সদস্য সহ সুশীল সমাজের নেতৃবুন্দ।
তিনি বলেন, আমরা সকলে মিলে ভাল থাকতে চাই, এ দেশে জনসাধারন যখন যেভাবে চেয়েছে সেভাবে দেশ পরিচালিত হয়েছে। যদি কখনো সেভাবে দেশ পারিচালিত না হয়, সেক্ষেত্রে জনসাধারন তাদের ভবিষৎ এর গতি প্রকৃতি নির্ধারন করে নিয়েছে। ইতিহাস বলে শাসকগোষ্টি যখন গনমানুষের কথা বুঝতে পারে নাই, তখন গনমানুষ নতুন করে নতুন দিক নিয়ে এসেছে। দেশের ৯০ ভাগ মানুষ একরকম চাচ্ছে, ১০ভাগ অন্য ভাবে চাচ্ছে-এ ক্ষেত্রে ৯০ ভাগ মানুষের কথাই শুনতে হবে। আমরা সকলে ভাল থাকতে চাই, শান্তিতে থাকতে চাই-এটাই আমাদের উদ্দেশ্য।
ছাত্র সমাজের উদ্দেশ্যে কর্নেল মোহসীন হোসেন বলেন, এদেশের ছাত্র ও যুব সমাজ একটি ভালো ভূমিকা রেখেছে-তারাই নেতৃত্বে ছিল শুরুতে, তাদের সাথে দেশের জনসাধারন মিশে গেছে যখন দেখেছে তাদের দাবী গুলি যৌক্তিক।
সনাতন ধর্মালম্বীদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, এ দেশ সবার, এখানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় বলে আলাদা করা ঠিক না, তারা আমাদের ভাই সবার অধিকার সমান। পটুয়াখালীতে সংখ্যালঘু হিসেবে কারও উপর কোন হামলা হয়েছে-এ ধরনের কোন অভিযোগ সেনা ক্যাম্পে আসে নাই। কিন্তু কোন কারন ছাড়াই আপনারা কেন বিক্ষোভ মিছিল করছেন, মানববন্ধন করছেন, কেন করছেন? আক্রমন না হয়ে থাকলেও প্রতিদিন মিছিল করার পরিকল্পনা, একত্রিত হওয়ার পরিকল্পনা করছেন কারনটা কি? আপনাদের কোন ধরনের নিরাপত্তার হুমকী থেকে থাকলে আমাদের সেনাবাহিনীকে
জানান, আপনাদের নিরাপত্তার পুরোদায়িত্ব আমরা নেব। কিন্তু কোন কারন ছাড়াই কিসের উস্কানীতে এগুলি আপনারা করছেন? কারা আপনাদের এগুলি করাচ্ছেন? আপনারা কোন খেলার গুটি হবেন না। এ এলাকার মানুষ অসম্প্রদায়িক, এখানে একজন আরেক জনকে দেখে রাখেন। এখানে সাধারন ছাত্রদের সাথে মাদরাসার ছাত্ররাও রয়েছে। আমি ছবি দেখেছি বেড়া দিয়ে রেখে নামাজের সময় হয়ে গিয়েছে-
মন্দিরের পাশে জায়নামাজ বিছিয়ে নামাজ পড়ছেন। আমরা যে অসম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বলি, এর চেয়ে ভালো দৃশ্য আর কি হতে পারে।
তিনি আরো বলেন, একটি অশুভ গোষ্টি ১৪ ও ১৫ তারিখকে সামনে রেখে যদি কোন নিরাপত্তা বিঘিœত করতে চেষ্টা করে তাদেরকে কঠোর হস্তে দমন করা হবে। আমরা সকলে মিলে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্ঠান সম্প্রদায়সহ সকল উপসানালয় নিরাপত্তার চাদরে রাখবো। আমরা সকলে মিলে সব সময় নজরে রাখবো, যাতে এগুলি ভাংচুর করে বা নিরাপত্তা বিঘিœত করে কোন ই্যসু তৈরী করতে না পারে, সেদিকে আমরা খেয়ালরাখবো।
তিনি পুলিশ বাহিনীর সংস্কারের বিষয়ে উল্লেখ করে বলেন, পুলিশ বাহিনী একটি সংস্কারের সংস্কারের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, সংস্কারে পরে যে পুলিশ বাহিনী আসবে তা জনগনের বন্ধু হিসেবে কাজ করবে। কোন সংস্থাকে ঘৃনা করবেন না, পাপকে ঘৃনা করি পাপিকে নয়। পুলিশের নেতৃত্বে সমস্যা ছিল, তারা এখন কেউ নেই কিন্তু এলাকায় যারা অফিসার বা কনষ্টেবল হিসেবে আছেন তাদের সহযোগীতা করেন।আমি সব কয়টি থানায় গিয়েছি তাদের মধ্যে অনুশোচনা হয়েছ, তারা আমাকে বলেছেন তারা বাধ্য হয়েছেন ঐ কাজ গুলি করতে। তাদেরকে সুযোগ দিতে হবে, তারা নিশ্চয়ই আপনাদের আস্থার জায়গায় ফিরে আসতে পারবেন, জনগনের বন্ধু হিসেবে কাজ করবেন। প্রতিটি ওয়ার্ডের চালুকৃত কমিউনিটি পুলিশের সাথে ছাত্র সমন্বয়ক ও ভলান্টিায়রদের নিয়ে টিম গঠন করে কাজ শুরু করতে হবে।